মঙ্গলবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » ঢাকা » শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের শ্রদ্ধা নিবেদন
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের শ্রদ্ধা নিবেদন
প্রেস বিজ্ঞপ্তি :: পার্বত্য চট্টগ্রামে জনগণের পক্ষে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)। আজ ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, মঙ্গলবার সকাল, সাড়ে ৭টায় ঢাকায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যে দিয়ে এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পিসিপি’র নেতৃবৃন্দ।
এ সময় পিসিপি’র নেতৃবৃন্দ ‘পাহাড়ে নব্য পাক হানাদারদের গণবিরোধী অপকর্ম রোধে সোচ্চার হোন, ‘৭১-এ কুকিছড়া হত্যাকা-ে জড়িতদের নাম তালিকা প্রকাশ কর ও শাস্তি দাও’ এই স্লোগানে সম্মলিত ব্যানার বহন করেন।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদে কেন্দ্রীয় কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, দপ্তর সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা ও ঢাকা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রিটেন চাকমা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
সাংবাদিকদের সাথে এক সাক্ষাৎকারে পিসিপি নেতা অমল ত্রিপুরা বলেন, তৎকালীন পাক বাহিনী পরাজয় নিশ্চিত জেনে ১৯৭১ সালে ১০-১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানে হানদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলাবদর-আলশামস বাহিনী এদেশের জনগণের মেধাশূণ্য করতে লেখক, শিক্ষক, চিকিৎসক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ নানান পেশাজীবী মানুষদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আত্মোৎর্গের ফলে তার দুইদিনের পর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। আমরা এই বিশেষ দিনে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বিনম্ভ্র শ্রদ্ধা জানাই।
তিনি আরো বলেন, পাক হানাদার ও তাদের দোসররা ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। কিন্তু অপরদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে মুক্তিবাহিনী কর্তৃক খাগড়াছড়ির কুকিছড়া নামক স্থানে গাছবান স্কুলের শিক্ষক কিনারাম চাকমা এবং লোকমণি, নীল মণি, বাজিবো ও পূর্ণ বিজ্ঞান চাকমাসহ আরো অনেকজনকে হত্যা করেছিল, গ্রামে বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল। মুক্তিবাহিনী কর্তৃক পাহাড়ি জনগণের ওপর এহেন হত্যাকা- এই দেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায়।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় পাক বাহিনী ও তাদের দোসরদের বিচার হচ্ছে। কিন্তু স্বাধীন দেশে পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো পাক হানাদের কর্মকা- রয়ে গেছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও তাদের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের ওপর নির্যাতন, দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। এখনো প্রতিনিয়ত রাতের অন্ধকারে ঘরবাড়ি তল্লাশি, অন্যায়ভাবে গ্রেফতার, বিচার বহির্ভুত হত্যা, ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটছে। স্বাধীনতার পরবর্তীতে সেনা ও বহিরাগত সেটলার বাঙালি কর্তৃক পাহাড়িদের ওপর ডজনের অধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর এসে দাঁড়ালেও পাহাড়ে সংঘটিত সে সকল ঘটনার বিচার তো দূরের কথা, সুষ্ঠু তদন্তও হয়নি। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচারসহ অবিলম্বে মুক্তিবাহিনী কর্তৃক কুকিছড়া হত্যাকা- ও রাষ্ট্রীয় বাহিনী, সেটলার কর্তৃক সংঘটিত সকল গণহত্যার শে^তপত্র প্রকাশ এবং বিচারের দাবি জানান। তিনি পাহাড়ে নব্য পাক হানাদারদের গণবিরোধী সকল অপকর্ম রোধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চবি শাখার আহ্বায়ক মিটন চাকমা, পিসিপি কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অঙ্কন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক সুনীল ত্রিপুরা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।