শনিবার ● ৯ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » অপরাধ » মিথ্যা মামলা করে নিজেই এখন জেল হাজতে
মিথ্যা মামলা করে নিজেই এখন জেল হাজতে
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে আপন চাচাতো ভাইদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি মামলা করে রামপাশা ইউনিয়ন বিএনপির নেতা জমির আলী নিজেই এখন জেল হাজতে।
জানা গেছে, উপজেলার পালেরচক গ্রামের মৃত হাজি ইর্শ্বাদ আলীর ছেলে জমির আলী।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১ জুলাই জমির আলী তার চাচাতো ভাই লন্ডন প্রবাসী ছইল মিয়া ও মনছুর মিয়ার বিরুদ্ধে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ নম্বর আমলি আদালতে মামলা করেন।
সিলেটের গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক মামলার তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সেটি মিথ্যা বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এরপর জমির আলী নারাজি দিলে সিআইডির অন্য কর্মকর্তা এসআই রোকেয়া খানম ওই মামলাটি ফের তদন্ত করেন। ২০২১ সালের ২৫ মার্চ তিনিও ওই মামলা মিথ্যা বলে আদালতে প্রতিবেদন দেন।
সেই সঙ্গে জমির আলীকে পেনাল কোডের ২১১ ধারায় অভিযুক্ত করে প্রসিকিউশন দেওয়ার জন্য আদালতের অনুমতি প্রার্থনা করেন। ওইদিনই বিচারক জমির আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিআইডি কর্মকর্তাকে আদেশ দেন।
এরপর এসআই রোকেয়া খানম জমির আলীর বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশে নন জিআর মামলা করেন। গত বুধবার ওই মামলার শুনানির দিন ধার্য থাকলেও আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় জমির আলীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
গত বুধবার রাতে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
পর দিন বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এব্যাপারে কথা হলে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে সিআইডি কর্মকর্তা এসআই রোকেয়া খানম সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশে জমির আলীর বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন ঠিকই, কিন্তু পরে কি হয়েছে তা তার জানা নেই বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথে দুই যুবকের ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ড
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে ৪বছর আগে মারামারি মামলার রায়ের পর উচ্চ-আদালতে আপিল করেন আসামিরা। আপিলের ৪বছর ৫মাস পর আবারও সেই একই রায় দেওয়া হয়।
রায় পুনর্বহালের পর বুধবার (৬ অক্টোবর) সিলেটের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কাওসার আহমদের আদালতে আত্মসমর্পন করেন ৩২৩ ধারার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া যুবক শহিদ মিয়া (৩৯) ও সামছুর রহমান ওরফে সামছুল (২৭)।
ওইদিন বিচারকের নির্দেশে তাদের দু’জনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
অভিযুক্ত শহিদ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সিংগেরকাছ পশ্চিমগাঁওয়ের মৃত শরিফ উল্লাহর ছেলে আর সামছুর রহমান ওরফে সামছুল একই গ্রামের আজমান আলীর ছেলে।
মামলার রায় সূত্রে জানাগেছে, ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট অভিযুক্তদের আপিল মামলাটি খারিজ করে রায় পুনর্বহাল রেখে আবারও ওই দুই যুবকে অভিযুক্ত করে রায় দেন সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া, (ফৌজদারী আপিল মামলা নং ১২৭/২০১৭ইং)।
রায়ে আপীলকারী ওই দু’জনকে আত্মসমর্পনের নির্দেশসহ দন্ডবিধির ৩২৩ ধারার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে ৬মাসের সশ্রম কারাদন্ড এবং ৫০০টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়।
আর ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় অপর আসামি আজমান আলী, আলমাছ আলী, শামীমুর রহমান শামীম, ইউনুছ আলী, আব্দুল মতিন, সুহেল মিয়া, জুয়েল আহমদ, আব্দুল লতিফ, দবির মিয়া ও হাজী আব্দুল মনাফসহ ১০জনকে খালাছ প্রদান করা হয়।
তার আগে ২০১৭ সালের ৫মার্চ সিলেটের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালাত নং ১এর বিজ্ঞ বিচারক কাজী আব্দুল হান্নান ওই দু’জনকে অভিযুক্ত করে একই রায় প্রদান করেছিলেন।
২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর অভিযুক্তদের প্রতিবেশী একই গ্রামের রহমান আলীর ছেলে রকিবুল ইসলাম সাজাপ্রপ্ত ওই দুই যুবকসহ ১২জনকে অভিযুক্ত করে সিলেটের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৪নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন, (বিশ^নাথ জিআর মামলা নং ২৩৫/২০১১ইং)।
এর পাঁচদিন পর আদালতের নির্দেশে ২০ নভেম্বর বিশ^নাথ থানায় সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়, (মামলা নং ২১)। মামলা দায়েরের একমাসের মাথায় ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর থানার তৎকালীন এসআই সালাহ উদ্দিন ১২জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন, (অভিযোগপত্র নং ২২)।
মামলার বাদী রকিবুল ইসলাম রায়ে সন্তুুষ্টি প্রকাশ করে বরেন, গত বুধবার অভিযুক্ত শহিদ ও সামছুল আত্মসমর্পন করলে আদালতের নির্দেশে তাদেরক জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আপিল মামলা খারিজ করে রায় পূনর্বহাল রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।