বৃহস্পতিবার ● ১৭ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » ঝিনাইদহে ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর কর্মকর্তাদের লুটপাট
ঝিনাইদহে ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর কর্মকর্তাদের লুটপাট
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (১৬ মার্চ ২০১৬ : বাংলাদেশ সময় রাত ১১.০৫মিঃ) ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ আবাসিক প্রকৌশলী কার্যালয়টি দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার আখড়ায় পরিনত হয়েছে৷ কোম্পানীর নুন্যতম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যাবতীয় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে অফিসের তিন কর্মকর্তা ৷ দুর্নীতির মাধ্যমে তারা ফুলে ফেঁপে উঠেছেন ৷ বিনা টেন্ডারে বলিদাপাড়া-রায়গ্রাম মোড় থেকে কওসারের ইটভাটা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১১ হাজার কেভির লাইন নির্মান করা হচ্ছে ৷ একই ইটভাটার মধ্যে ৬ টি খুটি পুতে লাইন সরবরাহ করা হয়েছে ৷ চোরাই লাইন দিয়ে কালীগঞ্জের প্রায় ১৫ টি ইজিবাইক গ্যারেজ থেকে প্রতিমাসে লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে গুজব রয়েছে ৷ অভিযোগ উঠেছে ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলী যুগল বন্ধু রায়, উপ-সহকারি প্রকৌশলী মাসুম পারভেজ ও আনোয়ার হোসেন এই দুর্নীতির সাথে জড়িত ৷ তবে তারা তিন জনই এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন হেয় করতে কেও এমন তথ্য সরবরাহ করেছে ৷ সুত্র মতে মিটার নেয়া, মিটার পরিবর্তন, ডিসকানেক্ট ফির নামে গ্রাহকদের জিম্মি করে বেপরোয়া ভাবে ঘুষ আদায় করা হচ্ছে ৷ এ তিন কর্মকর্তার লাগামহীন দুর্নীতিতে কালীগঞ্জের বিদ্যুত্ অফিসে গ্রাহক হয়রানী চরমে উঠেছে ৷ অভিযোগে জানাগেছে, ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন (ওজোপাডিকো) এর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের আবাসিক প্রকৌশলী যুগল বন্ধু রায় যোগদানের পর তিনি কোন আইনের তোয়াক্কা করেন না ৷ তিনি যোগদানের পর শহরের প্রায় ১৫ টি ইজিবাইক গ্যারেজে বিশেষ ব্যবস্থায় চোরাই লাইন দিয়ে প্রতি মাসে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে ৷ তার আদায়কারী হিসেবে বিল্লাল হোসেন, রবিউল ইসলাম ও নাছির উদ্দীন নামে অফিসের তিন ব্যক্তিকে নিয়োজিত রেখেছেন ৷ সুযোগ বুঝে এই তিন ব্যক্তি এখন নিজেরাই ইজিবাইক চাজের্র ব্যবসা করছেন ৷ খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, কালীগঞ্জ শহরে মিন্নাত আলী, বিল্লাল, নাছির, রবিউল, নির্মল, রাজুসহ প্রায় ১৫ জনের ইজিবাইক চাজের্র গ্যারেজ আছে ৷ এদিকে নুতন বিদ্যুত্ লাইন তৈরী করতে হলে প্রোজেক্ট বা ডিপোজিট ওয়ার্কের ভ্যালুয়েশনের মাধ্যমে কাগজপত্র ঠিক করার পর লাইন টানতে হয় ৷ অথচ কওসারের ইটভাটায় যে ১৪ টি পোলের মাধ্যমে বিদ্যুত্ সরবরাহ করা হয়েছে তার কোন টেন্ডার হয়নি ৷ নেই কোন অফিসিয়াল কাগজপত্র ৷ কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে কোন কাগজপত্র ছাড়াই আবাসিক প্রকৌশলী যুগল বন্ধ রায় ইটভাটার মধ্যে ১১ হাজার কেভি ভোল্টের লাইন তৈরী করেছেন বলে অভিযোগ৷ ঢাকালে পাড়ার মিন্নাত আলীর ৩ ফেজের লাইন দীর্ঘদিন ধরে কাটা থাকলেও তিনি বিশেষ ব্যবস্থায় চোরাই বিদ্যুত্ নিয়ে বহাল তবিয়তে ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জ দিয়ে যাচ্ছেন ৷ উপ-সহকারি প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন ও মাসুম পারভেজ যৌথভাবে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ১নং ফিডার থেকে প্রায় ৫শ মিটার দুরে একটি ৩ ফেজের সংযোগ দিয়ে তাকে দুই ফিডার থেকে বিদ্যুত্ পাওয়ার সুবিধা করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ৷ গত ২৩ ডিসেম্বর অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে বিদ্যুত্ ব্যবহারের অভিযোগে ১৩টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় ৷ কিন্তু ১৩ জনের মধ্যে শুধুমাত্র মামলা হয় একজনের নামে ৷ বাকিদের কাছ থেকে মোটার অংকের ঘুষ আদায় করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়নি আবাসিক প্রকৌশলী ৷ একাধিক গ্রাহক জানান, দু’তিন মাসের বিল বাকি হলে বিদ্যুত্ অফিস থেকে লাইন কাটতে আসে এবং মামলা দিয়ে হয়রানী করা হবে হুমকি দিয়ে থাকেন ৷ কিন্তু মিন্নাত আলীর লক্ষাধিক টাকার বিল বাকি থাকলেও তার লাইন সচল রয়েছে ৷ এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলী যুগল বন্ধু রায় জানান, যদি কেউ চোরাই লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুত্ নিয়ে ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জ দেয় তাহলে আমাকে জানাবেন ৷ অবৈধ বিদ্যুতের বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না ৷ তাদের কাছ থেকে মাসিক উত্কোচ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, কারা টাকা নেয় তা আমি জানিনা ৷ এছাড়া নিয়ম কানুন উপেক্ষা করে ইটভাটায় বিদ্যুত্ লাইন সরবরাহের বিষয়ে তিনি জানান, আমি নতুন এসেছি৷ কোথায় বিদ্যুত্ লাইন গেছে তা আমি জানি না ৷ ইট ভাটায় বিদ্যুত্ সরবরাহের অফিসিয়াল কোন কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়ত প্রোজেক্টের কাজ হতে পারে ৷ বিষয়টি আমার ভালভাবে জানা নেই ৷ এ বিষয়ে ওজোপাডিকো ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, বিনা টেন্ডারে এ ধরণের কাজ করা সম্ভব নয় ৷ তাই খবরটি যারা দিয়ছেন তারা সত্য বলেননি ৷