বুধবার ● ২৭ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » গুইমারায় ইউপিডিএফের বিক্ষোভ
গুইমারায় ইউপিডিএফের বিক্ষোভ
’ভূমিদস্যু হামলাকারী ও ফ্যাসিস্টদের হাতে জনগণ নিরাপদ নয়’ শ্লোগানে কুমিল্লা, পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) গুইমারায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
আজ বুধবার ২৭ অক্টোবর সকাল ১১টায় ইউপিডিএফের গুইমারা ইউনিট এই বিক্ষোভের আয়োজন করে।
গুইমারা উপজেলার সাইংগুলী পাড়া এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলের পরবর্তী অনুষ্ঠিত সমাবেশে ইউপিডিএফ’র গুইমারা ইউনিটের সংগঠক ঝিমিত চাকমার সভাপতিত্বে ও তানিমং মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জনপ্রতিনিধি: কান্তি ত্রিপুরা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের গুইমারা উপজেলা সহ-সভাপতি লিটন চাকমা।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে বাঙালি-মুসলিম ছাড়াও হিন্দু, বড়ুয়াসহ বিভিন্ন জাতির বসবাস রয়েছে। প্রত্যেক জাতি নিজস্ব ধর্ম, সংস্কৃতি লালন করে থাকে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সংখ্যালঘুরা সম্প্রদায়গুলো তাদের নিজেদের সংস্কৃতি ও ধর্মকর্ম পালনে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রতি বছরই তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবের সময় হামলা, মূর্তি-মন্দির ভাংচুর করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে দুর্গাপূজা মন্ডপে হামলা, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, লুটপাট হয়েছে তা নজিরবিহীন। নোয়াখালী চৌমুহনীর যে মন্দিরটি ’৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারদের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে এবার তাও হামলা-ভাঙচুর থেকে রক্ষা পায়নি। একটি স্বাধীন দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর এমন সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা দেশের জন্য বড়ই লজ্জার!
বক্তারা আরো বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার মুখে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বললেও কার্যত ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। যার কারণে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলাগুলো ঠেকাতে সরকার তেমন কার্যকর কোন উদ্যোগ নেয়নি। সরকার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করলে নিশ্চয় পরপর এভাবে হামলার ঘটনা ঘটতো না। সংখ্যালঘুদের রক্ষায় সরকার পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
বক্তারা দেশের বিচারহীনতার কথা তুলে ধরে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশে এ যাবত অসংখ্য সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু এসব ঘটনার কোনটিরই বিচার হয়নি। উপরন্তু হামলাকারী দুর্বৃত্তরা সরকারের ছাত্রছায়ায় থেকে দিন দিন আরো ক্ষমতাশালী হয়ে উঠছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা শাসন বলবৎ রেখে পাহাড়ি জনগণের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন, ভূমি বেদখল, উচ্ছেদ প্রক্রিয়া অতীতের চেয়ে আরো বেশি জোরদার করা হয়েছে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, মন্দির-ঘরবাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় এনে যথোপযুক্ত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের হামলার ঘটনা না ঘটে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সকল সংখ্যালঘু জাতিসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।