বুধবার ● ১৭ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কুদ্দুস এখন ভিক্ষুক
মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কুদ্দুস এখন ভিক্ষুক
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: বর্তমানে ঝিনাইদহে সরকারী আবাসনে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কুদ্দুসের এখন সংসার চলে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে। মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কুদ্দুস মুত্যু আব্দুস সামাদ খাঁনের প্রথম সন্তান। ঝিনাইদহ শহরের মুজিব চত্তর এলাকায় দেখা হল সেই মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কুদ্দুসের সাথে কথা হল অনেক। কথা বললেন কেঁদে কেঁদে। তিনি বললেন তিনি মাগুরা শ্রিপুরের ৮নং সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন। বিকাশে ১০ হাজার টাকা ও নগদ পনের হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে তার সমস্ত কাগজাদি ঢাকার মুক্তিযোদ্ধা হেড অফিসে (খুলনা বিভাগ এরিয়া) আটকে রেখেছেন চাঁন মিয়া নামক এক কর্মকর্তা মর্মে অভিযোগ করেন গোলাম কুদ্দুস। সেকারনে তার মুক্তিযোদ্ধা সনদও মেলেনি আজো অব্দি। ঝিনাইদহের শৈলকুপায় যুদ্ধ করে রাজাকার ও মিলিটারিদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছিলেন ৫৭টি অস্ত্র। সেই মহান মুক্তিযোদ্ধা হয়েও আজ তিনি ভিক্ষুক। গোলাম কুদ্দুস ১২টি সন্তানের পিতা। ৬টি সন্তানের মুত্যু হয়েছে। এখনো বেঁচে আছে ৬টি সন্তান। মুক্তিযোদ্ধাকালীন গোলাম কুদ্দুসের বাড়ি ছিল মাগুরার শ্রিপুর থানার সোন গাছা গ্রামে। নিকটাত্মীয়রা তার বাড়ি সম্পত্তি দখলের পর গোলাম কুদ্দুস জীবন বাঁচাতে আশ্রয় নেন বেনাপোল বর্ডারের শার্শা থানার কাগজ পুকুর গ্রামে। পরে যশোর ঝিকোড় গাছা গাজির দরগার পাশে বসবাসের পর চলে আসেন মাগুরা গোপিনাথপুর গ্রামে। সর্বশেষ তিনি ঝিনাইদহ সদরের চাপড়ি মদুপুরের এলাকার সরকারী আবাসনে প্রতিবন্ধি স্ত্রীর সাথে বসবাস করেন। মুক্তিযোদ্ধাকালীন গোলাম কুদ্দুসের বয়স ছিল ২৭ বছর। এখন তার বয়স প্রায় ৮০ বছর। তিনি এখন বেশ অসুস্থ্য। প্রতিদিন তার ৬০ টাকার ঔষধ কিনতে হয়। সেসময় গোলাম কুদ্দুসের ভাতিজা গফুর সাহেব ছিলেন রাষ্ট্রপতি এরশাদ সাহেবের প্রধান বডিগার্ড বলে জানান এই মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কুদ্দুস। তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের কাছে তার মুক্তিযোদ্ধার সনদ ও ঢাকায় হেড অফিসে আটকে রাখা মুক্তিযুদ্ধের কাগজাদি ফেরতের দাবী করেন। মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কুদ্দুসের মুঠোফোন নম্বর- ০১৯৬১-৬১৫১৩২।
টানা বর্ষণে মহেশপুরে ১৯ হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা
ঝিনাইদহ :: নিন্মচাপ ও তিনদিনের টানা বর্ষণে প্রায় ১৯ হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা। এতে এলাকার কৃষকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। অবিরাম বর্ষণের কারণে উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার নিচু জমির পাকা ও কাটা ধান পানিতে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কৃষকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের কার্যালয়ের তথ্যমতে, ফতেপুর, নিমতলা, ভৈরবা, বাঁশবাড়িয়া, বেলেমাঠ, নাটিমা, মান্দারবাড়িয়া, আজমপুর, শ্যামকুড়, স্বরুপপুর, যাদবপুর, পান্তাপাড়া, কাজীরবেড়, নেপা, সুন্দরপুর, পাথরা গ্রামের উঠতি আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকরা জানায়। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কানাইডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়,আমন খেতে বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। অনেক কৃষক তাঁদের ফসল বাঁচাতে খেত থেকে ধান কাটা শুরু করেছে। কৃষক মেহের আলী বলেন, মাঠে ধান কাটা রয়েছে অনেক ধান কলিয়ে গেছে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে তাঁদের খেতের আমন চারা মাটিতে পড়েছে। এখনো ফসলের খেতের অনেক স্থানে পানি জমে রয়েছে। উপজেলার মুন্ডুমালা গ্রামের নাজমুল হুদা জানান,আমনের খেতে পাকা,আধা পাকা ধানগাছ নুয়ে মাটিতে পড়ে আছে। খেতে পানি জমে রয়েছে। এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, উপজেলায় এবার আমনের চাষ হয়েছে ১৮ হাজার ১শ ৬৫ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে ৩০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে, কিছু ক্ষতি হতে পারে।
বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় কোটচাঁদপুরে আ.লীগের ১৭জন নেতা ও সদস্যকে দল থেকে বহিস্কার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর (নৌকা মার্কা) বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৭জন নেতা ও সদস্যকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। বুধবার বিকালে কোটচাঁদপুর উপজেলা আওয়ামীলীরে সভাপতি শরিফুননেছা মিকি এবং সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান আলীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বহিস্কারের বিষয় সাংবাদিকদের জানানো হয়। আগামী ২৮ নভেম্বর কোটচাঁদপুরের ইউপি নির্বাচন। এ নির্বাচনে ১১ নভেম্বর ছিলো প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। কিন্তু বহিস্কৃত ১৭জন তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। ফলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে এনে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। বহিস্কৃতরা হলেন-১নং সাফদারপুর ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়ন কৃষকলীগের সহ-সম্পাদক তাফসিরুজ্জামান তপন, উপজেলা ছাত্রলীগ সদস্য হিরণ খান, ২নং দোড়া ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল জলিল বিশ্বাস, উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ন আহ্বায়ক আশরাফুল আলম, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শামিম আরা হ্যাপি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির হোসেন মিঠু। ৩নং কুশনা ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়ন আওয়মীলীগের সদস্য আতিয়ার রহমান, ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি আবদুর রশিদ, ইউনিয়ন আওয়ামী মৎস্যজীবি লীগের সভাপতি রওশন মালিতা, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম কিবরিয়া বিপ্লব, ৪নং বলুহর ইউনিয়ন থেকে উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক শাহাজাহান আলী, উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ন-আহ্বায়ক রফিউদ্দীন মল্লিক, উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক শফিকুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নজরুল ইসলাম নজু। ৫নং এলাঙ্গী ইউনিয়ন থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষায়ক সম্পাদক আজিজুর রহমান মানিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষায়ক সম্পাদক বদরুজ্জোহা লাবু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষায়ক সম্পাদক মজনুর রহমান।
মন্দিরের জমি দখলের অপবাদ দিয়ে
সম্প্রীতি বিনষ্টের পাঁয়তারা
ঝিনাইদহ :: আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গ্রামাঞ্চলে ভিলেজ পলিটিক্স এখন তুঙ্গে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা একে অপরকে ঘায়েল করতে সাজানো হচ্ছে নানা রকমের কেচ্ছা কাহিনী। সোসাল মিডিয়া ও অনলাইনেও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এ সব গুজব আর অসত্য খবরগুলো। হরিণাকুন্ডুর রঘুনাথপুরে প্রার্থীর সমর্থকের বিরুদ্ধে এক নারী কর্মীকে ধর্ষনের অভিযোগ মামলা ও সুদ কারবারীদের পক্ষে বিপক্ষে ইউপি সদস্য প্রার্থীর এ ধরণের নোংরামো ঝড় তুলেছে। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এবার সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নে জঘন্যভাবে সম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এ সব করা হচ্ছে আসন্ন ইউপি পরিষদ নির্বাচনকে সামনে করে। ২০০৮ সালে নির্মিত মার্কেটটি কালীমন্দিরের জমিতে প্রতিষ্ঠিত বলে ধোপাবিলা গ্রামের একটি মহল নানা ভাবে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আমজাদ হোসেন ২০০৮ সালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু কনক কান্তি দাস ও এসিল্যান্ডের অনুমতি নিয়ে রাস্তার পাশের জমিতে বিধি মোতাবেক মার্কেট নির্মান করেন। এই জমির সঙ্গে তার আরো ৫৭ শতক জমি রয়েছে। জমির সামনের পতিত জমি তারই ভোগ দখল করার নিয়ম রয়েছে। সেই হিসেবে তিনি মার্কেটটি নির্মান করেন। মার্কেটের জমি থেকে ধোপাবিলা গ্রামের কালীমন্দির দুই’শ গজ দুরে থাকার পরও আমজাদ হোসেনকে বিপাকে ফেলা ও এলাকায় সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে প্রতিপক্ষরা। ধোপাবিলা গ্রামের কালীমন্দিরের দায়িত্বে থাকা অচিন্ত কুমার মজুমদার বলেন, মার্কেটটি কোন ভাবেই কালীমন্দিরের জায়গায় নয়। যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা এলাকার শান্তি বিনষ্ট করতে চাই। মন্দিরের সাংগঠনিক সম্পাদক উত্তম কুমার মজুদমদার বলেন, আমজাদ মেম্বরের মার্কেট থেকে অনেক দুরে মন্দিরটি অবস্থিত। তাছাড়া এ নিয়ে আমাদের বা এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন আপত্তি নেই। যারা ইউপি নির্বাচনে মেম্বরের ভোট করবে মুলত তারাই এ নিয়ে ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে বলে উত্তম কুমার দাবী করেন। কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বর আমজাদ হোসেন অভিযোগ করেন, এ নিয়ে তার কাছে অনেকেই চাঁদাবাজী করার চেষ্টা করছে। মন্দিরের জমি দখলের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাত ব্যাক্তিরা টাকা দাবী করছে। বিষয়টি তিনি র্যাব ও পুলিশকে জানিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।