রবিবার ● ৭ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মাইসছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী সাজাই জনপ্রিয়তার শীর্ষে
মাইসছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী সাজাই জনপ্রিয়তার শীর্ষে
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪নং মাইসছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে তৃতীয় বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান সাজাই মারমা।
রবিবার ৭ নভেম্বর সরেজমিনে এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করে এ চিত্র পরিলক্ষিত হয়।
পূর্ব থেকেই জনসেবার কারণে সাধারণ মানুষের কাছে তিনি অত্যন্ত আস্থাভাজন ব্যক্তি হিসেবে সু-পরিচিতি রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন এ রাজনীতিবিদ।
সাধ্য অনুযায়ী সাহায্য করেছেন সাধারণ মানুষকে। ঘূর্ণিঝড় ও মহামারী করোনায় পাশে ছিলেন সাধারণ মানুষের। তিনি নিজেকে মানুষের সেবায় উৎসর্গ করে দিতে চান।
এলাকার স্থানীয় পাহাড়ী-বাঙালীরা বলেন, তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সবসময় সকল বিপদে আপদে জনসাধারণের পাশে এগিয়ে আসেন। রাত-দিন যখনই চাই আমরা তাকে পাশে পাই।
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পাহাড়ী-বাঙালী দলমত নির্বিশেষে উন্নয়নের স্বার্থে সমাজসেবক সাজাই মারমাকে চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান এলাকাবাসী।
বর্তমান চেয়ারম্যান সাজাই মারমা বলেন, ১৯৯১ইং সালে ১নং ওয়ার্ড মেম্বার থাকা অবস্থায় দুই বৎসর ভারপ্রপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। ১৯৯৭, ২০০৩ ও ২০১৬সালে জনগণ আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করায় জনগনের সেবায় নিয়েজিত থেকে এলাকার উন্নয়নের সুযোগ পেয়েছি। এবারও জনগণ চতুর্থবারের মতো আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করলে ২০১৮সালে ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের ব্যাংককে সরকারি সফরে উন্নয়নমূলক কাজের ধারণা পাওয়ার সুযোগ পেয়ে এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমার ৪নং মাইসছড়ি ইউনিয়নকে একটি উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিণত করবো।
তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন এলাকাবাসীর সেবা করা।এলাকার বিভিন্ন সমাজ উন্নয়ন জনহিতকর কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখে সুখে দুঃখে পাশে থাকতে আবারও এলাকাবাসীর সমর্থন চাই।
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবারোও ৪নং মাইসছড়ি ইউনিয়নের প্রার্থী হয়েছি। এ পর্যন্ত জনগন আমাকে তিন তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত করায় আমার কার্যকালে মাইসছড়ি ইউনিয়নে পাহাড়ি-বাঙালী সম্প্রীতি বজায় রেখে উন্নয়ন মূলক কাজ করে এসেছি। আগামীতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে পাহাড়ি-বাঙালীকে সাথে নিয়ে সাম্প্রদায়িকতার উর্ধ্বে থেকে সম্প্রীতির বন্ধন বজায় রেখে উন্নয়ন মূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখবো। এজন্য আপনাদের সবার দোয়া-আশির্বাদ ও ভালোবাসাপূর্ণ সমর্থন একান্তভাবে কামনা করছি।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালার মেরুং এ জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রতন, নৌকার মাঝি লাকীকে নিয়ে বিব্রত তৃণমূল
খাগড়াছড়ি :: খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ১নং মেরুং ইউনিয়নে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা বর্তমান চেয়ারম্যান রতনকে বাদ দিয়ে মাহমুদা বেগম লাকীকে নৌকার মাঝি হিসেবে মনোনয়ন দেয়ায় দলের হয়ে কাজ করতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
ত্যাগী ও আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় নেতাকে নৌকার মাঝি না করায় তৃণমূলে বিরাজ করছে ক্ষোভ ও হতাশা।
জানা যায়, তৃণমুল নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের সর্বসম্মতিক্রমে ১নং সিরিয়ালে মোঃ রহমান কবির রতনের নাম থাকলেও তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি৷
বৃহত্তর ১নং মেরুং ইউনিয়নে তৃনমূল ও প্রার্থীদের সমর্থনে ১নং সিরিয়ালে নাম থাকা বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ রহমান কবির রতনকে পেছনে ফেলে ৪নং সিরিয়ালে নাম থাকা একমাত্র নারী প্রার্থী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম লাকী ১নং মেরুং ইউনিয়নে নৌকার মাঝি হয়েছেন। এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
এবিষয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৮অক্টোবর)বেলা ১২টায় মেরুং ইউনিয়ন(দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মেরুং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদা বেগম লাকীর বিরুদ্ধে এক অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ রহমান কবির রতন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, বিগত ২বার মেরুং ইউপি নির্বাচনে ২০১২সালে মেম্বার পদে ও ২০১৬সালে এ ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে সদস্য পদে নির্বাচন করে প্রতিবারই জামানত খুইয়েছেন মাহমুদা বেগম লাকী।
দীঘিনালা ১নং মেরুং ইউনিয়ন(দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুর রশীদ বলেন, মেরুং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দল থেকে মাহমুদা বেগম লাকীকে নৌকা প্রতীকে নমিনেশন দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমার অনেক নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের আমি অনেকভাবে বুঝানোর চেষ্টা করেছি তারা কোনভাবেই রতন চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়ে মাহমুদা বেগম লাকীকে চেয়ারম্যান হিসেবে প্রত্যাশা করছে না। তাছাড়া বিএনপি ও অপরাপর সংগঠনের কর্মীরাও নৌকায় ভোট দিতে নারাজ। কারণ হিসেবে অধিকাংশ জনসাধারণের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বর্তমান চেয়ারম্যান রহমান কবির রতনের কোন বিকল্প নেই। মেরুং ইউনিয়ন একটি বিশাল এলাকা নিয়ে এর পরিধি। এ এলাকাটি অত্যন্ত দূর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় সর্বদা সংঘাত ও ঘটনা-দূর্ঘটনা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। রতন চেয়ারম্যান তার সময়কালে গোটা এলাকায় যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাৎক্ষণিকভাবে ছুটে গিয়ে সমস্যার সমাধান দিয়ে এসেছেন।
বিশাল এক ইউনিয়ন (উপজেলা সমতুল্য এরিয়া) ঘটনা-দুর্ঘটনায় ছুটে গিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা একজন নারী চেয়ারম্যানের পক্ষে আদৌ সম্ভবপর নয় বলে এলাকাবাসীর ধারণা।
মেরুং(দক্ষিণ) যুবলীগের সভাপতি হাজী ইলিয়াস কাওসার বলেন, দলের ত্যাগী নেতা মো.রহমান কবির রতনের নাম তৃণমূলের তালিকার ১নং সিরিয়ালে থাকা সত্বেও জনসমর্থনহীন তৃণমূলের ৪নং সিরিয়ালে নাম থাকা মাহমুদা বেগম লাকীকে দলের টিকেট দেয়ায় এলাকাবাসী হতবাক। এ নিয়ে আমরা আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সাথে গত বৃহস্পতিবার(০৪ নভেম্বর) বৈঠক করেছি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে জনসমর্থনহীন দলের টিকেট প্রাপ্ত লাকীর পক্ষে কাজ করলে তৃতীয় পক্ষ সুবিধাজনক অবস্থায় থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া সুনিশ্চিত। টিকেট দেয়ার পর নৌকার মাঝি লাকীকে আজ পর্যন্ত কোনো এলাকায় যেতে দেখা যায়নি, তিনি নৌকার মাঝি হিসেবে মহিলা হওয়ায় কোনো এলাকায় স্বাচ্ছন্দে বিচরণ করতে পারছেন না। তাছাড়া এলাকায় তার তেমন কোন জনসমর্থন নেই। এসকল কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এলাকায় অসম্ভব জনপ্রিয় রহমান কবির রতন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক যুনলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমাদেরই দলের লোক আমরা সকলে একযোগে তার পক্ষেই কাজ করবো। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কোনো কারণে ভূল বুঝে থাকলেও আমরাই এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে অধিকতর অবগত। আমরা কোনো ভুল সিদ্ধান্ত ও কাজ করে আমাদের মাঝ থেকে চেয়ারম্যান না হয়ে তৃতীয় পক্ষের কেউ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোক তা মোটেও কাম্য নয়।
নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে দীঘিনালা ১নং মেরুং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত নৌকার মাঝি মাহমুদা বেগম লাকীর সাথে মোবাইলে কথা বলার চেষ্টা করলেও তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায় নি।