শনিবার ● ৯ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » শান্তি-চুক্তি ভঙ্গ করে যাচ্ছে চীনের সেনাবাহিনী : ভারতের সেনাপ্রধান
শান্তি-চুক্তি ভঙ্গ করে যাচ্ছে চীনের সেনাবাহিনী : ভারতের সেনাপ্রধান
শান্তি বৈঠক, দুই দেশের সেনা কম্যান্ডারের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনার পরেও পিছু হটেনি চীনের সেনা।অস্থায়ী ছাউনি তুলে নিয়ে গেলেও এখনও পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় নিঃশ্বাস ফেলছে চীনের সেনাবাহিনী। শান্তি-চুক্তি ভঙ্গ করে যাচ্ছে চীনের সেনাবাহিনী, এমনটাই জানালেন ভারতের সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। তাই ভারতও যে এখনই সেনা সরাবে না তাও স্পষ্ট করলেন সেনাপ্রধান।
শনিবার একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান বললেন, “দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনার পরে সেনা সরানো বা ডিসএনগেজমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। চীন ও ভারত উভয় তরফেই সেনাসদস্যরা পিছিয়ে এসেছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, চীনের সেনা ফের সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় ফিরে এসেছে। নতুন করে সেনা মোতায়েন করছে চীন। সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে।সেনাদের থাকার অস্থায়ী ছাউনিও তৈরি হচ্ছে।এর থেকেই স্পষ্ট, এখনই সীমান্ত ছেড়ে যেতে রাজি নয় চীন। ভারতীয় নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ফের অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাতে পারে তারা। তাই সদা সতর্ক থাকতে হচ্ছে ভারতীয় বাহিনীকেও।সীমান্ত আগলে সর্বক্ষণ প্রহরায় রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীও।”
নারাভানে বলছেন, চীন এখনই সেনা সরাতে রাজি না হলে ভারতও পিছু হটতে রাজি নয়। চীনের সেনা নতুন করে রাইফেল ডিভিশন তৈরি করছে, যুদ্ধ-ট্যাঙ্ক নিয়ে আসছে। এর অর্থই হল ফের মুখোমুখি সংঘর্ষের সম্ভাবনা আছে। সেনাপ্রধানের বক্তব্য চীন কোনওরকমভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালালে ভারতীয় সেনাও চুপ থাকবে না। যোগ্য জবাব দেওয়ার মতো প্রস্তুতি ভারতেরও আছে।
লাদাখ সীমান্তে ইতিমধ্যেই সেলফ প্রপেলড হাউইৎজার রেজিমেন্ট পাঠিয়েছে ভারত। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে, লাদাখে পার্বত্য অঞ্চলের ওপর দিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে কে নাইন বজ্র।ওই ট্যাঙ্ক ৫০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। গুজরাতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে ওই ট্যাঙ্কগুলি তৈরি করেছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো।
সামরিক পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠকের পরেও সীমান্ত সমস্যার সমাধানে এসে পৌঁছতে পারেনি ভারত ও চীন। বরং সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে শান্তি বজায় রাখার যে আলোচনা হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে তার মর্যাদা ভেঙেছে চীনই। নতুন করে আগ্রাসনের চেষ্টা দেখিয়েছে তারা। যার কারণে রীতিমতো যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে লাদাখ সীমান্তে। জুলাই মাসেই তাজাকিস্তানে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠকে চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে বৈঠকে সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাতে চীন সম্মতিও দিয়েছিল। সেনাপ্রধান বলছেন, ১৩ বার দুই দেশের মধ্যে সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। গত ৬ মাস ধরে বড়সড় অশান্তির ঘটনা না ঘটলেও খবর পাওয়া গেছে, চীন গোপনে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করে চলেছে ইন্টার্ন ও নর্দার্ন ফ্রন্টে।
ভারতীয় সেনা সূত্র বলছে, চীন যে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে সে সন্দেহ বরাবই ছিল। এর আগেও সেনা সরিয়ে নেওয়ার নাম করে, লাদাখের অন্যান্য স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে নতুন করে সেনা মোতায়েন করতে শুরু করেছিল চীন। সবরকম পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য তৈরি রয়েছে ভারতীয় বাহিনী।