মঙ্গলবার ● ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » কুড়িগ্রাম » করোনাকালিন নার্গিস ছাড়া বিয়ে হয়ে গেল সব বান্ধবীর
করোনাকালিন নার্গিস ছাড়া বিয়ে হয়ে গেল সব বান্ধবীর
করোনাকালে এক বছরেরও অধিক সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্রীদের দেদারছে বাল্য বিয়ের শিকার হচ্ছে। এমনটায় দেখা গেছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সারডোব উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুলটির নমব শ্রেণিতে গিয়ে দেখা গেছে একমাত্র শিক্ষার্থী নার্গিস আক্তারকে। বাকি ৮ বান্ধবীর সবারই বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে। দেড় বছর পর খুলেছে স্কুল। তাই অন্য ছাত্র-ছাত্রীদের মতো নার্গিস আক্তারও গতকাল রবিবার স্কুলে আসে। হাসিমুখেই ক্লাসে ঢোকে। কিন্তু মুহূর্তেই তার সেই মুখের হাসি উবে যায়। উল্টো স্বপ্নভঙ্গের ভয় চেপে ধরে। কারণ ক্লাসের ৯ জন মেয়ের মধ্যে আটজনই বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। বাকি আছে শুধু সে। নার্গিস কুড়িগ্রাম সদরের ধরলা নদীসংলগ্ন চর সারডোবের ‘সারডোব উচ্চ বিদ্যালয়’-এর নবম শ্রেণির ছাত্রী।
সোমবার দুপুরে কথা হয় তার সঙ্গে। এ সময় হতাশার সুরে নার্গিস বলে, আমার ক্লাসের নুর বানু, নাজমা, স্বপ্না, মৌসুমী, আশামনি, হেলেনা, চম্পা ও আরফিনার বিয়ে হয়েছে। আমার ইচ্ছা কলেজে পড়ার। জানি না ইচ্ছা পূরণ হবে কি না…।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, নবম শ্রেণির ৩৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন মেয়ে। তাদের মধ্যে আটজনই পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে এ বছর শ্বশুরবাড়ি চলে গেছে। গতকাল ৯ ছাত্র ও এক ছাত্রী উপস্থিত ছিল। একই অবস্থা দশম শ্রেণির। ১৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজন ছাত্রী। কিন্তু জেসমিন ছাড়া সবারই বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে।
সূত্রে আরও জানা যায়, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীর সংখ্যা ৭৯ জন। কিন্তু তাদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির একজন, সপ্তম শ্রেণির দুজন, অষ্টম শ্রেণির চারজন, নবম শ্রেণির আটজন ও দশম শ্রেণির তিনজনকে গোপনে বাল্যবিয়ে দিয়েছে পরিবার।
স্কুলটির শিক্ষক ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা পারভীন বলেন, চরের অভিভাবকরা মেয়ে একটু বড় হলেই আপদ মনে করে দ্রুত বিয়ে দেন। অনেক বুঝিয়েও কাজ হচ্ছে না। করোনাকালে ঠিকমতো খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয়নি। এই সুযোগে ব্যাপক হারে বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়েছে।