শনিবার ● ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » কৃষি » পোকা নিধনে ‘আলোক ফাঁদ’
পোকা নিধনে ‘আলোক ফাঁদ’
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে পোকা-মাকড় নিধনের পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ‘আলোক ফাঁদ’র (লাইট ট্র্যাপ) ব্যবহার বেড়েছে উপজেলায়। ফসলি জমি পোকামুক্ত করতে কীটনাশকের বিকল্প এ প্রদ্ধতি কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
আলোক ফাঁদের মাধ্যমে ফসলের মাঠে পোকা-মাকড়ের উপস্থিতি যাচাই ও নিয়ন্ত্রণ করছেন তারা। স্বল্প খরচের এ কৌশল ব্যবহারে একদিকে আর্থিক ভাবে লাভমান হচ্ছেন কৃষককূল, অন্যদিকে ক্ষতিকর কীটনাশক থেকে রক্ষা পাচ্ছে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার ৮ ইউনিয়নে চলতি বছরে আমন ধানের আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৫ হেক্টর। গত বছরও ছিল একই লক্ষমাত্রা।
এবার ফসলি ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা নিধনে উপজেলার ২৪টি ব্লকের সব ক’টিতেই ১০টি করে ২৪০ ‘আলোক ফাঁদ’র বসানো হয়েছে। সপ্তাহে একদিন (প্রতি বুধবার) এর মাধ্যমে পোনা দমন করছেন কৃষকরা। পাশাপাশি ৮০ শতাংশ জমিতে পার্চিং পদ্ধতিও ব্যবহার করা হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, আমন ধানের আবাদি জমির ফাঁকা স্থানে আলোক ফাঁদ তৈরি করেছেন কৃষকরা। বাঁশের তিনটি খুঁটি ত্রিকোনাকার করে মাটিতে পুঁতে, খুঁটির মাথায় ঝুলিয়ে রাখা বৈদ্যুতিক বাল্ব। এর নীচে রাখা পাত্র।
এতে কেউ রেখেছেন ডিটারজেন্ট মিশ্রিত কেউবা কেরোসিন মিশ্রিত পানি। অনেকে আবার হারিকেন ও সৌর বিদ্যুতের বাতি জ্বালিয়ে ফাঁদ তৈরি করেছেন।
সন্ধ্যা নামলেই ‘আলোক ফাঁদ’র আলোয় আলোকিত হয় ক্ষেতেই আইল। তখন জ্বলমলে আলোয় আকৃষ্ট হয়ে, পোকা-মাকড় উড়ে এসে পাত্রে রাখা পানিতে পড়ে মারা যায়। এছাড়াও একাধিক কৃষকের ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে দেখা যায়।
গাছের ডাল ও বাঁশের কঞ্চি ক্ষেতে পুঁতে রেখেছেন তারা। এগুলোতে পাখিরা বসে সাবাড় করবে, ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড়।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার প্রাপ্ত কৃষক জাবের আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, আলোক ফাঁদ ব্যবহারে, স্বল্প খরচে আমরা ফসলের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় দমন করতে পারছি। এতে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি ও আর্থিক ভাবে সাশ্রয় হচ্ছে আমাদের।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন, ধানের জমিতে ক্ষতিকারক পোকা-মাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয়ে আলোক ফাঁদের বিকল্প নেই।
এর মাধ্যমে জমিতে কী কী ক্ষতিকর ও উপকারি পোকা-মাকড় রয়েছে তা শনাক্ত করে ক্ষতিকর পোকা নিধনে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
বিশ্বনাথে চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি, আতঙ্ক
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চোরের উপদ্রব। রাত নামলেই উপজেলার কোথাও না কোথাও ঘটছে একাধিক চুরির ঘটনা।
খোয়া যাচ্ছে বাসাবাড়ি, সরকারি প্রতিষ্ঠানের ফ্যান ও টিউবয়েল আর কৃষকের গবাদি পশু। চোরেরা হানা দিচ্ছে ছোট-খাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও।
এমনকি, রেহাই পাচ্ছেনা মসজিদ, মন্দির। তালা ভেঙ্গে ধর্মীয় এসব উপাসনালয় লুট করছে চোরচক্র। শীত নামার আগেই চোরের এমন উপদ্রবে আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে।
হয়রানি এড়াতে অধিকাংশ ঘটনায় মামলা হয়না থানায়। হলেও অধরা থেকে যায় চোর সিন্ডিকেট।
সূত্র জানায়, গেল শুক্রবার রাতে (১৭ সেপ্টেম্বর) উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের বাউসী গ্রামের কৃষক সাহিদ আলীর গবাদি পশু নিয়ে চোরেররা।
এর আগে দিন বৃহষ্পতিবার একই রাতে ইউনিয়নের বরুনী গ্রামের দুটি মসজিদে চুরি সংগঠিত হয়। পূর্ব বরুনী পশ্চিম ও পূর্ব বরুনী জামে মসজিদে চোরেরা তালা ভেঙ্গে ক্যাশবাক্স ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
একই কায়দায় গেল ১৫ সেপ্টেম্বর চুরি হয় উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামের বায়তুন নূর জামে মসজিদে। এর আগে ক’দিন আগে চুরি হয় কাদিপুর লামারচক গ্রামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্যাশসহ মালামাল ও কাদিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিলিংফ্যান ও মূল্যবান জিনিসপত্র।
গেল ২রা সেপ্টেম্বর উপজেলার ভল্লবপুর গ্রামে দু’রাতে চুরি হয় ৭টি টিউবওয়েল। পরদিন ভোরে পালানোর সমসয় টিউবওয়েলসহ দুই চোরকে আকট করে পুলিশে দেয় জনতা।
অনেকেই জানান, মাদকের অবাদ বিস্তারের কারণে দিনদিন উঠতি বয়সি তরুণেরা আসক্ত হচ্ছে। নেশার টাকার জোগান দিতেই জড়িয়ে পড়ছে চুরিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইন-চার্জ গাজী আতাউর রহমান বলেন, চুরি-ডাকাতি রোধে পুলিশ জোরালো ভাবেই কাজ করছে। ইতিমধ্যে চারজন চোর ও একজন কুখ্যাত ডাকাতকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।