শনিবার ● ২০ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে সাংবাদিকসহ চার জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
ঝিনাইদহে সাংবাদিকসহ চার জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: এক নারীর অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ঝিনাইদহের তিন সাংবাদিকসহ চার জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। শৈলকুপার সাতবিলা কুলচারা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স অব ডেভালপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ছাত্রী শেফালী খাতুন বাদী হয়ে খুলনার বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি করেন। আদালত বাদীনির অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ঝিনাইদহ পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে। মামলার আসামীরা হলেন, ভোরের কাগজের শৈলকুপা প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান সুমন, দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শামিমুল ইসলাম শামিম, দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকার শৈলকুপা প্রতিনিধি এইচ এম ইমরান ও শেফালীর সাবেক স্বামী শৈলকুপার পাঁচপাখিয়া গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে মনিরুল ইসলাম। বাদীনি তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স অব ডেভালপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ছাত্রী ও একজন কৃষি উদ্যোক্তা।২০১০ সালের ২০ ডিসেম্বর মামলার চার নাম্বার আসামী মনিরুল ইসলামের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়। ২০১৩ সালের শেষ দিকে স্বামী তাকে ফেলে রেখে বিদেশ চলে যায়। ২০১৮ সালে দেশে ফিরে বাদীনিকে নির্যাতন করতে থাকেন। ফলে ২০২০ সালের ৭ জুন স্বামীকে তালাক দেন। এরপর থেকেই যে যার মতো চলাফেরা করতে থাকেন। বাদীনি পিতার বাড়িতে থেকে হাঁস, মুরগী ও ছাগল পালনের পাশাপাশি বুকিটকের কাজ করেন। গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে এক নং আসামী মনিরুজ্জামান সুমন তার ফেসবুক ওয়ালে বাদীনি ও চার নং সাক্ষি আহসানুল কবীর টিটোর কিছু অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি পোষ্ট করেন। এরপর ২ নং আসামী শামিমুল ইসলাম শামিম ও ৩নং আসামী এইচএম ইমরানের ব্যক্তিগত আইডি থেকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ছবি ও নিউজ ছড়িয়ে পড়ার পর বাদীনির প্রতি ঘৃনা ছড়াতে থাকে। এলাকায় এ নিয়ে মুখরোচক ও বিরুপ আলোচনায় পরিণত হয়। বাদিনী ও চার নং সাক্ষির ব্যক্তিগত সুনাম ও সামাজিক নিরাপত্তা বিঘিœত করার জন্যই আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে এই সাইবার অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে বাদীনি তার অভিযোগে উল্লেখ করেন। বিষয়টি নিয়ে বাদীনির আইনজীবী স্বপন কুমার ঘোষ খবর নিশ্চিত করে জানান, গত ১৫ নভেম্বর বিজ্ঞ বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত খুলনায় অভিযোগটি দায়ের করা হলে ঝিনাইদহ পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিন সাংবাদিকের বক্তব্য জানতে ফোন করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের প্রচার সম্পাদক শামিমুল ইসলাম শামিম, জেলা রিপোর্টাস ইউনিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সুমন ও শৈলকুপা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম ইমরানসহ ৩ সাংবাদিকের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা দায়েরের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার সকালে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মনববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শৈলকুপা উপজেলার কুখ্যাত রাজাকার মৃত গোলাম মজনুর ছেলে এবং মাগুরা (সওজ) এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী আহসানুল কবির টিটুর বিরুদ্ধে তার স্ত্রী শাহানাজ খাতুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। এদিকে স্ত্রী শাহানাজের ভাই মনিরুলের স্ত্রীর সাথে পরকিয়া প্রেম করে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরী করে তা ভিডিও করে ব্লাক মেইল করে আসছিলো টিটু। এ ঘটনায় প্রবাসী মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে টিটুর নামে পর্নোগ্রাফি আইনে আরো একটি মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। সংবাদ প্রকাশের জেরে শাহানাজের ভাই মনিরুল ও তিন সাংবাদিককে ফাঁসাতে তাদের নামে পরকিয়া প্রেমিকা শেফালীকে দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়েছে সওজ এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী আহসানুল কবির টিটু। যা সম্পূর্ন মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম রায়হান, সাধারন সম্পাদক মাহমুদুল হাসান টিপু, সহ সম্পাদক কে এম সালেহ, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিক সাইফুল মাবুদ, দেলোয়ার কবিরসহ অনেকেই মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন। ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম রায়হান বলেন, মাগুরা সওজের সহকারী প্রকৌশলী টিটু এক নারীর সাথে পরকীয়া করে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করে বিভিন্ন জনের নিকট সরবরাহ করেছে। সেই সংবাদ সাংবাদিকগন প্রচার করেছে । যার কারনে ঐ কর্মকর্তা তার অপকর্ম আড়াল করার জন্য সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা ও হয়রানী মূলক মামলা দায়ের করিয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়। সেই সাথে তিনি ঝিনাইদহের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলে, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে সাংবাদিকদের হয়রানী মূলক মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তা যদি না হয় তাহলে ঝিনাইদহের সাংবাদিকেরা প্রয়োজনে অবস্থান ধর্মঘট, বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারক লিপি প্রদান সহ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সাথে সাংবাদিক নির্যাতনকারী ডিজিটাল নিরাপত্তা কাল আইন বাতিলের জোর দাবী জানায়।