মঙ্গলবার ● ২ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » কালীগঞ্জে মা-মেয়ের ভোটযুদ্ধে তোলপাড়
কালীগঞ্জে মা-মেয়ের ভোটযুদ্ধে তোলপাড়
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: মা-মেয়ের একই বাড়িতে বসবাস, এক পরিবারেই চলে সকল কাজ। কিন্তু ভিন্নতা শুধু ভোটের মাঠে। মা-মেয়ের একই পদের ভোটযুদ্ধে এমন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে। এখানে মায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন মেয়ে। ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৭.৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তারা দুজনেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। মা ও মেয়ের বাড়ি ওই ইউনিয়নের চাপরাইল গ্রামে। তাদের মধ্যে মা হুরজান বেগম বর্তমান ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রয়েছেন। পদটিতে আগামী ২৪ নভেম্বরের নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হয়েছেন। আবার মেয়ে আজিজার খাতুনও মায়ের প্রতিপক্ষ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মা- মেয়ে একই পদের প্রার্থী হলেও কেউ কারও ছাড় দিতে নারাজ। ফলে ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের ভোটযুদ্ধে বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে। মেয়ে আজিজার খাতুন জানান, বিগত নির্বাচনে আমি প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম। মা আমাকে বলেছিলেন পরবর্তী নির্বাচনে মা আমার জন্য ছাড় দেবেন। কিন্তু দেখলাম তফসিল ঘোষণার পর কথা ঠিক না রেখে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ফলে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ বছর আমি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবো। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট ভিক্ষা ও গণসংযোগ করছি। তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র ছিনতাই করার পায়তারা করলে পরে পুলিশের সহযোগিতায় তা জমা দিয়েছি। এদিকে মেয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মা হুরজান বেগম জানান, আমি বর্তমানে ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি রাতদিন সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। আমার ওয়ার্ডের ভোটাররা আমাকে সমর্থন দিয়েছে তাই ভোটে নেমেছি। তিনি দুঃখ করে বলেন, আজ থেকে ২৭ বছর আগে আমি স্বামী পরিত্যক্ত হয়েছি। এরপর একটা ছেলে ও মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। কিন্তু আমার বিপক্ষে মেয়ে প্রার্থী হয়েছে। আত্মীয় স্বজনরা বহুবার বুঝিয়েছে। কিন্তু কারও কথা সে শুনছে না। সেও ভোট ভিক্ষায় নেমে গেছে। আমি সাফ জানিয়ে দিয়েছি ভোটের জন্য আমি প্রস্তুত আছি। সে কারণেই আমি ভোটের জন্য গণসংযোগ করে যাচ্ছি। একই পদে মায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়ে হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে মা হুরজান বেগম জানান, ইউনিয়নের সব মানুষ আমার ভালো চায় না। কিছু মানুষ আমার ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য মেয়েকে আমার প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তবে এখনও চেষ্টা করছি তাকে নির্বাচন থেকে বসিয়ে দেয়ার জন্য। হুরজান বেগমের ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম জানান, একদিকে মা অন্যদিকে বোন একই পদের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এটা নিজের কাছেই খারাপ লাগছে। আমরা প্রথম থেকে দুজনকে নিয়ে বসেছি সমাধানের জন্য। কিন্তু কোনো ফল আসেনি। তারা যার যার সিদ্ধান্তে অটল। আমি মনে করি ভোট করার অধিকার সব নাগরিকদের আছে। জোর করে বসিয়ে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও তাদের মীমাংসার জন্য শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
শৈলকুপায় ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে করোনা টিকার সিরিঞ্জ-ভায়েল
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় বিভিন্ন ভাংড়ির দোকানে মিলছে করোনা ভাইরাসের টিকার ব্যবহৃত সিরিঞ্জ-ভায়েল! কার্টুন কার্টুন সিরিঞ্জ আর ভায়েল এখন ভাঙরির দোকানে দোকানে ঘুরছে। তথ্য অনুসন্ধানে দেখা গেছে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা করোনা ভাইরাসের যে টিকা দেয়া হয়েছে সেসব সিরিঞ্জ আর ভায়েল সহ অন্যান্য টিকার বস্তা বস্তা ভায়েল পুড়িয়ে না ফেলে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে ভাঙরির দোকানগুলোতে। দোকানীরা জানান, হাসপাতালের কর্মচারীরা এসে তাদের দোকানে এসব বিক্রি করে যাচ্ছে। শৈলকুপার কবিরপুরে কবি গোলাম মোস্তফা সড়কে মা ক্রোকারিজ স্টোরে দেখা গেছে ৫ কার্টুনের বেশী করোনা ভাইরাসের ব্যবহৃত সিরিঞ্জ। আরো রয়েছে বিভিন্ন প্রকার টিকার বস্তা বস্তা ভায়েল। এই দোকানটিতে রবিবার দুপুরে হাসপাতালের কর্মচারীরা এসে কার্টুন আর বস্তা ভর্তি সিরিঞ্জ-ভায়েল বিক্রি করেছে। ৪০ টাকা কেজি দরে এসব তারা কিনেছে। ভাঙড়ি দোকানদার আব্দুল মান্নান জানান, তারা ভাংড়ি হিসাবে কিনেছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান বিজন কুমারের দায়িত্ব করোনা ভাইরাসের এসব টিকার সামগ্রী দেখভালের দায়িত্ব। রোগীদের টিকা দেয়ার পর এই টেকনিশিয়ান এসব স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ সামগ্রী পুড়িয়ে না ফেলে পাবলিকের হাতে, ভাঙড়ি দোকানে বিক্রি করে দেন। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসাবে দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, সরকার এসব ব্যবহৃত সামগ্রী ধ্বংস বা পুড়িয়ে ফেলার জন্য তেল পর্যন্ত সরবরাহ করে থাকে অথচ সমস্ত নিয়ম আর বিধি ভঙ্গ করে তিনি এসব বিক্রি করে দিচ্ছেন গোপনে। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে যেসব করোনা টিকার সামগ্রী দেয়া হয়, সেসবের ব্যবহৃত সিরিঞ্জ আর ভায়েলও অরক্ষিত বা বিক্রি করে দেয়া হয়েছে পাবলিকের কাছে। এ ব্যাপারে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান বিজন কুমার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, কার্টুন সহ সিরিঞ্জ বাহিরে যাওয়া বা বিক্রির কোন নিয়ম নেই। তার অধীনে থাকা সিরিঞ্জ-ভায়েল পুড়িয়ে ফেলেছেন। তবে কিভাবে এসব বিক্রি হচ্ছে তা তিনি জানেন না বলে দাবি করছেন। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত ডাক্তার কনক রহমান জানান, বিষয়টির ব্যাপারে দ্রুত খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। এসব সরঞ্জাম কোন অবস্থাতেই পাবলিকের হাতে বা বাহিরে বিক্রির কথা নয়। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদ আল মামুন বলেন, ইপিআই টেকনিশিয়ান বিজনের সাথে কথা হয়েছে এবং যেটি জানতে পেরেছি ইউনিয়নে কর্মরত তিন টেকনিশিয়ান এগুলো জমা দেয়নি। হয়ত সেখান থেকে এসব কিছু ঘটনা ঘটতে পারে।
কালীগঞ্জে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র ছিনতাই করে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে জয়নাল আবেদীন নামে এক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র ছিনতাই করে বেধড়ক মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। তার মুখমন্ডল রক্তাক্ত হয়েছে। তিনি বর্তমানে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ সময় কামরুল নামে সাবেক চেয়ারম্যানের এক সহযোগীকেও মারধর করা হয়েছে। জয়নাল আবেদীন কালীগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের দুঃখী মাহমুদের ছেলে ও ৯নং বারবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। আহত জয়নাল আবেদীন জানান, তিনি আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কালীগঞ্জ উপজেলার ৯নং বারাবাজার ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। সোমবার বিকেলে মোটরসাইকেলে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছিলাম। তিনি অভিযোগ করেন, কালীগঞ্জ উপজেলা গেটের সামনে পৌঁছালে বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে সুমন, সোহাগ, শাহারুল, আরিফসহ কয়েকজন যুবক তাকে গতিরোধ করে। এরপরই বেদম মারধর শুরু করে। এ সময় তারা পকেটে থাকা ১৪ হাজার টাকা ও মনোনয়নপত্রসহ সকল কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বারাবাজার ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নৌকা প্রতিকের প্রর্থী আবুল কালাম অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, আমি বিকালে নিজের মেনায়নপত্র জমা দিয়ে চলে এসেছি। গ্যঞ্জাম হবে বলে কোন শো ডাউন পর্যন্ত করিনি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তিনি বলেন জয়নাল আবেদীন আমাকে জড়িয়ে যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা। কথার বলার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, তবে বিএনপিরা তাকে মারতে পারে। আমার সঙ্গে জয়নালের দেখাই হয়নি। কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা: মাহফুজুর রহমান জানান, এখনো এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো।
ঝিনাইদহে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আন্তঃ জেলা গরু চোর দলের ৭ গরুচোর গ্রেফতার ১৫টি গরু উদ্ধার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে আন্তঃজেলা গরু চোর দলের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৫টি ছোট-বড় গরু উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও ৮টি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। সোমবার সকালে জেলার কালীগঞ্জ থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার। আটককৃতরা হলেন- বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর এলাকার আকুব্বর কাজীর ছেলে উজ্জ্বল কাজী (৩৫), চিতলমারী উপজেলার শ্যামপাড়া এলাকার লিয়াকত আলীর ছেলে সুজন খান (৪২), ফকিরহাট উপজেলার বাহিরদিয়া এলাকার মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে আল আমিন কাজী (২৯), বড় খাজুরা এলাকার মৃত মজিদ শেখের ছেলে শেখ ওহাব (৫০), খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার লক্ষীখোলা গ্রামের আব্দুল্লাহ শেখের ছেলে জিয়া শেখ (৪২), ডুমুরিয়া উপজেলার জিলেরডাঙ্গা এলাকার আজিজ ফকিরের ছেলে সেকেন্দার আলী ফকির (৪৫) ও একই উপজেলার খলসি এলাকার হালিম গাজীর ছেলে রুবেল গাজী (৩৫)। প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ থানায় সম্প্রতি দুটি গরু চুরির ঘটনায় মামলা দায়ের হয়। ঝিনাইদহ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশারের নেতৃত্বে ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ থানা পুলিশের যৌথ টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে রোববার খুলনা ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধারকৃত গরু আদালতের মাধ্যমে মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।