শুক্রবার ● ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » চিনিকলে এক কেজি চিনির উৎপাদন খরচ ১২৩ মিলিগেটে বিক্রি ৬৩
চিনিকলে এক কেজি চিনির উৎপাদন খরচ ১২৩ মিলিগেটে বিক্রি ৬৩
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ চিনিকলে (মোচিক) প্রতি কেজি চিনিতে এখন লোকসান ৬০ টাকা। আর এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে ব্যায় হচ্ছে ১২৩ টাকা। ১২৩ টাকার উৎপাদিত চিনি মিলগেটে বিক্রি করা হচ্ছে ৬৩ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে মিলটির লোকসান গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা। অন্যদিকে মিল গেট থেকে ২০ গজ দুরে গেলে সেই একই চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। মোবারকগঞ্জ চিনি কলের চিনি উৎপাদন ও বিপনন বিভাগ সুত্রে এ সব তথ্য জানানো হয়। মোচিক সুত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ আখ মাড়াই মৌসুমে ৬৩ টাকায় বিক্রিত এই এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে ১৮২ টাকা। ১৮২ টাকার খরচায় উৎপাদিত এক কেজি চিনিতে ব্যাংক সুদ রয়েছে ৫৯ টাকা। আর সুদ বাদ দিয়ে এক কেজি চিনি উৎপাদন খরচ হয়েছে ১২৩ টাকা। এ মাড়াই মৌসুমে মিলটি চিনি উৎপাদন করে ৭ হাজার ৮৬২ মেট্রিক টন। এর মধ্যে মিল গোডাউনে এখনো অবিক্রিত রয়েছে ২ হাজার ৪৯৪ মেট্রিক টন চিনি। এই পরিমাণ চিনি উৎপাদন করতে মিলের লোকসান দিতে হয়েছে প্রায় ৭৬ কোটি টাকা। ্আর মোট এই লোকসানের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ব্যাংক সুদ রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। এর আগের বছর ২০১৯-২০২০ মাড়াই মৌসুমে এ লোকসানের পরিমাণ ছিল ৮৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ফলে ২০২০-২০২১ মৌসুমে লোকসানের পরিমাণ কমেছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। ওই বছর এক কেজি চিনিতে উৎপাদন খরচা পড়েছিল ১৯৩.৫৮ টাকা। এবং মিলগেটে চিনির বিক্রিত মূল্য ছিল ৬০ টাকা। এই ৬০ টাকায় বিক্রিত এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে মিলটির সুদ গুনতে হয়েছিল ৬৯.৫৮ টাকা। মিলের শেষ দুই মাড়াই মৌসুমের উৎপাদন খরচের চিত্রে দেখা গেছে, ২০১৯-২০২০ মাড়াই মৌসুম থেকে ২০২০-২০২১ মাড়াই মৌসুমে উৎপাদন খরচ কমেছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ মাড়াই মৌসুমে মিলটিকে এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে ব্যাংক সূদ দিতে হয়েছিল ৭৮.১১ টাকা। ওই বছর মিলটি এক কেজি চিনি উৎপাদন করতে সূদ বাদে খরচ হয় ১৩৩.০৩ টাকা আর সূদসহ উৎপাদন ব্যয় হয় ২১১.১৪ টাকা। ২১১ টাকায় উৎপাদিত চিনি বাজারে বিক্রি হয়েছিল ৫৫ টাকায়। মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মোশারফ হোসেন বলছেন, পুরাতন যন্ত্রপাতি, কৃষক পর্যায়ে আখের মূল্য বৃদ্ধি, জনবল সংকট, শ্রমিক মজুরী বৃদ্ধি, দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি ও উৎপাদন ব্যয়ের সাথে সঙ্গতিহীন চিনির মূল্য নির্ধারনের ফলে লোকসান বাড়ছে। সাথে মোটা অংকের ব্যাংক ঋণের সুদ উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণ। অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময় মিলটিতে অনিয়ম দুর্নীতি করা হয়। আখ কেনা থেকে চিনি উৎপাদন পর্যন্ত চুরি হয়। শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নামে নানা খাতে চলে লুটপাট। কিন্তু প্রশাসনিক ভাবে শোকজ ও সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও কোন স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় না। উল্লেখ্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৯৬৫ সালে ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নেদারল্যান্ড সরকার মোবারকগঞ্জ চিনিকলটি স্থাপন করে। এ শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১১৮৪ পদের বিপরীতে কর্মকার্তা ও শ্রমিক কর্মচারী রয়েছে ৬৭৯ জন।
ঝিনাইদহে মোবাইল ছিনতাইকারী আটক
ঝিনাইদহ :: গত ১৫ই জুলায় হুসাইন প্রতিদিনের ন্যায় শহরের লেদের দোকানের কাজ করে দুপুরের খাবারের উদ্দেশ্যে বাসার পথে রওনা হয়ে মোবাইলে কথা বলতে বলতে আল্ ফালাহ ক্লিনিকের সামনে পৌছায়। তার পিছন থেকে মোটর সাইকেল যোগে ছিনতাইকারী নাহিদ হাসান সোহান ফোনে কথা বলতে বলতে পথে চলাবস্থায় হুসাইনকে থাবা মেরে তার ব্যবহৃত ফোনটি ছিনিয়ে নিয়। সেসময় ছিনতাইকারী নাহিদ হাসান সোহান ভুক্তভোগী হুসাইনকে লাথি মেরে রাস্তার উপরে ফেলে দিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়। পরে হুসাইন থানা পুলিশকে অবহিত করলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব আবুল বাশারের সার্বিক দিক নিদের্শনায় ঝিনাইদহ থানা পুলিশ এবং ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে বৃহস্পতিবার দুপুরে মোবাইল ছিনতাইকারী নাহিদ হাসান সোহানকে চোরাইকৃত ফোনসহ আটক করে। ছিনতাইকারী নাহিদ হাসান সোহান সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের আশানুর রহমান ফুলজারের ছেলে। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব আবুল বাশার বলেন উক্ত আসামী যদি আর কারো মোবাইল ছিনতাই করে থাকে, তাহলে অফিসার ইনচার্জ, ঝিনাইদহ থানা, ঝিনাইদহ সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বারোবাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। বারোবাজার ইউনিয়নের ১৯ গ্রামসহ প্রায় আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা নিন্ম আয়ের মানুষ গুলো স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসেন এখানে। কিন্ত কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ। ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগদান করেন আহসান হাবীব জিকো নামের এক জন মেডিকেল অফিসার। যোগদানের কিছু দিন পর আবার চলে আসেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এর পর থেকে ওই এলাকার সাধারন মানুষ গুলো -স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এক জন মাত্র উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার তার সাধ্যমত সেবা দিচ্ছেন। কিন্তু এই উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়োগ রয়েছেন আহসান হাবীব জিকো নামের একজন মেডিকেল অফিসার। তিনি আসেন না কোনদিন। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পদায়ন হলেও তিনি থাকেন উপজেলা হাসপাতালে। শুধু তাই নয়। আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদ বাগিয়ে বসে আছেন আহসান হাবীব জিকো। সরকারি সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করলেও গ্রামের মানুষদের সেবা দিচ্ছেন না তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেন, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন সিনিয়র মেডিকেল অফিসার থাকলেও অদূশ্য কারনে জুনিয়র মেডিকেল অফিসার আহসান হাবিব জিকোকে আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদে বসিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শামীমা শিরিন। নিজের সুবিধা বাগিয়ে নিতে তার পছন্দের লোককে এ পদে আশীন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা রাজিয়া আক্তার নামের এক রোগির স্বজন বলেন, শুনেছি এই হাসপাতালে বড় ডাক্তার আছে। কই কোন দিন তো দেখলাম না। কোনদিন তো আসে না। বড় ডাক্তার যদি আসত তাহলে আমরা ভালো মত চিকিৎসা নিতে পারতাম। বারোবাজার এলাকার হাসেম আলী বলেন, সরকার চিকিৎসা সেবা গ্রামের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসকরা সেখানে আসছেন না। এতে আমরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি সেই সাথে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্যেটি ভেস্তে যাচ্ছে। ওই এলাকার ইউছুপ আলী বলেন, হাসপাতালে বড় ডাক্তার নাকি কালীগঞ্জ থাকে। এখানেই যদি তার কর্মস্থল হয় তবে তিনি কালীগঞ্জ উপজেলায় কি করেন? আমাদের সেবা না দিয়ে তিনি কালীগঞ্জ হাসপাতালে থাকেন। তাহলে আমাদের সেবা কে দিবেন? এব্যাপরে আহসান হাবীব জিকোর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র যোগদান করি। করোনা কালীন ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আরএমও হিসাবে কর্মরত আছি। সেটা এখনও বহাল রয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শামীমা শিরিন উপর মহল থেকে কথা বলা নিষেধ আছে। যে কারনে আমি এ বিষয়ে আপনাদের কিছুই বলতে পারবো না। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম বলেন, মহামারী করোনা কালীন সময় ডাঃ আহসান হাবীব জিকোকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছে। পরবর্তীতে তাকে বারোবাজার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র পূর্ণবহাল করা হবে।
কালীগঞ্জে পাট পঁচাতে চলছে জলাশয় ভাড়া
ঝিনাইদহ :: ফলন হয়েছে বেশ। দামও ভালো। তাই হাসিখুশিতে আছেন কৃষকেরা। বলছেন সোনালী আঁশের সেই সোনালী দিন ফিরে এসেছে। কিন্তু পরে রোপন করা পাটের সুখবর নেই। পঁচানোর জন্য যথেষ্ট জলাশয় না থাকায় নাবি পাটচাষীদের জন্য পাট এখন গলার কাটা। কারও পাট এখনও ক্ষেতে আবার কারও পাট কেটে ফেলে রেখে শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে। কৃষকদের ভাষ্য,আগের দিনের মত গ্রামের পতিত জলাশয় নেই বললেই চলে। এগুলো সব ভরাট করে চাষাবাদের উপযোগী হয়ে গেছে। আবার কেউ কেউ বাধ্য হয়ে হাঁটু পানিতে কাঁদার মধ্যে ডুবিয়ে রাখছেন পাট। তাছাড়াও আগের দিনের মত বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টি ও হয়না। সর্বোপরি গ্রাম এলাকায় খালগুলো সব ভরাট হয়ে পানি নেই। এমন অবস্থা কালীগঞ্জ উপজেলার প্রায় ১১ টি ইউনিয়নের সকল মাঠের। কৃষকেরা বলছেন, নদী ও খালগুলো খনন করতে পারলে সত্যি সত্যিই ফিরে আসবে সোনালী আঁশের সোনালী দিন। কালীগঞ্জ উপজেলা চলতি বছরে এ উপজেলার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলে ১ হাজার ৭’শ ৫০ হেক্টোর। কিন্তু চাষ হয়েছে ১ হাজার ৮’শ ১৯ হেক্টোর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশ বেশি চাষ হয়েছে। এগুলোর মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগই জে আরও ৫২৪ জাতের। যা ফলনও হয়েছে দেখার মত। এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ ভাগেরও বেশি কৃষকেরা কেটে ফেলেছেন। নাবী জাতের পাট অর্থাৎ বাকিগুলো পানির অভাবে কৃষকেরা পঁচাতে পারছেন না। কিন্তু বাজারে পাটের দাম ভালো তারপরও পাটকাঠি বিক্রি করে আসবে আরও বেশ টাকা। চলতি বছরের নাবি পাট নিয়ে কৃষকেরা খানিকটা বেকায়দায় আছেন। কেউ কেউ হাঁটু পানিতে কোন রকমে চাপা দিয়ে রাখছেন পাট। আবার কেউ কেউ জলাশয় ভাড়া নিয়ে পাট পঁচাতে বাধ্য হচ্ছেন। কেননা আগের দিনের মত জলাশয় নেই। তাদের গ্রামের পাশে কোন নদী উন্মুক্ত জলাশয় নেই। গ্রামের পাশ দিয়ে আশপাশের কয়েক গ্রাম ঘেষে একটি খাল বয়ে গেলেও সেখানে মাটি ভরাট হয়ে পানি একেবারে নেই বললেই চলে। অথচ আগের দিনে আমাদের পূর্ব পূরুষেরা অসংখ্য উন্মুক্ত জলাশয় পেতেন। এতে সারাবছর মাছ পেতেনও আবার বর্ষার মৌসুমে সেখানে পাট পঁচাতেন। সে সময়ে বেশি পানিতে পাট পঁচানোর কারণে পাটের রঙ সোনালী আাঁশের মতই হতো। কিন্তু এখন কম ও ময়লা পানিতে পাট পঁচানোর কারণে রঙ কালো হয়ে যায়। বাজারে এগুলোর দাম কম পাওয়া যায়। এদিকে জলাশয়ের অভাবে কেউ কেউ এখনও পাট কাটেননি। ক্ষেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে পাট। পাটচাষী আবদুর রশিদ জানান, জলাশয় না থাকায় তাদের গ্রামের কৃঞ্চ কুমার বিশ্বাসের মাত্র ১ দেড় ফুটের মত জলাশয়ের নিচু ধান চাষের জমিতে বেশ কিছু পাটচাষী পাট পঁচাতে দিয়েছেন। বিনিময়ে জমির মালিককে মূল্যবান পাটকাঠি অর্ধেকটা দিতে হবে। এটা দেয়ার কারণ জমির মালিক ধানচাষ করলেও বেশ টাকার ধান পেতেন। আমাদের কারণে তাকে তো লোকসান করানো যায় না। পাটচাষী আশিয়ার রহমান জানান, তিনি বলেন ভালো পাট হলে এক বিঘা জমিতে ২০ মন পাট উৎপাদন সম্ভব। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা শিকদার মোহাম্মদ মোহাইমেন আক্তার জানান, এ উপজেলাতে পাট উৎপাদন হয়েছে আগের দিনের মত। ফলন ও দাম সব কিছুতে কৃষক মহা খুশি। এ পর্যন্ত এখানকার প্রায় ৭০ ভাগের বেশি পাট কৃষকের ঘরে উঠে গেছে। কিন্তু উন্মুক্ত জলাশয় না থাকায় নাবি পাট পঁচানো নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন কৃষক। পাট উৎপাদনে বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের অংশ কালীগঞ্জেও এখন পাট চাষে ঝুঁকেছেন। কিন্তু প্রয়োজন পাট পঁচানোর জন্য ভরাট হয়ে যাওয়া খাল ও নদী খননের ব্যবস্থা করা।
কালীগঞ্জে ১২ কাঠা জমির ধরন্ত মরিচ গাছ নষ্ট
ঝিনাইদহ :: ভিটামিনের পরিবর্তে দূর্বৃত্তদের গুলিয়ে রাখা ঘাস মারা কীটনাশক নিজ হাতে স্প্রে করে ১২ কাঠা জমির ধরন্ত মরিচ ক্ষেত পুড়িয়ে ফেলেছেন। নিজের অসাবধানতায় এমন ক্ষতি হওয়ায় ওই কৃষক চরম অনুসচনায় ভুগছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের বেথুলী গ্রামের কৃষক মশিয়ার তরফদারের ধরন্ত ঝাল ক্ষেতে। তিনি ওই গ্রামের মৃত খেলাফত তরফদারের ছেলে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মশিয়ার রহমান জানান, গত বছর মাত্র ৫ কাঠা জমিতে মরিচের চাষ করে যাবতীয় খরচ বাদে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। তাই এ বছর বেশি করে ১২ কাঠা জমিতে মরিচের চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত বেশ কিছু টাকা ব্যয় করে এখন মরিচ ধরা ও বিক্রি শুরু করেছেন। বাজারে প্রতিকেজি ৫৫ টাকা পাইকারী দরে মোট ৬৬ কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছেন। তার আশা ছিল এ বছর ১২ কাঠা জমির মরিচ বিক্রি করে যাবতীয় খরচ বাদে ৩ লক্ষাধিক টাকা আসবে। কিন্তু অভিনব শত্রুতার জেরে নিজ হাতে নষ্ট করে ফেললাম সব। বার বার বলছেন আর চোখের পানি ফেলছেন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মশিয়ার তরফদার সোমবার সন্ধ্যার আগে ভিটামিন ওষুধ প্রয়োগ করবেন বলে স্প্রে মেশিনের ঢমে ভরে মাঠে নিয়ে যান। কিন্তু মাঠে পৌছানোর পরে লাগাতর বৃষ্টি শুরু হয়। বাধ্য হয়ে স্প্রে মেশিনের ঢমে গুলানো ভিটামিন ওষুধ ক্ষেতে রেখে চলে আসেন। পরের দিন মাঠে গিয়ে সেই ভিটামিন মেশানোর পানি ভেবে জমিতে স্প্রে করেন। বুধবার সকালে ক্ষেতে গিয়ে দেখেন সব ধরন্ত মরিচ গাছ মরে শুকিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, এমনটি হয়েছে আগের দিন যে ভিটামিন ওষুধ গুলিয়ে ক্ষেতে রেখে এসেছিলেন ঢমের সেই ওষুধ ফেলে দিয়ে কেউ ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে ঘাস মারা ওষুধ রেখে এসেছে। যা নিজ হাতে ক্ষেতে প্রয়োগ করে মস্ত বড় ক্ষতি করেছি। দূর্বৃত্তরা অভিনব কৌশলে আমার এমন ক্ষতিটি করে দিলো। এ ক্ষতি কোনভাবে পোষানোর নয়। এ ব্যাপারে ওই কৃষক বাদি হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগের প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন।