মঙ্গলবার ● ৫ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » কুষ্টিয়ার ৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৫ শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ
কুষ্টিয়ার ৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৫ শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :: করোনাকালীন সময়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৭৫ জন শিক্ষার্থীর বাল্য বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে দু’টি মাদ্রাসা ও দু’টি হাইস্কুল। দয়রামপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণি থেকে দাখিল পরীক্ষার্থী পর্যন্ত বিয়ে হয়েছে ১৯ জনের। মহেন্দ্রপুর দারুস সুন্নাহ বালিকা আলিম মাদরাসার বিয়ে হয়েছে ২১ জনের। মহেন্দ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৫ জনের এবং চরভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ২২ জনের বিয়ে হয়েছে। এছাড়া দয়ারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীরও বাল্যবিবাহ হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে রফিকুল ইসলাম নামের এক অভিভাবক জানান, করোনার মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে এমন সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন। দেশ কখনো স্বাভাবিক হবে কি না বা বেঁচে থাকবেন কি-না এমন চিন্তা থেকে বিয়ে দিয়েছেন।অপর অভিভাবক মনিরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল। আর কখনো খুলবে কি না তার নিশ্চয়তা ছিল না। তাছাড়া আগে অনেক মেয়েরই ৮ থেকে ৯ বছরেও বিয়ে হয়েছে। কম বয়সে বিয়ে দিলে সমস্যা কি?
মহেন্দ্রপুর দারুস সুন্নাহ বালিকা আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতি দেখে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পেরেছি অনেকের বিয়ে হয়ে গেছে। তবে বিবাহিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকে এখনো নিয়মিত ক্লাস করছে। দয়ারামপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার রাশিদুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেড় বছরের মতো বন্ধ ছিল। এই সময়টাতে অনেকের বাল্যবিবাহ হয়েছে জানতে পেরেছি। তাছাড়া আমাদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে। আমরা কিছু অভিভাবকের সাথে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তারা তাদের মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। মহেন্দ্রপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম খান বলেন, করোনাকালে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে ঝরে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের অনেক মেয়েরই বাল্যবিবাহ হয়েছে যা আমরা প্রতিষ্ঠান খোলার পর জানতে পেরেছি।চরভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ খান বলেন, এলাকার মানুষের মধ্যে শিক্ষার হার কম। আর্থিক অসচ্ছলতা এবং স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ দিয়েছেন অভিভাবক।দয়রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম বলেন, স্কুল খোলার পর জানতে পারি আমাদের প্রতিষ্ঠানের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। জানা গেছে, পারিবারিক অসচ্ছলতা এবং ভালো পাত্র পাওয়ার কারণে বিয়ে দিয়েছে।এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রশিদ জানান, করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকা অবস্থায় বিয়ে হওয়ার কারণে জানতে পারিনি। তবে সংবাদ পেলে তাৎক্ষণিক ইউএনও ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দিয়ে আমরা এমন বিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা করে থাকি। এ ব্যাপাওে ুমারখালী ইউএনও’র বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।