বুধবার ● ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » তালেবান মন্ত্রিসভা গঠনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লিতে রাশিয়া এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার দুই প্রধান
তালেবান মন্ত্রিসভা গঠনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লিতে রাশিয়া এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার দুই প্রধান
আফগানিস্তান নিয়ে দিল্লিতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। ভারতীয় এনএসএ-এর সঙ্গে বৈঠকে রাশিয়ার এনএসএ। এসেছেন সিআইএ প্রধান।
আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে সরগরম দিল্লি। তালেবান মন্ত্রিসভা গঠনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লিতে এসে পৌঁছেছেন রাশিয়ার এনএসএ এবং মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান। দুইজনেই আলাদা আলাদা করে ভারতীয় এনএসএ-এর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।
আজ বুধবার দুপুরে দিল্লিতে বৈঠক করেন রাশিয়ার জাতীয় উপদেষ্টা নিকোলাই পাত্রশেভ ও ভারতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, নিকোলাই দেখা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গেও। দিনকয়েক আগেই আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন। তারপরেই এনএসএ পর্যায়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।
বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে এখনো পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। তবে আফগানিস্তান পরিস্থিতি সন্ত্রাস নিয়ে মূলত কথা হয়েছে বলে সূত্র জানাচ্ছে। বস্তুত, রাশিয়া আগেই তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল। আফগানিস্তানে রাশিয়ার দূতাবাসও বন্ধ করা হয়নি। কিন্তু রাশিয়া আশা করেছিল, তালেবান সমস্ত গোষ্ঠীকে নিয়ে একটি ‘ইনক্লিউসিভ’ সরকার তৈরি করবে। কিন্তু মঙ্গলবার তালেবান যে মন্ত্রিসভা সামনে এনেছে, রাশিয়া তা নিয়ে খুশি নয় বলেই জানা যাচ্ছে। ভারতের সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টি সামনে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতও আফগানিস্তান পরিস্থিতি, পাকিস্তানের ভূমিকা, চীনের অবস্থান নিয়ে বৈঠকে সংশয় প্রকাশ করেছে। দুই দেশ এই বিষয়ে যৌথ পদক্ষেপ নিতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তান পরিস্থিতি ভারতীয় উপমহাদেশের শান্িতেত ব্যাঘাত তৈরি করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ভারত। সূত্র এমনই জানিয়েছে। উঠেছে কাশ্মীরের কথাও।
শুধু রাশিয়া নয়, মঙ্গলবার অত্যন্ত গোপনে অজিত ডোভাল বৈঠক করেছেন সিআইএ প্রধান উইলিয়াম জে বার্নসের সঙ্গেও। বুধবার এ খবর জানা যায়। বুধবারও দিল্লিতেই আছেন উইলিয়াম। আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক তিনি করতে পারেন। সিআইএ প্রধানও মূলত আফগানিস্তান নিয়ে বৈঠক করেছেন বলে জানা গেছে। যদিও ভারত এবং অ্যামেরিকার প্রশাসন এই বৈঠক নিয়ে একটি মন্তব্যও করতে চায়নি।
সম্প্রতি গোপনে আফগানিস্তানে গিয়ে তালেবানের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছিলেন সিআইএ প্রধান। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধারের বিষয়টি নিয়েই তিনি আলোচনা করেছিলেন বলে জানা গেছিল। তালেবান মন্ত্রিসভা গঠনের পরদিনই তার ভারত সফরে আসা অন্য বার্তা বহন করছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। তালেবানের মন্ত্রিসভা নিয়ে অ্যামেরিকাও সন্তুষ্ট নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদের পরিস্থিতি নিয়েই ভারতীয় এনএসএ-এর সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
তালেবানের সঙ্গে পাকিস্তান ঘনিষ্ট সম্পর্ক রাখছে বলে অনেকেই অভিযোগ করছে। আইএসআই তালেবানের পিছনে আছে বলেও অভিযোগ উঠছে। সম্প্রতি জাতিসংঘে ভারত এ বিষয়ে অভিযোগ করেছে। আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে সংশয় প্রকাশ করছিল ভারত। সেই পরিস্থিতিতে একই দিনে ভারতীয় রাজধানীতে সিআইএ প্রধান এবং রাশিয়ান এনএসএ-এর উপস্থিতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।