রবিবার ● ১৪ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ঢাকা বিভাগ » ২৬ নভেম্বর শ্রমিকনেতা কমরেড গোলাম ইয়াজদানী খান মিনু’র স্মরণ
২৬ নভেম্বর শ্রমিকনেতা কমরেড গোলাম ইয়াজদানী খান মিনু’র স্মরণ
প্রখ্যাত শ্রমিকনেতা কমরেড গোলাম ইয়াজদানী খান মিনুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২৬ নভেম্বর বিকেলে চাষাঢ়াস্থ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
স্মরণ সভা উদযাপন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভাতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো’র সদস্য জননেতা কমরেড আবু হাসান টিপু বলেছেন, গোলাম ইয়াজদানী খান মিনু তার কিশোর কাল থেকেই পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাথে যুক্ত থেকে প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এম এল) বিভক্ত হলে সুখেন্দু দস্তিদার ও মোহাম্মদ তোয়াহার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কমরেড মিনু তাঁর নিজের অবস্থান ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের পর সুখেন্দু দস্তিদার ও মোহাম্মদ তোয়াহা সাম্যবাদী দল গঠন করলে তিনি সাম্যবাদী দলের সাথে যুক্ত হন। এবং এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৬ সালে কমিউনিস্ট লীগ ও ১৯৯২ সালে তিন পার্টির ঐক্যের মধ্যোদিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠন প্রক্রিয়াতেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
আবু হাসান টিপু আরও বলেন, এ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির লেজুড়বৃত্তির সুবিধাবাদী নেতৃত্ব যখন মৌলবাদ বিরোধী সংগ্রামের কথা বলে পার্টিকে আওয়ামী লীগের লেজুড়ে পরিণত করলো, যখন বাম ফ্রন্ট ও ১১ দলকে ছত্রভঙ্গ করে আওয়ামী লীগের সাথে আন্দোলন, নির্বাচন ও সরকার গঠনের লক্ষ্যে তথাকথিত ২৩ দফার ভিত্তিতে প্রথমে ১৪ দলীয় জোট ও পরবর্তীতে স্বৈরতন্ত্রী এরশাদের জাতীয় পার্টি ও মৌলবাদী খেলাফত মজলিশসহ শাসকশ্রেণীর যাবতীয় জঞ্জালের সঙ্গে একাকার হয়ে গিয়ে ক্ষমতার ছিটেফোটা বখরা পাওয়ার মোহে মহাজোটে সামীল হয়ে নৌকায় উঠে বসার পরিকল্পনায় ব্যস্ত হয়ে উঠলো তখন অনিবার্যভাবেই পার্টি ও বামপন্থী আন্দোলনের এই অন্তর্ঘাতমূলক বিলোপবাদী প্রবণতা ও ধারার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পার্টি ও বিপ্লবী বামপন্থী আন্দোলন পুনর্গঠন ও বিকশিত করার কাজকে এগিয়ে নিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি গঠনের ঐতিহাসিক যৌক্তিকতা, তাৎপর্য ও গুরুত্ব পরিলক্ষিত হয়। ফলস্বরূপ ২০০৪ এর ১৪ জুন বিপ্লবী রাজনীতি ও বিপ্লবী সত্তা রক্ষায় কেন্দ্র থেকে শুরু করে সারাদেশেই পার্টি পুনর্গঠনের যাত্রা শুরু হয়। বিপ্লবী ভাবমানস স¤পন্ন পার্টির নিবেদিত প্রাণ নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ে নারায়ণগঞ্জেও গড়ে ঊঠে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (পুনর্গঠন কমিটি) যা আজকের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। নারায়ণগঞ্জে পার্টি গড়ে তোলার এ পর্যায়েরও অন্যতম সিপাহশালার ছিলেন কমরেড মিনু। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি গঠিত হলে তিনি ২০০৮ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত একটানা ১০ বছর নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বলেন শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০০৭ এর পর থেকে কমরেড মিনু দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে না পারলেও মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাথে থেকেই বিপ্লবী ধারার মার্কসবাদী লেনিনবাদী একটি পার্টি গড়ে তোলার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। নারায়ণগঞ্জের অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হয়েও কমরেড মিনু তাঁর ব্যক্তিগত জীবন যাপন করে গেছেন একান্তই সাধারণের চাইতেও সাধারণ মানুষের মতো।
আজ সকালে পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শ্রমিকনেতা মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এসভাতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান সহিদুল আলম নাননু, নারীনেত্রী রাশিদা বেগম, মোক্তার হোসেন, রোকসানা বেগম, আবুল হোসেন প্রমূখ।