শুক্রবার ● ২৭ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » ভারতের ৩১টি রাজনৈতিক দলকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি অবহিত করলেন বিদেশমন্ত্রী
ভারতের ৩১টি রাজনৈতিক দলকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি অবহিত করলেন বিদেশমন্ত্রী
ভারত সরকার আজ আবারও জানিয়েছে, আফগানিস্তান থেকে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিককে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনাই তাদের অগ্রাধিকার। গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন দিল্লিতে সারাদেশের একত্রিশটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের কার্যক্রম ও নীতি সম্পর্কে অবহিত করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, বহু ভারতীয় নাগরিককে আমরা আফগানিস্তান থেকে নিয়ে আসতে পেরেছি। কিন্তু এখনও অনেকেই বাকি রয়ে গেছেন। তাঁদের সবাইকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। তবে মুশকিল হলো, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা আর বেশ কিছু ভারতীয় নানান জায়গা থেকে কাবুলে এসে পৌঁছনোর পরেও ভারতীয় দূতাবাসে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করাননি। তাই তাঁরা কোথায় আছেন খোঁজ করতে পারা যাচ্ছে না।
বিদেশমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং অন্যান্য বিশ্বনেতার সঙ্গে কথা বলেছেন, সকলেই আফগানিস্তানের ব্যাপারে চিন্তিত।
জয়শঙ্কর বলেছেন, দোহা চুক্তিতে তালিবান যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা রক্ষা করছে না। ওই দেশে পরিস্থিতি এখন সঙ্কটজনক, আরও অবনতি হতে পারে। সবদিক ভেবে চিন্তে আমরা এগোচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে সরকার সব বিরোধী দলগুলোকে পাশে চাইছে, যাতে সবাই মিলে একসঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।
বৈঠক শেষে রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের সাংসদ মল্লিকার্জুন খড়গে সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা সরকারকে কথা দিয়েছেন পাশে থাকবেন। কারণ, আফগানিস্তানের বিপদ শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের নয়, সারাদেশের। সকলে একসঙ্গে এই সঙ্কট পার হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, সংবাদ সংস্থা এএনআইকে খড়গে বলেন, আমরা খবর পেয়েছি সম্প্রতি একজন আফগান কূটনীতিককে দিল্লির বিমানবন্দর থেকে ভারত ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। এটা আমাদের মতে অনুচিত হয়েছে। এ ব্যাপারে বিদেশমন্ত্রক আমাকে বলেছে, এটা একটা ভুলবশত হয়েছে। আর কখনও এমন হবে না। কেন এটা হল, তার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য,আফগানিস্তানের সংসদ উওলেসি জিরগার মহিলা সদস্য রঙ্গিনা কারগার অভিযোগ করেছেন, তাঁকে গত সপ্তাহে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ভারতে ঢুকতে না দিয়ে ফিরতি বিমানে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারগার বলেন, ২০১০ সাল থেকে তিনি জিরগার সদস্য। ফারইয়াব প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন, তিনি একজন মহিলা মানবাধিকারকর্মী। তাঁর আফগান কূটনৈতিক ও সরকারি বিশেষ পাসপোর্টের জন্য ভারতে ঢুকতে কোনও ভিসার দরকার হয় না। এ বিষয়ে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে বিশেষ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে এবং এই পাসপোর্টে তিনি আগে বহুবার ভারতে এসেছেন। আফগানিস্তানের অবস্থা খারাপ হচ্ছে টের পেয়ে গত জুলাই মাসে স্বামী ও চার সন্তানসহ তিনি ইস্তানবুলে চলে গিয়েছিলেন।
কিন্তু এবার তালিবানের হাতে কাবুল পতনের পাঁচ দিন পর ২০শে আগস্ট ইস্তানবুল থেকে দুবাইয়ের একটি উড়ানে তিনি নতুন দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। সেই দিন বেলা ১১টার সময় দিল্লিতে তাঁর ডাক্তার দেখানোর কথা। দু’দিন পর ২২ তারিখ আবার ইস্তানবুল ফিরে যাওয়ার টিকিট কাটা ছিল। কিন্তু ওই দিন বিমানবন্দরে অভিবাসন কর্মীরা তাঁর পাসপোর্ট হাতে নিয়ে একটু অপেক্ষা করতে বলে তাঁদের ওপরওয়ালার সঙ্গে কথা বলতে যান। এর দু’ঘণ্টা পরে যে বিমানে করে তিনি দিল্লিতে নেমেছিলেন, সেই বিমানে করেই তাঁকে ইস্তানবুল ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা।