শনিবার ● ২ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ঢাকা » তদারকি সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন জননেতা সাইফুল হক
তদারকি সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন জননেতা সাইফুল হক
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন আগামী জাতীয় নির্বাচনও যদি ব্যর্থ ও তামাশাপূর্ণ হয় তাহলে দেশ ও দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গভীর বিপর্যয়ে নিপতিত হবে। আরেকটি নির্বাচনী তামাশা এই দেশের মানুষ নিতে পারবে না। তিনি বলেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নিয়মতান্ত্রিক পথে সরকার পরিবর্তনের সুযোগ যদি বন্ধ করে দেয়া হয় তা একদিকে দেশকে অনাকাঙ্খিত সংঘাতের দিকে ঠেলে দেবে, আর অন্যদিকে দেশে জঙ্গীবাদী মতাদর্শ ও রাজনীতির উত্থানের রাস্তাকে আরো প্রশস্ত করবে। তিনি বলেন, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকাতে সরকার পরিকল্পিতভাবে রাজনীতিতে হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃণা বাড়িয়ে দিয়ে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা সৃষ্টি করে চলেছে। তিনি বলেন, বিরোধী দল ও বিরোধী মতকে দমন করে কেবল রাষ্ট্রশক্তির জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার নীতি- কৌশল আখেরে সরকার ও সরকারি দলের জন্যেও আখেরে বিপর্যয় ডেকে আনবে।
তিনি বলেন, গণআন্দোলন-গণসংগ্রামের পথে রাজপথে সরকারকে পিছু হটাতে না পারলে ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মেরুদণ্ডসম্পন্ন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকারসহ কিছুই অর্জন করা যাবে না। তিনি বরেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের বর্তমান ধারায় সরকারি দলের পছন্দের বাইরে নির্বাচন কমিশন গঠনের সুযোগ নেই। তিনি বলেন, সরকার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা ছাড়া আইন করে নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্য হবে না।
তিনি বলেন, সরকার রাজপথে বিরোধী দলসমূহের দুর্বলতা ও অনৈক্যের সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে কর্তৃত্ববাদী অগণতান্ত্রিক শাসনের শিকড় কেবল আরও গভীরে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ঝুকি এড়িয়ে ভার্চুয়াল মিটিং আর কেবল মিডিয়াকেন্দ্রীক কর্মসূচির মধ্যে আবদ্ধ থেকে সরকারকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করা যাবে না; দেশ ও দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ রক্ষা করা যাবে না।
তিনি ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে অবাধ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ ধারায় রাজপথে বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহের কার্যকরি আন্দোলন গড়ে তোলারও ডাক দেন। তিনি দেশের বাম প্রগতিশীল শক্তিকে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রামে আরও বলিষ্ঠভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় স্বাধীনতা হলে পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত আহ্বান জানান।
সম্মেলনে পার্টির সাধারণ সম্পাদকের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী। পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আকবর খানের পরিচালনায় এই অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, সজীব সরকার রতন, নির্মল বড়ুয়া মিলন, সিকদার হারুন মাহমুদ, এ্যাপোলো জামালী, ফিরোজ আহমেদ, শহীদুল আলম নান্নু, সাইফুল ইসলাম, জুই চাকমা ও অরবিন্দু বেপারী বিন্দু প্রমুখ।
সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা নিশ্চিত করতে কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে পার্টির নেতাকর্মীদেরকে সাহসী ও উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।
সভার শুরুতে করোনার অতিমারী, রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানার অগ্নিকাণ্ড, দুর্ঘটনাজনীত মৃত্যুসহ এ সময়কালে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য শোক প্রকাশ করে দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।
খাবার বিরতির সম্মেলনের সাংগঠনিক অধিবেশন শুরু হয়।