মঙ্গলবার ● ৯ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » লোক সঙ্গীত শিল্পী খোরশেদ আলম বয়াতি আর নেই
লোক সঙ্গীত শিল্পী খোরশেদ আলম বয়াতি আর নেই
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ :: বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের জনপ্রিয় লোক সঙ্গীত শিল্পী খোরশেদ আলম বয়াতি আর নেই। তিনি সোমবার ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে বেলা দুইটার দিকে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রেখে গেছেন। সোমবার বিকালে শেষ ইচ্ছানুযায়ী হরিণাকুন্ডু উপজেলার যাদবপুর গ্রামে তাকে দাফন করা হয়। ছেলে সোহরাব আলম জানান, তার পিতা এর আগে দুইবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। অর্থের অভাব থাকায় তারা উন্নত চিকিৎসা করাতে পারেননি। খোরশেদ আলম বয়াতি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি এপার বাংলা ও ওপার বাংলায় পালা গানের জননন্দিত শিল্পী ছিলেন। বাংলাদেশের প্রখ্যাত লোক সঙ্গীত শিল্পী সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমসহ অসংখ্য পালাগানের শিল্পীর ওস্তাদ ছিলেন খোরশেদ বয়াতি। তার হাত ধরেই দেশে অনেক শিল্পী আজ প্রতিষ্ঠিত ও দেশে বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। লোক সঙ্গীতে বিশেষ অবদান রাখায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী খোরশেদ বয়াতিকে বিশেষ পদকে ভুষিত করেন। গ্রামাঞ্চলে পালাগানে তার জুড়ি মেলা ভার। প্রখ্যাত এই সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে ঝিনাইদহ জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুতে ঝিনাইদহ জেলা কালচারাল অফিসার জসিম উদ্দীন, সম্মিলিত সাংস্কৃতি জোটের সভাপতি একরামুল হক লিকু, বাউল সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, জাহিদুল ইসলাম, শিল্পকলা একাডেমীর সদস্য অশোক ধর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শান্ত জোয়ারদার, নাজিম উদ্দীন জুলিয়াস, রাজু আহম্মেদ মিজান, শাহিনুর আলম লিটন, বাবুল আক্তার লাল্টু, গন শিল্পীর আব্দুস সালাম, উদিচির দিলিপ ঘোষ, সঙ্গীত শিল্পী জাকির হাসান রুমি, অজয় দাস, রুবেল পারভেজ, তারেক হাসান পল্লব ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির নাট্য প্রশিক্ষক শামিম আহম্মেদসহ নাট্যকার, সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার ও গীতিকাররা শোক প্রকাশ করেছেন।
২০১২ সালে অবসর; তারপরও চেয়ার ছাড়েনি ঝিনাইদহের বিএডিসি অফিসের মধুসুদন
ঝিনাইদ :: ২০১২ সালে অবসার নিয়েছেন মধুসুদন নামে এক সরকারী কর্মচারী। কিন্তু অবসরের ৯ বছর পার হলেও তিনি চেয়ার ছাড়েননি। বহাল তবিয়তে সরকারী চেয়ারে বসে কাজ করে যাচ্ছেন। নিচ্ছেন মানুষের কাছ থেকে ঘুষের টাকা। এমন চিত্রি ঝিনাইদহ সদর উপজেলা বিএডিসির ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প অফিসে। জনবল সংকটের কারণে অফিসটিতে হ য ব র ল অবস্থা চলছে। তবে মধু সুদন বলছেন, তার পদে কোন লোক নেই। তিনি ভালো বোঝেন বলেই তাকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কৃষি খামারে সেচ পাম্প স্থাপন করতে হলে অনুমোদন লাগে উপজেলা সেচ কমিটির ও বিএডিসি ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প অফিসের। এই অনুমোদন নিতে চা খরচা দিতে হয় এই অফিসের কর্মচারীদের। আইন অনুযায়ী নূন্যতম ৩০০ ফিট দুরত্বে আরেকটি সেচ পাম্প স্থাপন করা যাবে। অফিসে গিয়ে দেখা যায় ঝিনাইদহ বিএডিসির উপ সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে ৯ বছর আগে অবসরে যাওয়া মধু সূদন বাবু পোড়াহাটি ইউনিয়নের একটি নতুন আবেদন নিয়ে নাড়া-চাড়া করছেন। টাকা নিয়ে দর কষাকষি হচ্ছে। এই সময়ে সাংবাদিকদের উপস্থিতি পেয়ে প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে অন্য গল্প শুরু করেন। মধুসুদন সাংবাদিকদের জানান, তিনি ২০১২ সালের অবসর নিয়েছেন। কিন্তু আজও তিনি সেচ্ছাশ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। ভালো কাজ বোঝেন বলে অফিস তাকে রেখে দিয়েছে। তবে এই কাজ করার জন্য অফিস থেকে কোন টাকা পান না। তিনি বেতন ভাতা না পেলেও বাড়তি কিছু সুযোগ সুবিধা পান বলেই আজও কাজ করে যাচ্ছেন। অবসরের পরও কি ভাবে কাজ করেন এমন প্রশ্নের তিনি কোন উত্তর দিতে পারেন নি। অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ শাহজালাল আবেদিন জানান, জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে প্রতি মাসে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিচ্ছি কিন্তু নতুন কাউকে নিয়োগ দিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অফিস চালানোর জন্য মধু সূদন বাবুকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম শাহীন বলেন, তিনি ২০১২ সালে অবসর নিয়েছেন আমি তো জানিই না। কিভাবে এখনও কাজ করছেন সেটাও জানিনা। তবে বিষয়টি আমি দেখছি।