সোমবার ● ২৫ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ঝালকাঠিতে স্বামীর পরকীয়া প্রেমের রাস্তা পরিষ্কার করতে নিজের স্ত্রীকে হত্যা
ঝালকাঠিতে স্বামীর পরকীয়া প্রেমের রাস্তা পরিষ্কার করতে নিজের স্ত্রীকে হত্যা
গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন বশির,ঝালকাঠি :: স্বামীর পরকীয়া প্রেমে বাধা হয়ে দাড়িয়েছিলেন স্ত্রী। তাই স্বামী তার পরকীয়া প্রেমের রাস্তা পরিস্কার করতে নিজের স্ত্রীকেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করলেন । হত্যা করেই স্বামী ক্ষান্ত হননি। মরদেহ একটি ডোবায় ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।ঝালকাঠি এলাকার বেরমহল গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।
উল্লেখ্য, ঝালকাঠিতে পারিবারিক বিরোধের জেরে পারভিন আক্তার নামে (২৫) এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। সদর উপজেলার বেরমহল গ্রামের একটি ডোবা থেকে গত (১৩ অক্টোবর) বুধবার সকালে গৃহবধূর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, নাম প্রকাশে অনেচ্ছুকরা জানায়, বেরমহল গ্রামের মৃত পুলিশ সদস্য আবু হানিফের ছেলে তানজিল হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় চাঁদপুর সদরের কল্যাণদী এলাকার জিন্নাত আলী মোল্লার মেয়ে পারভিন আক্তারের।
তাদের ১৮ মাস বয়সি এক কন্যাসন্তান রয়েছে। এক বছর ধরে স্বামী ও শাশুড়ির সঙ্গে বিরোধ চলছিল গৃহবধূর। অপরদিকে স্বামী তানজিল পাশের বাড়ির এক মেয়ের সাথে পরকীয়ায় মত্ত হয়েছে। এ নিয়ে স্ত্রীর সাথে আগে থেকেই বিরোধ চলছিলো। একদিন স্ত্রী নিজে স্বামী তানজিলকে পাহাড়াদেয় ওৎপেতে থাকে। সেই মেয়ের ঘরে গিয়ে তানজিল পরকীয়া প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিল এসময় স্ত্রী পারভিন বেগম গিয়ে ঐ ঘরে হাজির হয় তাদের সামনে । সেই মেয়ে ও তানজিল মোল্লাকে আপত্তিকর অবস্থায় হাতে নাতে ধরে ফেলে স্ত্রী পারভিন বেগম।
এ ঘটনায় স্বামী তানজিল মোল্লা স্ত্রীকে বেধম প্রহার করে। পরেরদিন পারিবারিক ভাবে উভয়ের কথা মত স্ত্রীর খোরপোষের টাকা দিয়ে খোলা তালাক দেওয়া হয় বলে জানায় তারা। দুঃখে কস্টে বুকফাঁটা কান্না নিয়ে পারভিন আক্তার সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি চাঁদপুরে চলে যান।
প্রায় মাস অতিবাহিত হলে স্বামী তানজিল স্ত্রী পারভিনের কাছে ফোন করে আসতে বলেন। কিন্তু স্ত্রীর বিশ্বাস করতে পারেনি স্বামী তানজিলকে। কিন্তু ইউপি সদস্যের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়ার পর গত (১২অক্টোবর) মঙ্গলবার সকালে তিনি স্বামীর বাড়ির পাশে এক বাড়িতে ওঠেন। ঐদিন স্বামী স্ত্রীর সাথে মনমালিন্ন বিরোধ মিটিয়ে দেয় উক্ত ইউপি সদস্য। দুজনের মধ্যে মিলমহব্বত হওয়ার পথে। রাত ৯টার দিকে খবর পায় তার স্বামী তানজিল মোল্লা পরকীয়া প্রেমিকার কাছে গিয়েছে। স্ত্রী পারভিন বেগমের মাথায় রক্ত উঠে যায়। দৌড়ে দিয়ে প্রেমিকার ঘরে ডুকে দেখতেপায় স্বামীর কর্মকান্ড। স্বামী তানজিল মোল্লা স্ত্রীকে ধমকদিয়ে বলে তুই এখানে এলি কি করে তোকে কে খবর দিয়েছে। স্ত্রী আমাকে খবর দেবে কে আমি নিজেই তোমার কর্মদেখতে এলাম এতদিন বিশ্বাস হয়নি তাই চোখে দেখলাম। তানজিল স্ত্রীর চুলধরে এলোপাথারী বেধম প্রহার করে স্বাসরোধ করে তার মৃত্যু নিশ্চত হলে তারপর লাশ নিয়ে একটি ডোবায় ফেলেদেয়। ঐ সময়ই পালিয়ে যায় ঘাতক স্বামী তানজিল মোল্লা। এঘটনায় ঝালকাঠি সদর থানায় একটি হত্যা মামলা নং ৭ রুজু করা হয়েছে।
এরপর থেকেই নিখোঁজ থাকেন গৃহবধূ। সকালে বাড়ির পাশের একটি ডোবায় লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ এসে ডোবা থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে। পারিবারিক বিরোধের জেরে রাতে পারভিনকে ডেকে নিয়ে তার স্বামী হত্যা করে লাশ ডোবায় ফেলে রাখে বলে ধারণা করছে পুলিশ। গৃহবধূর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে পিটিয়ে ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী তানজিল হাওলাদার পলাতক রয়েছে।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মো.হজরত আলী বলেন, পারভিন হত্যা মামলায় সুলতানা বেগম নামের একজন আটক আছে। প্রধান আসামী তানজিলকে এখনো আটক করা সম্ভব হয়নি। এ হত্যার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা কিছুই পাইনি আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে। তানজিলের সাথে পাশের একটি মেয়ের সাথে পরকীয়া ছিলো আপনাদের নলেজে আসছে কিনা? তিনি বলেন,না এধরনের কিছুই আমরা পাইনি।