বুধবার ● ২০ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » বিশ্বনাথে ১৫টি প্রকল্পের কাজ না করে অধিকাংশ হজম
বিশ্বনাথে ১৫টি প্রকল্পের কাজ না করে অধিকাংশ হজম
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন (টিআর) ১৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১৫লাখ ৪৫হাজার টাকা বরাদ্ধ করা হয়েছে।
২০২০-২১অর্থ বছরের উন্নয়ন খাতে ৪র্থ কিস্তির এই প্রকল্প গত জুন মাসে অনুমোদন করা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত ৫মাস সময়েও অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ এখনও করা হয়নি।
বিভিন্ন প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে যে চিত্র পাওয়া যায়, তাতে মনে হচ্ছে, অধিকাংশ প্রকল্পের টাকা কাজ না করে হজম করা হয়েছে।
প্রকল্পগুলোর কাজ না করার খবর চর্তুরদিকে জানাজানি হয়ে গেলে কেউ কেউ কাজ করার তোড়জোড় ও লোকজনকে মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছেন।
খাজাঞ্চী ইউনিয়নের রাজাগঞ্জ বাজার মসজিদের মাঠ উন্নয়ন, বাওনপুর চরেরগাঁও গ্রামের রাস্তা উন্নয়ন, রায়পুর গ্রামের কালভার্টের উভয়মূখে মাটি ভরাট ও ভাটপাড়া গুচ্চগ্রামের বাধ নিমার্ণ প্রকল্পে ১লাখ ৬৮হাজার টাকা বরাদ্ধ হলে কোন কাজ হয়নি। এই প্রকল্পগুলো একই সাথে সংযুক্ত।
বাওনপুর চরের গাঁও গ্রামের পক্ষে উপজেলা প্রশাসনে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে খাজাঞ্চী ইউনিয়নের সংশ্লিষ্টদের দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। প্রকল্পগুলোর তালিকা হাতে নিয়ে প্রকল্পভুক্ত বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ করা হলে অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ হয়নি বলে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
১৫টি প্রকল্প হচ্ছে, ১নং লামাকাজী ইউনিয়নের পরগনা বাজার-আকিলুপুর হতে লিটনের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সিসি পাকাকরণ ১লাখ টাকা, ভূরর্কী মজিদ মিয়ার বাড়ীর সামন হতে বজলু মিয়ার বাড়ীর রাস্তা পর্যন্ত ইট সলিং ৫৫হাজার টাকা, খাজাঞ্চী ইউনিয়নের রাজাগঞ্জ বাজার মসজিদের মাঠ উন্নয়ন ও বাওনপুর চরের গাঁও গ্রামের রাস্তা উন্নয়ন ১লাখ ৮হাজার টাকা, রায়পুর গ্রামের কালভার্টের উভয় মুখে মাটি ভরাট ও ভাটপাড়া গুচ্ছগ্রামের বাধ নির্মাণ ৬০হাজার টাকা, ৩নং অলংকারী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল দল, ক্রিকেট ফেডারেশন ক্লাব, ক্রিকেট এসোসিয়েশন ক্লাব, ফুটবল ফেডারেশন ক্লাব ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা, ছোট খুরমা মেইন সড়ক হতে আব্দুল আজিজ এর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সিসি পাকাকরণ ৯০হাজার টাকা, রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন ১লাখ ৭২হাজার টাকা, রামপাশা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মুন্সিবাড়ীর সামনে কালভার্ট নির্মাণ ২লাখ ৯ হাজার টাকা, আমতৈল কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে মাটি ভরাট ১লাখ টাকা, দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের মাঠ সিসি ঢালাইকরণ ১লাখ ৭৪হাজার টাকা, বিশ্বনাথ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গিয়াস মিয়ার বাড়ীর সামনের রাস্তা ৭২হাজার টাকা, মিরেরচর দৌলতপুর রাস্তা থেকে রিয়াজুল ইসলামের বাড়ীর সামনের রাস্তা উন্নয়ন ৭২হাজার টাকা, মোল্লারগাঁও মাছুমের বাড়ীর রাস্তা সিসি পাকাকরণ ৫০হাজার টাকা, দেওকলস ইউনিয়নের মাইঝগাঁও পূর্বের সিসি ঢালাইয়ের সামনে হইতে কজাকাবাদ সুন্দর আলীর বাড়ীর দক্ষিণের মোড় পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন ১লাখ ১৩হাজার টাকা. দশঘর ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন ১লাখ ২০হাজার টাকা।
এসব প্রকল্পের অনিয়ম, দূর্নীতির বিষয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়ার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন টিআর প্রকল্পের কোন অনিয়ম, দূর্নীতি তদন্তে ধরা পড়লে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফজলু মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন টিআর প্রকল্প প্রজেক্ট কমিটির মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। আমি এই প্রকল্পের কমিটিতে নেই। তবে প্রকল্প দুটির কাজ হয়নি বলে এলাকাবাসী আমাকে জানিয়েছেন।
বিশ্বনাথে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ২নং খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাওনপুর গ্রামের বাসিন্দারা।
গত(১৮ অক্টোবর) সোমবার দুপুরে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন চন্দ্র দাস এর বরাবরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২০২১ইং অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি.আর) সাধারণ কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দকৃত উন্নয়ন খাতের ৪র্থ কিস্তির প্রকল্প তালিকা ৩নং ক্রমিকের প্রকল্প এলাকা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাওনপুর গ্রামে কাজ না করে খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিন অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
বিষয়টি বাওনপুর গ্রামের সর্বস্তরের জনগণ অবগত হওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অনতিবিলম্বে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎকারীর বিরুদ্ধে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন চন্দ্র দাসের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন গ্রামবাসী।