বুধবার ● ১৩ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে টিসিবির ৬’শ কেজি পেঁয়াজ বিক্রির সময় ডিলার ধরা, তেল চিনি ডাল উধাও
ঝিনাইদহে টিসিবির ৬’শ কেজি পেঁয়াজ বিক্রির সময় ডিলার ধরা, তেল চিনি ডাল উধাও
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে টিসিবির ৬০০ কেজি পেঁয়াজস পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে কালীগঞ্জ শহরের থানা রোডে পিকআপসহ ১৪ বস্তা পেঁয়াজ জব্দ করা হয়। অভিযানকালে টিসিবির ডিলার বা পিকআপের চালককে আটক করতে পারেনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভূপালী সরকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পিকআপ ভ্যানে কাউকে না পেয়ে পুলিশের কাছে জব্দকৃত পেঁয়াজ গচ্ছিত রাখা ও নিয়মিত মামলার নির্দেশ দেন। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন পেঁয়াজগুলো টিসিবির ডিলার মৃধা জেনারেল স্টোরের মালিক সরোয়ার হোসেন শিপন মৃধার। তিনি ট্যাগ অফিসারকে না জানিয়ে টিসিবি থেকে পন্য তুলে কালীগঞ্জে নিয়ে আসে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে ডিলার শিপন মৃধা শহরের কাঁচামাল আড়ৎদার ইমা বাণিজ্য ভান্ডারে বিক্রির জন্য ফিরোজ নামের একজনের কাছে পাঠান। কিন্তু তিনি টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে অস্বীকৃতি জানান। টিসিবর পন্য এ সময় অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় জনগন আটক করে পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে খবর দেয়। ইমা বাণিজ্য ভান্ডারের ম্যানেজার ফিরোজ হোসেন জানান, সকালে টিসিবির ডিলার সরোয়ার হোসেন শিপন ফোন করে পেঁয়াজগুলো কিনতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি পিকআপসহ পেঁয়াজ ফেরত পাঠিয়ে দেন। টিসিবির ডিলার সরোয়ার হোসেন শিপন মৃধা জানান, সকালে তিনি পণ্য উত্তোলনের কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছিলেন। পন্য তুলে তিনি বারোবাজার এলাকায় চিনি, তেল ও ডাল বিক্রি করেছেন। পেয়াঁজগুলো সেখানেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার তরুণ কুমার দাস বলেন, সরকারি নিয়ম আছে কোন ডিলার পণ্য উত্তোলন করলে অবশ্যই ট্যাগ অফিসারকে জানাতে হবে। কিন্তু তিনি পণ্য উত্তোলন করলেও তাকে জানান নি। কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভূপালী সরকার জানান, মঙ্গলবার সকালে ঝিনাইদহ থেকে টিসিবির ডিলার মৃধা জেনারেল স্টোরের মালিক সরোয়াার হোসেন শিপন মৃধা ৩০০ কেজি চিনি, ডাল ৩০০ কেজি, তেল ৪০০ লিটার ও ৬০০ কেজি পেয়াজ উত্তোলন করেন। কিন্তু পিকআপে চিনি, ডাল ও তেল পাওয়া যায়নি। ১৪ বস্তায় ৬০০ কেজি পেঁয়াজ পিকআপে ছিল। সেগুলো জব্দ করা হয়েছে জানিয়ে বলেন, টিসিবির পণ্য কেউ এভাবে বিক্রি করতে পারেন না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন জানান, ডিলার সরোয়ার হোসেন শিপন মৃধা পণ্য উত্তোলনের কোন তথ্য জানান নি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়াা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত বছর এপ্রিল মাসে টিসিবির পণ্য রাতের আধারে গোডাউন থেকে সরানোর সময় জনতার হাতে ধরা পড়ে মোবাইল কোর্টে দশ হাজার টাকা জরিমানা ও মুসলেকা দিয়ে রক্ষা পান মৃধা জেনারেল স্টোরে মালিক শিপন মৃধা।
হরিণাকুন্ডুতে উপবৃত্তির নামে টাকা আদায়, নীরব দর্শকের ভুমিকায় শিক্ষা অফিস
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১হাজার থেকে ১৭শ টাকা করে আদায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সেকেন্ডারি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি)-এর আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা পতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির তালিকায় নিয়ে আসা হয়। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফিসহ অন্যান্য ফি মওকুফ থাকবে। নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, উপবৃত্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার অর্থ আদায় করা যাবে না। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান উপবৃত্তির তালিকাভুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ১৭ শ করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা ঘেঁটে ও সরেজমিনে উপজেলার সোনাতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে জানা গেছে, করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে প্রতিষ্ঠান প্রধান শাহাবুদ্দীন ও অফিস সহকারী লোকমান হোসেন মোবাইলে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে ডেকে এনে উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১হাজার থেকে ১৭শ টাকা পর্যন্ত আদায় করেন। ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী এনামুল, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান, তহমিনা, রুশনা খাতুন, মমতাজ, উর্মি একই অভিযোগ করেন। সোনাতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক শরিফুল ইসলাম, মকবুল হোসেন, ছহি উদ্দীন, আব্দুর রশিদ, রইচ উদ্দীন, আনোয়ার হোসেন, নেছারন খাতুন, দাউদ আলীসহ অনেকেই বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে উপবৃত্তি করে দেওয়ার জন্য ১ হাজার থেকে ১৭ শ পর্যন্ত টাকা নিয়েছেন।’ এনামুল, সাইদুর, তহমিনা, রুশনা খাতুন, মমতাজ, উর্মিসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানান, আমাদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী লোকমান হোসেন উপবৃত্তির তালিকায় নাম দিতে ১ হাজার থেকে ১৭শ করে টাকা নিয়েছেন। অফিস সহকারী লোকমান হোসেন টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘ভর্তি এবং সেশন চার্জ বাবদ টাকা নেয়া হয়েছে।’ সোনাতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাবুদ্দীনের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, ‘উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে কোনো টাকা নেওয়ার বিধান নেই।’ যাদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা শিক্ষা অফিসার তসলিমা খাতুন বলেন, এখনো অভিযোগ পাইনি ‘উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে যদি কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধান টাকা নিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহে ১০ বছরের কণ্যা শিশুর মৃত্যু’র রহস্য কি
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চুটলিয়া গ্রামে থেকে ২য় শ্রেনীর স্কুল ছাত্রী রানী খাতুন (১০)’র মৃত্যু নিয়ে ধোয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। শিশুটির বাবার বাড়ির লোকজন বলছেন মারধরের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। আর নানার বাড়ির লোকজন বলছে তার মৃত্যু স্বাভাবিক। জানা গেছে, ২০০৯ সালে শহরের কানঞ্চনপুর গ্রামের আব্দুর রাকিবের সাথে সদর উপজেলার চুটলিয়া গ্রামের ইলিয়াস কাজীর মেয়ে ঝর্না খাতুনের বিয়ে হয়। ২০১৪ সালে পারিবারিক কলহের কারণে তাদের বৈবাহিত সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে রানীর মা তার বাবার বাড়ীতে থাকতো। শিশু রানী বাবা ও নানার বাড়িতে আসা যাওয়া করত। গত ১০ অক্টোবর বাবার বাড়ী থেকে জ্বর নিয়ে চুটলিয়া গ্রামে তার নানা বাড়ীতে রানী। শিশুটির মা ঝর্ণা খাতুন বলেন, রাত ১০ টার দিকে ওর গায়ে জ্বর ছিল। আমি কম্বল গায়ে জড়িয়ে দিয়েছিলাম। রানী টিভি দেখছিল । আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। রাত ২ টার দিকে উঠে দেখি ও বিছানায় নেই। পরে আমার বাবাকে ডেকে বাইরে বের হলে দেখি বাথরুমের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। নানা ইলিয়াস কাজী জানান, আমি ওকে ঘাড়ে তোলার পর ২ টি ঝাকি দিল। তারপর সে মারা গেছে। ওর গায়ে জ্বর ছিল খুব। এদিকে শিশুটির পিতা আব্দুর রাকিব অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে মারধর করেছে। মারধরের কারণেই ও মারা গেছে। জ্বর গলে কেউ কি মারা যায় নাকি। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মো. সোহেল রানা বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে কি কারণে তার মৃত্য হয়েছে ময়না তদন্ত ছাড়া এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।
ঝিনাইদহে অজ্ঞান পার্টির কবলে হাতিম ফার্নিচারের কর্মকর্তা; ৭৫ হাজার টাকা খোয়া
ঝিনাইদহ :: হাতিম ফার্নিচারের ডিএসএম মো. সাইদুর রহমানকে অজ্ঞান করে ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে অজ্ঞান পার্টির দুর্বৃত্তরা। তিনি এখন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। জানা গেছে, কোম্পানির কাজ শেষ করে সাইদুর রহমান মঙ্গলবার রাতে হরিণাকুন্ডু থেকে বাসে ঝিনাইদহে আসছিলেন। পথের মধ্যে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তাকে কিছু খাইয়ে ৭৫ হাজার টাকা ও মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয়। মিমি এন্টারপ্রাইজের একটি বাসে করে তিনি ঝিনাইদহে আসছিলেন। বাসের সুপার ভাইজার রিকো তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। ডাক্তারের ভাষ্যমতে তার জ্ঞান ফিরতে দুই দিন অপেক্ষা করতে হবে। আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে এক সপ্তাহ লগে যেতে পারে পারে।