বুধবার ● ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » বিশ্বনাথের চাঞ্চল্যকর দয়াল হত্যা মামলার তদন্তের নিদের্শ
বিশ্বনাথের চাঞ্চল্যকর দয়াল হত্যা মামলার তদন্তের নিদের্শ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার চাউলধনী হাওরে নিজের কৃষি জমিতে খুন হন ছরকুম আলী দয়াল।
এই হত্যাকান্ডের পর দেশ-বিদেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। কিন্তু থানা পুলিশ ছিল খুনিদের পক্ষে অনড়।
হত্যাকান্ডের পর আসামী গ্রেফতার না করে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, প্রতিবাদীদেরকে সাজানো মিথ্যা মামলায় জেল হাজাতে প্রেরণ, মামলা তদন্তে চরম গাফলাতি, সর্বশেষে খুনের আসামীদেরকে ছেড়ে দিয়ে চার্জশীট দাখিল করা ছিল একটি নজিরবিহীন ঘটনা।
এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে এলাকাবাসী থানার প্রাক্তন ওসি শামীম মূসা ও এসআই ফজলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশের এই দুই কর্মকর্তাকে ক্লোজড করা হয়।
এই আসামীরা পূণরায় স্কুলছাত্র সুমেলকে গুলি করে হত্যা করে। ঘটনার আসল রহস্য জানার জন্য পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা দফায় দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দয়াল হত্যার আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
গত ২৮ জানুয়ারী চৈতননগর গ্রামের কৃষক ছরকুম আলী দয়ালকে তার নিজ ক্ষেতের জমিতে একদল অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসী ঘেরাও করে খুন করে ফেলে যায়।
এতে দয়ালের পক্ষে আরও ৪/৫জন গুরুত্বর জখম হন। কিন্তু থানার ওসি শামীম মূসা কয়েক দফা এজাহার পরিবর্তন করে মূল আসামীদের বাদ দিয়ে ২ ফেব্রুয়ারী একটি হত্যা মামলা রেকড করেন এবং অবশেষে ১১ এপ্রিল ঘটনার সাথে জড়িত মুল আসামীদের বাদ দিয়ে মাত্র ৫জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
এই চার্জশীটের বিরুদ্ধে মামলার বাদী দয়ালের ভাতিজা আহমদ আলী ৩ মে আদালতে নারাজী দাখিল করেন। দীর্ঘ সময় করোনা ভাইরাস জনিত কারনে আদালতের কার্যক্রম চালু না থাকায় মামলাটি শুনানী হয়নি।
১৩ সেপ্টেম্বর সোমবার সিলেটের ৩নং আমলী হারুনুর রশীদের আদালতে দীর্ঘ শুনানীর পর নারাজী আমলে নিয়ে মাননীয় আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নিদের্শ দেন।
এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী আহমদ আলী। মামলার বাদীপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবি এএসএম গফুর, শামিউল আহমদ ও সিএসআই অমিত কুমার দে এবং আসামী পক্ষে ছিলেন এডভোকেট লালা ও গিয়াস উদ্দিন।
বাদী পক্ষের আইনজীবিরা আদালতে বিভিন্ন আইনি যুক্তি ও বাস্তব ঘটনা অবহিত করে বলেন, চাউলধনী হাওরটি একটি সমবায় সমিতি লীজ গ্রহন করে যুক্তরাজ্য প্রবাসী অত্র মামলা আসামী খুনি সাইফুল ও তার বাহিনীকে সাবলীজ দেয়।
এই বাহিনী গত ১০বছর ধরে হাওরে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এক পর্যায়ে কৃষক দয়ালকে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের সময় ঘটনাস্থল থেকে আসামী আশরাফ উদ্দিন এবং সাহেদকে গ্রেফতার করে ১৩৩৭নং জিডি মূলে দু’জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
আদালতে প্রেরিত ফরওয়াডিং রির্পোটে এসআই ফজলু মামলার এজাহার নামীয় আসামীগণ উক্ত খুনের ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বাক্ষীপ্রমাণ পাওয়া যাইতেছে এমন মন্তব্য করে আসামীদের আদালতে প্রেরণ করেন।
কিন্তু পরবর্তীতে আসামীদের নিকট থেকে বড় অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে ২৫ জন আসামীকে অব্যাহতি দেন।
এই মামলার ৯জন আসামী চার্জশীট দাখিলের পূর্বে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আসার পর পলাতক থাকায় জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।
এখনও তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা বহাল রয়েছে। মামলার শুনানীকালে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমানসহ এলাকার কয়েক শতাধিক লোক আদালত প্রাঙ্গণে দাড়িয়ে মামলার শুনানী শুনছিলেন।
এতে চাউলধনী হাওর পারের মানুষরা ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা করছেন বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
বিশ্বনাথে পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সভা
বিশ্বনাথ :: বহু খাতভিত্তিক পুষ্টি কার্যক্রম বাস্তবায়নে বিশ্বনাথ উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) উপজেলা বিআরডিবি হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সমন্বয় কমিটির আয়োজনে, আরডিআরএস বাংলাদেশ ও সূচনা কর্মসূচির সহযোগীতায় সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. কামরুজ্জামান।
সূচনা প্রকল্প বিশ্বনাথ’র পুষ্টি কর্মকর্তা হামিদা হক’র সঞ্চালনায় সভায় বক্তারা বলেন, পুষ্টি ছাড়া দেহ কাজ করতে অক্ষম। পর্যাপ্ত পুষ্টি দেহকে বাড়িয়ে তোলে এবং বৃদ্ধি ও মেরামতের জন্য পুষ্ট করে।
এ কারণে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় নির্দিষ্ট পরিমাণ পুষ্টি জাতীয় খাবার রাখা উচিত।
আলোচ্যসূচির আলোকে সভায় আরও বলা হয়, প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিক প্রসবে (নরমাল ডেলিভারি) সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান সর্ম্পকে আরও গুরুত্ব দেয়া উচিৎ।
কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের চিকিৎসার মান উন্নয়নে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদগুলোর সক্রিয় সহায়তা থাকা দরকার। সিদ্ধান্ত হয়, বিশ্বনাথের যে সব এলাকা স্বাস্থ্য ও পুষ্টির দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে, সে সব এলাকায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সর্ম্পকিত বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করার।
সূচনা প্রকল্পের উঠোন বৈঠক গুলোতে বিশ্বনাথের এফডাব্লিউএ’দের উপস্থিতি নিশ্চিত ও স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সম্পর্কিত স্থানে বিনামূল্যে ব্লিচিং পাউডার সরবরাহের।
সভায় উপস্থিত ছিলেন পুষ্টি কমিটির সদস্য সচিব, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুর রহমাস মুসা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (প্রাথমিক) মুহি উদ্দিন আহমদ, প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুস শহীদ হোসাইন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী সঞ্জিব চন্দ্র সরকার, হাজী মফিজ আলী বালিকা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নেহারুন নেছা, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী জামাল উদ্দিন, বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি সাইফুল ইসলাম বেগসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।