শুক্রবার ● ৫ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে হত্যার পর ডোবায় ফেলে দিয়েছিলো স্বামী
শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে হত্যার পর ডোবায় ফেলে দিয়েছিলো স্বামী
গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন বশির,ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: গত ১৩ অক্টোবর বুধবার ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেরমহল গ্রামে স্বামীর বাড়ীর পাশের একটি ডোবা থেকে গৃহবধূ পারভীন আক্তারের (২৪) মরদেহ উদ্ধার করেছিরো থানা পুলিশ। সেদিন থেকেই পারভীনের স্বামী তানজিল হাওলাদার (২৬) পলাতক ছিলো। পরদিন ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠি সদর থানায় ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় মামলা নং ৭ রুজু হয়।
মামলাটি দ্বায়েরের ১৮ দিন পরে ২ নভেম্বর মঙ্গলবার পারভীন হত্যার মূল আসামী স্বামী তানজিল হাওলাদারকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্তÍ বিভাগ (সিআইডি)। ৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার আসামীকে ঝালকাঠিতে এনে আদালতে তোলাহয়। জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক ইমরানুর রহমান আসামী তানজিলকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থেকে আসামী তানজিলকে গ্রেফতার করে ঝালকাঠিতে আনা এবং আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানোর বিষয়টি জানিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৯ টায় প্রেস ব্রিফিং করেছে ঝালকাঠি জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্তÍ বিভাগ (সিআইডি) এর সহকারী পুলিশ সুপার অরিত সরকার। তিনি একটি লিখিত বার্তায় আসামীর স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেরমহল গ্রামের মৃত আবু হানিফ হাওলাদারের ছেলে তানজিল হাওলাদার চলতি বছরের ১২ অক্টোবর রাত সারে ১০ টায় স্ত্রী পারভীন আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গোপন করে ঢাকা পালিয়ে যায়। পরিকল্পিত ভাবে স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করে হত্যা কার্যের লোমহর্ষক বর্ননা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ পরিদর্শক মোঃ শাহদাৎ হোসেনসহ ঝালকাঠির সিআইডি টিম ঢাকা সিআইডি টিমের সহায়তায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে মামলার ১৮ দিনের মধ্যে তানজিলকে কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঝালকাঠি সিআইডির উপ পরিদর্শক মোঃ শাহদাৎ হোসেন জানান, আড়াই বছর আগে চাঁদপুর সদর উপজেলার জিন্নাত আলী মোল্লার মেয়ে পারভীন আক্তারের সঙ্গে ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেরমহল গ্রামের মৃত আবু হানিফ হাওলাদারের ছেলে তানজিল হাওলাদারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১ বছর ৮ মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত এক বছর ধরে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বিরোধ চলছিল পারভীনের। জানা যায়, পারভীনের স্বামী তানজিল হাওলাদার এবং শাশুড়ি সুলতানা বেগম প্রায়ই তাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করতো এবং বাড়ি থেকে বের করে দিতো। গত ৯ অক্টোবর পারভীন শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় তার মায়ের কাছে চলে যায়। এরপর পারভীন জানতে পারেন যে, তার স্বামী তাকে তালাক দিয়েছেন। এ ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য সে ঝালকাঠি এসে স্বামীর বাড়ির পাশের একটি বাড়িতে ওঠেন। এরপর ১৩ অক্টোবর রাতে পারভীনের ফোনে কল দিয়ে তাকে বাইরে যেতে বলেন তানজিল। সে সময় বাড়ির পাশের খালি জায়গায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পারভীনকে গলাটিপে হত্যা করে মরদেহ ডোবায় ফেলে পালিয়ে যায় তানজিল।