রবিবার ● ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » আশ্রয়ের খোঁজে কচুরিপানার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে শতশত পরিবার
আশ্রয়ের খোঁজে কচুরিপানার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে শতশত পরিবার
সাইফুল মিলন, স্টাফ রিপোর্টার :: ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন। আশ্রয়ের খোজে কচুরিপানার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে গাইবান্ধার চার উপজেলার শতাধিক চর-দ্বীপ চরের শতশত পরিবার। ভাঙন আতঙ্কে মানুষের ঘুম নেই। খুঁজছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই। সবকিছু হারিয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন এদিক ওদিক অসহায় মানুষগুলো।
গাইবান্ধায় বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট। এছাড়া তিস্তা, করতোয়াসহ জেলার দু’একটি ছাড়া সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে এসব নদ-নদীবেষ্টিত চর-দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতশত পরিবার। তলিয়ে গেছে জমির ফসল। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট।
পানিতে ভাসছে মানুষ। কষ্টে কাটছে প্রতিটি মুহূর্ত। গত চারদিন ধরে বাড়ছে বানভাসীদের দুর্ভোগ। চারদিকে থৈ থৈ পানি, কিন্তু হাহাকার বিশুদ্ধ পানির। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শনিবার (৪ সেপ্টম্বর) ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট ২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে বন্যার্ত মানুষের।
গত দু’দিনে ব্রহ্মপুত্রে পানি কমতে থাকলেও গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার ফজলুপুর ইউনিয়নের পূর্ব খাটিয়ামারি, মধ্য খাটিয়ামারি, দক্ষিণ খাটিয়ামারি, পশ্চিম খাটিয়ামারি, চন্দনস্বর, উজালডাঙ্গা, কাওয়াবাধা ও মানিকচর গ্রামে গত এক সপ্তাহের ভাঙনে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকার মানুষ খাদ্য সমস্যার কারণে চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
অন্যদিকে তিস্তার পানি গত বুধবার থেকে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সরকারিভাবে সুন্দরগঞ্জে উপজেলায় পানি পরিমাপের কোনও পয়েন্ট না থাকায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পানি পরিমাপ পিলারে দেখা গেছে, পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার বিভিন্ন শাখানদী পানিতে থৈ থৈ করছে। চরাঞ্চলে বসবাসরত পরিবারগুলো ইতিমধ্যে নৌকা দিয়ে যাতায়াত শুরু করেছে।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের দেয়া তথ্য মোতাবেক ৮৫০ পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে কিছু কিছু এলাকায় ত্রান বিতরণ করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সদরসহ চার উপজেলার ১ হাজার ৫১৫ হেক্টর রোপা আমন ১৪৯৫ হেক্টর ও শাকসবজির ক্ষেত ২০ হেক্টর পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গতদের জন্য ইতোমধ্যে ৮০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এসব এলাকাগুলোতে শুরু করা হয়েছে ত্রান বিতরন।
ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আনন্দ মিছিল
গাইবান্ধা :: ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে উপজেলা সহ জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিপ্লবীয় কার্যক্রমের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বর্ণাঢ্য আনন্দ মিছিল ও রোড শো অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌর শহরে এই আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা বাসী ও সাংবাদিক বৃন্দের আয়োজনে আনন্দ মিছিল উদ্বোধন করেন গোবিন্দগঞ্জ পৌর মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি।
র্যালি শেষে সুসজ্জিত ট্রাকে শিল্পীদের গান পরিবেশনা নিয়ে উপজেলা ব্যাপী রোড শো অনুষ্ঠিত হয়। আনন্দ মিছিলে উপজেলার হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মুক্তিযোদ্ধা শ্যামলেন্দু মোহন রায় জীবু বাবুর সভাপতিত্বে আনন্দ মিছিলের পর সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে মোবাইল ফোনে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান।
দেশের ১০তম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ বাণিজ্যিক খামারের জমিতে স্থাপিত হবে রংপুর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (আরইপিজেড)।
গত ২৪ আগস্ট বেজপার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল নজরুল ইসলাম আরইপিজেডের জন্য নির্ধারিত জায়গা পরিদর্শন করেন। গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আরইপিজেড স্থাপনের সিন্ধান্ত জানিয়ে জেলা প্রশাসক সহ জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।