শুক্রবার ● ১০ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা বোর্ড এর অর্থ বছরের ২য় সভা খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা বোর্ড এর অর্থ বছরের ২য় সভা খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত
গতকাল ৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ‘পরিচালনা বোর্ড’ এর ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের ২য় সভা খাগড়াছড়ি ইউনিট কার্যালয়ের সম্মেলন সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব পদমর্যাদা) নিখিল কুমার চাকমা।
বিগত ২৫ আগষ্ট-২০২১ তারিখের বোর্ড সভার কার্যবিবরণী পাঠ ও অনুমোদন এবং গৃহীত সিদ্ধান্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের নভেম্বর, ২০২১ পর্যন্ত সময়ের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।
চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদানের পর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের “পরিচালনা বোর্ড” এর ২০২১-২০২২ অর্থবছরে অনুষ্ঠিত ২য় সভা। তিনি বক্তব্যের শুরুতে পার্বত্য চট্টগাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রতিনিধি, তিন পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক, বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীগণ ও বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকগণসহ উপস্থিত সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
সভাপতির অনুমতিক্রমে সদস্য প্রশাসন ইফতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব) বিগত পরিচালনা বোর্ড সভার কার্যবিবরণী পাঠ করেন এবং গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিস্তারিত উপস্থাপন করেন। পরবর্তীতে বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীগণ কোড নং ২২০০১১০০, ২২০০০৯০০ এর আওতাধীন প্রকল্প/স্কিম এবং পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বোর্ডের আওতাধীন প্রকল্পসমূহের প্রকল্প পরিচালকগণ নভেম্বর, ২০২১খ্রি. পর্যন্ত সময়ের সার্বিক বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিবরণ তুলে ধরেন।
এছাড়া সভায় রিজার্ভ বাজার হতে জুগুলুক্যা পাহাড়/পুরানবস্তি সেতুর নাম পরিবর্তন করে “বীর মুক্তিযোদ্ধ মোজাফফর আহমদ তালুকদার সেতু” এবং আসামবস্তি হতে ব্রাক্ষনটিলা সেতুর নাম পরিবর্তন করে “বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল বাহাদুর ছেত্রী সেতু” নামে নামকরণের প্রশাসনিকভাবে অনুমোদিত বিষয়টি আলোচনা হয়। রাঙামাটি শৈল বিপনী বিতানের ভাড়া আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দোকানদারদেরকে পত্র প্রেরণ এবং বকেয়া ভাড়া আদায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড তহবিল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, উঁচুভূমি বন্দোবস্তীকরণ প্রকল্প, তিন পার্বত্য জেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ঘরে ঘরে সোলার বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন (বিনামূল্যে সোলার বিতরণ), পর্যটন শিল্প বিকাশে তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন ভিউ পয়েন্ট নির্মাণ ও পর্যটকদের সুবিধার জন্য রাস্তা নির্মাণ, পানি রিজার্ভার নির্মাণ, শিক্ষা সম্প্রসারণ, কৃষি, পানীয়জল সরবরাহকরণ ও যোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকার প্রদান, তিন পার্বত্য জেলায় হেডম্যান কার্যালয় নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত শেখ রাসেল স্মৃতি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ব্র্যান্ডিং হিসেবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন, প্রাকৃতিক পরিবেশের বিরুপ প্রতিক্রিয়া পরিহারের জন্য বেশি পরিমাণে বৃক্ষ রোপন এবং পাথর উত্তোলন বন্ধের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, দুর্গম এলাকার শিক্ষা প্রসারণ করতে হবে। দেখা যায় দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরা প্রায় ৯ কিলোমিটার পথ হেঁেট স্কুলে আসে তিনি দুটি স্কুলের কথা উল্লেখ করেন (১) শিয়াই হারুং এবং (২) বলংহামারি। এ ধরণের দুর্গম এলাকার স্কুলগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতার আহবান জানান।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত শেখ রাসেল স্মৃতি নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা প্রশংসা করে বলেন এটিকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো ব্র্যান্ডিং হিসেবে গ্রহণ করেছে। রাঙামাটি সদরে পাবলিক কলেজ স্থাপন প্রকল্পটির বিষয়ে দ্রুতত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরোধ করেন।
বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, বান্দরবান সদরে অবস্থিত জেলা স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে বান্দরবানের বীর বিক্রম এর নামে নামকরণের বিষয় প্রস্তাব করেন। তিনি জানান যে, হারিয়ে যাওয়া লোকজ সংস্কৃতিগুলো পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বান্দরবান জেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে লোকজ উৎসব এর আয়োজন করা হবে এবং বান্দরবানের পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে নীলাচল স্পটে ১৬ই ডিসেম্বর এর পরবর্তী সময় হতে পর্যটন মৌসুমে প্রতি সপ্তাহে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে এক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতা কামনা করেন। এই উদ্যোগকে সভায় উপস্থিত সকলেই সাধুবাদ জানান।
সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী (অতিরিক্ত সচিব), সদস্য প্রশাসন ইফতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব), সদস্য বাস্তবায়ন মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ (উপ সচিব), খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রতিনিধি বিপুল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, বান্দরবান পার্বত্য জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল আজিজ, খাগড়াছড়ি ইউনিট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুজিবুল আলম, মংছেনলাইন রাখাইন, উপ পরিচালক, বান্দরবান ইউনিট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত, মিশ্র ফল চাষ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম, সিএমইউ জেনারেল ম্যানেজার পিন্টু চাকমা, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা কল্যাণময় চাকমা, রাঙামাটি নির্বাহী প্রকৌশলী (চ:দা) তুষিত চাকমা, তথ্য অফিসার ডজী ত্রিপুরা ও সহকারী পরিচালক (চ:দা) সাগর পাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।