শুক্রবার ● ২৯ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » কৃষি » শীতের শুরুতে ঝিনাইদহে খেঁজুর গাছ তোলার ধুম
শীতের শুরুতে ঝিনাইদহে খেঁজুর গাছ তোলার ধুম
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার সর্বত্র-ই মধু বৃক্ষ খেঁজুর গাছ তোলার ধুম পড়েছে। আর মাত্র কয়েক দিন পরই গ্রাম বাংলার গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধু বৃক্ষকে ঘিরে গ্রামীন জনপদে শুরু হবে এক উৎসব মুখর পরিবেশ। মধু বৃক্ষ থেকে গাছিরা সংগ্রহ করবে সুমিষ্টি খেজুরের রস। তৈরি হবে লোভনীয় গুড় ও পাটালী। রস জ¦ালীয়ে ভিজানো পিঠা ও পায়েস খাওয়ার ধুম পড়বে প্রতিটি গ্রামীন জনপদে। সৃষ্টি হবে গ্রাম বাংলার এক নতুন আমেজের। এক সময় ঝিনাইদহে খেজুরের রস, গুড় ও পাটালী উৎপাদনে প্রসিদ্ধ ছিল। দেশের বাইরে ও এর বেশ কদর রয়েছে। অতীতে এখানকার খেজুর রসের যে যশ ছিল বর্তমানে সে যশ হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রাম বাংলার সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক এ খাতে সরকারী কোন পৃষ্টপোষকতা না থাকায় বর্তমানে আগের মত রস গুড় উৎপাদন হয় না। ইতোমধ্যে শহরের লোকজন গ্রামের গাছ কাটা গাছিদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছে। আবার গাছিদের আগাম টাকা দিচ্ছেন ভাল গুড় ও পাটালী পাবার আশায়। আগাম টাকা পেয়ে অনেক গাছি রস সংগ্রহের উপকরন তৈরি করছেন। কালীগঞ্জ উপজেলার চাঁচড়া গ্রামের গাছি ইউনুছ আলী জানান, এ বছর গাছিরা আগে ভাগেই খেজুর গাছ তোলা শুরু করেছে। এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত শীত জেঁকে না বসলেও গাছিরা খেজুর গাছ তোলা, চাঁচ দেওয়া, দা তৈরি, দড়ি ও মাটির কলস (ভাড়) কেনা, রস জ¦ালানোর স্থান তৈরি করা সহ যাবতীয় কাজ পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে। আসন্ন শীত মৌসুমকে ঘিরে গ্রাম বাংলার চিত্র পাল্টে গেছে। ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার এমন কোন গ্রাম নেই যেখানে কমবেশি খেঁজুর গাছ নেই। এসব গ্রামের গাছিরা খেঁজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ঝিনাইদহে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ৪৯তম শাহাদত বার্ষিকী
ঝিনাইদহ :: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি হামিদুর রহমানের ৪৯তম শাহাদাত বার্ষিকী ২৮ অক্টোবর। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দখালিশপুর গ্রামের এ বীর সন্তান ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই সীমান্তে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহিদ হন। ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হামিদুর রহমানের গ্রাম খর্দ্দখালিশপুর। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে হামিদুর রহমান মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। মৌলভীবাজার জেলার ধলাইতে ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি। কৌশলগত দিক দিয়ে এ ঘাঁটি দখল জরুরি হয়ে পড়ে মুক্তিবাহিনীর জন্য। ২৮ অক্টোবর ধলাই পাকিস্থানী সেনা ঘাঁটি আক্রমণ করে মুক্তিবাহিনী। তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। দুটি মেশিনগান পোস্ট থেকে তুমুল গুলিবর্ষণ করতে থাকে পাকিস্থানী সেনারা। মেশিনগান পোস্ট ধ্বংসের দায়িত্ব পড়ে হামিদুর রহমানের ওপর। এ বীর এগিয়ে যান। ধ্বংস করেন মেশিনগান পোস্ট। মুক্তিবাহিনীর দখলে আসে পাকিস্থানী সেনা ঘাঁটি। শত্রুর গুলিতে তিনি শাহাদত বরণ করেন। তার সহযোদ্ধাগণ মরদেহ ভারতে নিয়ে ত্রিপুরার আমবাশা এলাকায় সমাহিত করেন। ২০০৭ সালে এ বীরের দেহাবশেষ ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয়েছে। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ভাইপো হাফিজুর রহমান সরকারিভাবে শাহাদাত বার্ষিকী পালনের দাবি জানান। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি হামিদুর রহমান সরকারি কলেজের পক্ষ থেকে দিনটি পালনের জন্য আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। সরকারি শহিদ সিপাহি বীরশ্রেস্ট হামিদুর রহমান ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমিনুল হক দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমানের শাহাদতাবার্ষিকী পালনের আহ্বান জানান।