শুক্রবার ● ১১ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » কৃষি » সড়ক বিভাগ অপটিক্যাল ফাইবার কেটে রাঙামাটিতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে : শহিদুল আলম,মহাব্যবস্থাপক বিটিসিএল
সড়ক বিভাগ অপটিক্যাল ফাইবার কেটে রাঙামাটিতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছে : শহিদুল আলম,মহাব্যবস্থাপক বিটিসিএল
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (১১ মার্চ ২০১৬ : বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৩০মিঃ) সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়ক উন্নয়ন কাজ করার সময় অপটিক্যাল ফাইবার লাইন কেটে ফেলার কারণে রাঙামাটি জেলাতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সমিশন, বিটিসিএল কোম্পানি লিঃ এর মহাব্যবস্থাপক শহিদুল আলম৷
তিনি রাঙামাটি পার্বত্য জেলাতে ঘনঘন ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়ে মুঠোফোনে সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম’র সাথে এ মন্তব্য করেন৷
বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার “ডিজিটাল বাংলাদেশ” ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের ঘোষণাকে সফল করার তাগিদে অনেকেই বেছে নিয়েছেন অনলাইন ব্যবসা, অনলাইন সেবা, অনলাইন মিডিয়া সাংবাদিকতা, এক কথায় অনলাইনে নিজেদের পেশা ৷ সেবা ও উপার্জনের উত্স হয়ে উঠছে অনলাইন ৷ আর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং তথ্য প্রযুক্তির বিশাল বিপ্লবের জন্য অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে ইন্টারনেট সংযোগ ৷ বাংলাদেশের সব জেলায় বেসরকারীভাবে ইন্টারনেট সংযোগ চালু থাকলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে নির্ভর করতে হয় বিটিসিএল এর উপর ৷ বর্তমান সরকারের সদিচ্ছার কারণে রাঙামাটি পার্বত্য জেলাকে বিটিসিএল এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে তথ্য প্রযুক্তির মহাসড়কে যুক্ত করা হয়েছে বটেই, কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগের তত্তাবধান কিভাবে হচ্ছে তা ক্ষতিয়ে দেখার বিষয় ৷ কারণ শুধুমাত্র একটা জেলা রাঙামাটিতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন হওয়ার ঘটনা প্রতিমাসে ৭-১০ বার ৷ একবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে ইন্টারনেট সংযোগ পেতে সময় লাগে কম পক্ষে এক থেকে দুই দিন ৷ আবার সংযোগের নাম উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড হলেও রাঙামাটিতে চলে অত্যন্ত ধীরগতিতে ৷ ব্রডব্যান্ড উচ্চগতি সম্পন্ন সংযোগে যে গতি ১৫ এম.বি থাকার কথা সেখানে গ্রাহক পাচ্ছেন মাত্র ৩-৪এম.বি ৷ নিয়ম অনুযায়ী বিটিসিএল তাদের জেলা প্রধান কার্যালয় থেকে ইন্টারনেট সংযোগ ৪ কিঃমিঃ এর মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও গ্রাহক চাহিদা থাকার কারণে ৪ কিঃমিঃ থেকেও ১০গুন দুরত্বেও সংযোগ দিচ্ছে ৷ ইন্টারনেট সংযোগের ধীর গতির সেটাও একটা বড় কারণ ৷ অন্যদিকে বিটিসিএল প্রতিটি প্যাকেজ মাসিক ভিত্তিক হওয়াতে গ্রাহকরা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন কারণ গ্রাহকরা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না পারলে (সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলে) প্রতি মাসে গ্রাহকদের যথারীতি বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে ৷ বিটিসিএল পুরাতন গ্রাহক নীতিমালা বাতিল করে যুপেযোগি একটি গ্রাহক সেবা নীতি প্রনয়ন করা সময়ের দাবি ৷
চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটিতে অপটিক্যাল ফাইবার (উচ্চগতির ইন্টারনেট) লাইন প্রতিমাসে গড়ে সাত বার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া, দেশের মূল্যবান সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হচ্ছে, সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব এবং বর্তমান সরকারের মহতী উদ্যোগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক বিপ্লব ঘটানো, সবই ব্যাহত হচ্ছে ৷ বিকল হয়ে পড়ে জেলার অনলাইন কর্মকান্ড, বন্ধ হয়ে যায় সরকারী দপ্তর গুলিতে অফিসিয়াল কার্যক্রম৷
এবিষয়ে বিটিসিএল চট্টগ্রামের বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল লাইনটা কেটে যাচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাজের জন্য, আমাদের কোন কাজের গাফিলতির জন্য ক্যাবল কাটা যাচ্ছে না ৷ আমরা আছি এগুলোর সুরক্ষার চাপে ৷ এখান থেকে হাটহাজারী পর্যন্ত ১৮ টা কালভার্টের কাজ করছে, অক্সিজেন মোড় থেকে হাটহাজারী পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রসারনের কাজ হচ্ছে ৭ বছর আগে থেকে এখনো শেষ হয় নাই, ১৮ কিঃমিঃ সড়কের কাজ করতে আর কত বছর সময় লাগবে ?! তারা প্রতিবারে ৫০ মিটার ১০০ মিটার করে কাজ করে তারপর এটা ভরে ফেলতেছে, যখনি কাজ করে তখনই আমাদের বিটিসিএল এর অপটিক্যাল ক্যাবল কাটা যাচ্ছে ৷ এতে আমাদের কিছু করার নাই, তাদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা যেন সঠিকভাবে কাজ করে৷ আমাদের এই বিভাগে ফেনী, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, কক্সবাজার সব জায়গায় ক্যাবল ঠিক আছে শুধু মাত্র রাঙামাটিতে অপটিক্যাল ফাইবার লাইন কাটা যাচ্ছে, যার কারণ হচ্ছে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উন্নয়ন কাজ, বলেন হুমায়ুন কবির ৷
সড়ক ও জনপথ বিভাগ কাজ করার সময় বিটিসিএল এর কোন লোক তদারকি করেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমাদের লোক থাকে, না থাকলে আরো বেশী ক্যাবল কেটে ফেলতো ৷ কিছু কিছু পরিস্থিতি আছে যেগুলো এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকেনা৷ আপনারা সড়ক ও জনপদ বিভাগকে বলতে পারেন৷
দেশের সম্পদ রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব, প্রতিমাসে গড়ে সাতবার ক্যাবল কাটা যাচ্ছে বা ইন্টারনেট সংযোগ থাকছেনা, থাকলেও ধীরগতি হচ্ছে- প্রতি উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের কাজ মাঠ পর্যায়ে, পরিকল্পনা নয়, আমরা সমস্যা ধরা পরলে সমাধান করি৷ যতবার অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল কাটা যাবে ততবার মেরামত করা আমাদের দায়িত্ব, আমরা কাজ করছি ৷ গ্রাহকরা ভোগান্তিতে আছেন সেটা তুলে ধরুন, সড়ক ও জনপদ বিভাগকে বলেন ৷ এটা যে দেশের সম্পদ এটা অনস্বীকার্য, তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগ রাত্রির বেলায় কাজ করার কারণে ক্যাবল কাটা যাচ্ছে, রাতের বেলায় তাদের যথোপযুক্ত কারিগরী জ্ঞান সম্পন্ন কোন কর্মকর্তা উপস্থিত থাকেন না এমনকি ঠিকাদারেরা পর্যন্ত রাতের বেলায় সেখানে থাকেন না৷ সেখানে আমাদের কোন ভুমিকা নেই ৷
সড়ক ও জনপদ বিভাগকে আপনার কর্তৃপক্ষ অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন বা কেটে দেওয়ায় কোন ধরনের জরিমানা করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চিঠি দিয়েছি তারা যেন সঠিকভাবে কাজ করে৷ তারা আমাদের ক্যাবল সড়াতে বলেছে এটা সম্ভব নয় ৷
অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল যে কেটে যাচ্ছে, কেটে না যাওয়ার জন্য কোন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছেন ? তিনি বলেন,সড়ক ও জনপদ বিভাগ যদি কাজ করে ক্যাবল কাটা যাবে, আর ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে ৷ তবে তারা যদি আরেকটু সতর্ক হয় তবে কম কাটা যাবে ৷
রাঙামাটি শহরের কলেজ গেইটে মুল সড়কের ওপর দীর্ঘ পাঁচ মাস যাবত্ আপনাদের হ্যান্ডহোলের (ম্যানহোল) ঢাকনা বিহীন খোলা অবস্থায় রয়েছে, আপনাদের উপ সহকারী প্রকৌশলী হাফিজ আহম্মদকে বলার পরেও কোন উদ্যোগ তিনি নেন নাই যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বিষয়টি আপনি কি জানেন ? তিনি বলেন, ব্যাপারটা আমি দেখবো ৷
চট্টগ্রামে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল আলম এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আসলে অপটিক্যাল ফাইবার লাইন ক্যাবল কাটা যাওয়ার ব্যাপারে বিটিসিএল কর্মকর্তা বিষয়টা যে আমাদের ঘাড়ে চাপিয়েছে সেটা আমাদের অসাবধানতা নয়, আমরা এক মিটার মাটির নীচ পর্যন্ত কাজ করি৷ বিটিসিএল এর সাথে আমাদের একটা চুক্তি হয়েছে, তারা অপটিক্যাল ফাইবার লাইন মাটির দেড় মিটার গভীরে অর্থাত্ সাড়ে চার ফুট মাটির নীচে দিয়ে লাইন নিবে, কিন্তু দেখা যাচ্ছে তারা কোন জায়গায় এক মিটার নীচেও কাজ করেনি, কোন কোন জায়গায় দুই ফুট দেড় ফুট কোন জায়গায় এক মিটার গভীরে কাজ করেছে আবার কোন কোন জায়গায় দেড় মিটার, তাই আমরা বুঝতে পারিনা৷
সেজন্য আমরা তাদের কাছে স্মারক নং: ৩২৬৬ তারিখ ২২ অক্টম্বর ২০১৪,স্মারক নং: ৫০৮ ও ৫০৯ তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ ও স্মারক নং:৭৬৩ তারিখ ৬ মার্চ ২০১৬ তারিখ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অফিসিয়াল পত্রে : (চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগাধীন “চট্টগ্রাম - রাঙামাটি জাতীয় মহাসড়কের (এন-১০৬) চট্টগ্রাম অক্সিজেন মোড় - হাটহাজারী অংশে বিভিন্ন কিঃমিঃ এ ডিভাইজারসহ প্রশস্থকরণ” শীর্ষক প্রকল্পের উন্নয়ন মুলক কাজ চলাকালীন সময়ে বিটিসিএল কর্তৃক সড়ক পাশ্বে স্থাপিত ভু- গর্ভস্থ অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল চিহ্নিত করতঃ ক্ষতিগ্রস্থ না হওয়ার জন্য বর্ণিত স্থানে তার উপযুক্ত প্রতিনিধি প্রেরণ করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো) তার পরও রাস্তার কাজ চলাকালীন সময়ে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল লাইন চিহ্নিত করণের জন্য উপযুক্ত বিটিসিএল এর প্রতিনিধি প্রেরনে তাদের গড়িমসি, তাদের লোক কখনো রাখেন, কখনো রাখেন না ৷ তারা যদি তাদের কাজ ঠিকমত করতো, তারা যদি দেড় মিটার মাটির নীচে লাইন নিতো তাহলে কোন সমস্যা হতোনা ৷ আমরা রাতে কাজ করি, কারণ দিনে সড়ক জনব্যস্ত থাকে, রাতে কাজ করতে সুবিধা হয় তাই ৷
সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কাজতো শেষ করতে হবে৷ বিটিসিএল এর দুটি লাইন, স্থানান্তর করার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ চুক্তি অনুযায়ী সাধারন টিএন্ডটি লাইন এর জন্য বিটিসিএলকে ২ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা আমরা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি ৷ আর অপটিক্যাল ফাইবার লাইনের বিষয়ে তাদের সাথে আমাদের সমযোতা স্বাক্ষর হয়েছে যে, তারা অপটিক্যাল ফাইবার লাইন মাটির দেড় মিটার গভীরে করে নিয়ে যাবে, আর আমাদের ভবিষ্যতে যদি সড়ক সম্প্রসারনের প্রয়োজন হয় তাহলে প্রয়োজনে বিটিসিএল নিজ খরচে অপটিক্যাল ফাইবার লাইন অন্যদিকে সড়িয়ে নিবে, এক্ষেত্রে সড়ক ও জনপদ বিভাগ কোন ক্ষতিপূরণের অর্থ দিবেনা, সড়ক ও জনপদ বিভাগের কোন দায়ভার থাকবেনা ৷ কিন্তু তারা কোনটাই করছেন না ৷ তা সত্তেও আমরা তাদেরকে বলেছি একটা লোক দেন ৷ আমরা তাদেরকে চিঠিও দিয়েছি অনেকদিন হলো ৷ আমরা চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছি ৷ তা সত্তেও দেশের একটা সম্পদ অপটিক্যাল ফাইবার লাইনের যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে কাজ করছি, আমার তো মাটির গভীরতা নির্দিষ্ট করা এক মিটার৷ এক মিটারের উপরে তো আমি কাজ করতে পারব না ৷ তবে তারা যদি সঠিকভাবে কাজ করতো দেড় মিটার মাটির গভীরে লাইন দিতো তাহলে কোন সমস্যা হতোনা ৷
সড়ক ও জনপদ বিভাগের সড়ক সম্প্রসারনের কাজ দীর্ঘ সাত বছরে শেষ না হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এতে আমারও কিছু করার নেই, মাঝখানে ঠিকাদার সব টাকা নিয়ে চলে গিয়েছিল আবার নতুন করে অনুমোদন হয়েছে, আরেকজন ঠিকাদার গত ৭ মার্চ ২০১৬ তারিখ থেকে আবার কাজ শুরু করেছে ৷
এবিষয়ে বিটিসিএল এর চট্টগ্রাম বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার প্রদীপ দাশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অপটিক্যাল ফাইবার লাইন রক্ষণা- বেক্ষণ করার জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ রয়েছে,তিনি তাদের সাথে এবিষয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন৷
বিটিসিএল এর চট্টগ্রাম-রাঙামাটি অপটিক্যাল ফাইবার লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়ে ট্রান্সমিশন, বিটিসিএল কোম্পানি লিঃ এর মহাব্যবস্থাপক ঢাকা থেকে মোবাইলে শহীদুল আলম বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়ক উন্নয়ন কাজ করার সময় অপটিক্যাল ফাইবার লাইন কেটে ফেলার কারণে রাঙামাটি জেলাতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে ৷ আমরা একপাশের কাটা লাইন সংযোগ দিতে দিতে তারা আরেক পাশে অপটিক্যাল ফাইবার লাইন কেটে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ৷ শুধু রাঙামাটি নয় মাদারীপুর, টাঙ্গাইলেও একই সমস্যা ৷ অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য বিটিসিএল কর্মকর্তাদের বা বিটিসিএল সংশ্লিষ্টদের কোন গাফিলতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার লোকজনের কোন গাফিলতি নাই, আমাদের (বিটিসিএল) পক্ষে যতদুর সম্ভব আমাদের লোকজন কাজ করতেছে, চেষ্টা করতেছে যতদ্রুত সম্ভব সেবা দিচ্ছে ৷
কাজ করার সময় বিটিসিএল এর অপটিক্যাল ফাইবার লাইন চিহ্নিত করনের জন্য লোক চেয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে বিটিসিএল চট্টগ্রাম নন্দনকানন’কে চিঠি দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এমন কোন দিন নাই তারা কাজ করার সময় আমাদের লোক ছিলনা ৷ আমাদের লোক দাড়িয়ে থেকেও বিচ্ছিন্ন করণ ঠেকাতে পারছেনা ৷ তারা অপটিক্যাল ফাইবার কেটে ফেলে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ৷
রাঙামাটির কলেজ গেইটে দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে হ্যান্ডহোল (ম্যানহোল) ঢাকনা বিহীন খোলা অবস্থায় রয়েছে- তিনি বলেন, বিষয়টা আমি জানিনা,আমাকে কেউ জানায়নি৷ তবে এ বিষয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলীর (হুমায়ুন কবিরের)সাথে কথা বলে দ্রুত ঢাকনা প্রদানের আশ্বাস দেন মহাব্যবস্থাপক ৷
প্রতিবেদক উপস্থিত হয়ে জানতে চাইলে,রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সহকারী প্রকৌশলী (টেলিকম) সত্যজিত বড়ুয়া বলেন, ১০ মার্চ রাত ১২.২০মিনিটে চট্টগ্রামের বালুচরা ব্রিজের কাজে অতিরিক্ত মাটি কাটার সময় হ্যান্ডহোলের (ম্যানহোল) অতিরিক্ত মাটি ধ্বসে গিয়ে অপটিক্যাল ফাইবার লাইন ছিড়ে আবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় রাঙামাটির ইন্টারনেট৷ তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই প্রকল্প) এর আওতায় রাঙামাটিতে বেসরকারীভাবে ৩০ এম.বি উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট অপটিক্যাল ফাইবার লাইনের কাজ শুরু হয়েছে ৷ সেখানেও তারা টেলিফোন লাইন কেটে দিয়ে বিটিসিএল এর জনসেবায় বাধাগ্রস্থ করেছে ৷ সত্যজিত বড়ুয়া অভিযোগ করেন, চালু হওয়া নতুন এই অপটিক্যাল ফাইবার লাইনের কোন কারিগরী দক্ষ জনশক্তি নেই, তারা অকারণে টেলিফোন লাইন কাটছে ৷ এতে গ্রাহকদের ভোগান্তি কেবল বাড়ছে, অথচ আমাদের কিছুই করার নাই ৷
বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার রাঙামাটি বিটিসিএল এর বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ অহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন কিছু বলতে রাজি নয়, তার নাকি এসবের কোন দায়িত্ব নেই সাফ জানিয়ে দেন ৷
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের প্রধান হাতিয়ার ইন্টারনেট সংযোগ লাইন, জাতীয় সম্পত্তি অপটিক্যাল ফাইবার লাইন ক্ষতি হওয়া বা এ সম্পত্তি রক্ষায় কথা বলার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভিতর একজন (স্বতন্ত্র) সংসদ সদস্য আরেকজন (সরকারদলীয়) সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বিগত দুই বছরের মধ্যে কোন ভুমিকা রাখতে দেখা যায়নি ৷
বিজ্ঞ সচেতন মহল মনে করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার প্রত্যন্ত দুর্গম অঞ্চল গুলি যুক্ত হোক এটা হয়তো অনেকে চায় না ৷ যেকারণে বিটিসিএল এর ইন্টারনেট সংযোগে এত সমস্যার পরেও সমাধানের জন্য স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা একটি বারের জন্য ও উচ্চবাচ্য দুরের কথা বাক্য ব্যয় ও কেউ করেন না ৷
এদিকে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম,সেনাবাহিনী,বিজিবি,সকল গয়েন্দা সংস্থা,পুলিশ প্রশাসন,রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙামাটি জেলা প্রশাসন, রাঙামাটি পৌরসভা,রাঙামাটি জেলার সকল সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,দাতা সংস্থা,বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা,জেলার সকল গুরুত্বপূর্ণ সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারী সবাই চায় ইন্টারনেট সংযোগের স্থায়ী সমাধান, এমনকি রাঙামাটি পার্বত্য জেলার উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সাধারন ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার কারীদের দাবী কে বা কারা এবং কোন প্রতিষ্ঠানের গাফেলতির কারণে প্রতিনিয়ত ইন্টানেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে ক্ষতিয়ে দেখা প্রয়োজন৷ বিষয়টি দীর্ঘ স্থায়ী সমাধান থাকা আবশ্যক ৷
ডিজিটাল বাংলাদেশের নাগরিক সেবা ডিজিটাল হওয়া বাঞ্চনীয় ৷ বিটিসিএল ও সড়ক ও জনপথ বিভাগ যদি এভাবে একে অপরের ঘাড়ে দোষ দিতে থাকে তাহলে সমস্যা সমধান তো দুরের কথা দেশের মুল কর্মকান্ড থেকে রাঙামাটি জেলা আরো কয়েক ধাপ পিছিয়ে যাবে, সাধারন মানুষ বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ, ব্যবসা বাণিজ্য এবং সরকারী বেসরকারী পর্যায়ে উন্নয়ন করতে পারবেনা ৷
তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার সীমাবদ্ধ হলে বাধাগ্রস্থ হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন ৷
উল্লেখ্য গত ১০ মার্চ রাত্রি ১২.২০ মিনিটে অপটিক্যাল ফাইবার লাইন ছিড়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় রাঙামাটির ইন্টারনেট৷ যা সুদুর সাজেক প্রত্যন্ত সীমান্ত এলাকায় পর্যন্ত তার প্রভাব পড়ে, ১১ মার্চ রাত্রি ৯.২০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হওয়া ইন্টারনেট সংযোগ ৪৫ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত বিটিসিএল পূণরায় সংযোগ চালু করতে ব্যর্থ হয়েছে ৷ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের কথা এবং কাজে মধ্যে কোন সমন্বয় নাই ৷