বৃহস্পতিবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » কৃষি » ঈশ্বরগঞ্জে ফসলের মাঠে শস্য চিত্রে বঙ্গবন্ধু,বঙ্গমাতা, শেখ হাসিনা ও জয়ের প্রতিচ্ছবি
ঈশ্বরগঞ্জে ফসলের মাঠে শস্য চিত্রে বঙ্গবন্ধু,বঙ্গমাতা, শেখ হাসিনা ও জয়ের প্রতিচ্ছবি
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে আঠারবাড়ি ইউনিয়নের পাড়া খালবালা গ্রামের ৬৭ বছর বয়সী কৃষক আবদুল কাদির নিজের চেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি অগাধ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে তার জমিতে শস্যচিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়,জাতীয় ফুল শাপলা, জাতীয় পাখি দোয়েল, জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার, স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার এবং পদ্মা সেতুসহ অনেক শিল্পকর্ম।
এর আগে ২০১৯ ও ২০২০ সালেও তার জমিতে এমন শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলেছিলেন। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তৈরি করেছিলেন। আর এতে ব্যবহার করেন লাল শাক, সরিষা ও বিভিন্ন ধরনের সবুজ সবজি।
কৃষক আব্দুল কাদির নিজের ফসলি জমিতে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা, প্রধানমন্ত্রী ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রতিচ্ছবিসহ এমন শিল্পকমের্র মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ ছুটে আসছেন। নিজের ফসলি জমিতে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি অগাধ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা, প্রধানমন্ত্রী ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ অনেক কিছুর প্রতিচ্ছবি এঁকে কৃষক আব্দুল কাদির দর্শনার্থীসহ হাজারো মানুষের বাহবা কুড়ােেচ্ছন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের পাড়া খালবালা এলাকার কৃষক আব্দুল কাদির এই কাজটি ‘পাড়া খালবলা বন্ধুমহল ডিজিটাল ক্লাব’ নামের একটি স্থানীয় সংগঠনের সহযোগিতায় নিজের ৩৩ শতক জমিতে সরিষাগাছ ও লালশাক বিভিন্ন ধরনের সবুজ সবজি’র মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, পদ্মাসেতু, মুক্তিযুদ্ধ, স্মৃতিসৌধসহ আরো অনেক কিছুর প্রতিচ্ছবি রয়েছে।
জানা গেছে, নিজের ৩৩শতক জমিতে আর্টিস্ট হাফিজুর রহমানের সহযোগিতায় কৃষক আব্দুল কাদির এঁকেছেন এসব শিল্পকর্ম। দিন যত যাচ্ছে, চারা বড় হওয়ার সঙ্গে চিত্রটিও ফুটে উঠছে আরও।
এলাকাবাসি জানান, গত বছরও একই জমিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এঁকে সারা দেশে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন কৃষক কাদির। এরই ধারাবাহিকতায় বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি অগাধ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ফের এমন অনন্য শিল্পের উদ্যোগ নিয়েছেন ওই কৃষক। সরিষাগাছ,লালশাক ও বিভিন্ন ধরনের সবুজ সবজি মিলে মনোমুগ্ধকর অবয়ব দেখতে প্রতিদিনই ফসলের মাঠে ভিড় করছে দূর-দূরান্তের হাজারো মানুষজন। গাছ যত বড় হচ্ছে, ছবিগুলোর নান্দনিকতা-সৌন্দর্য আরও বাড়ছে।
শস্য চিত্রে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি এমন নান্দনিকতা-সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা কৃষক আব্দুল কাদির বলেন, ‘আমি যা করেছি তা বঙ্গবন্ধুকে এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে ভালোবেসেই করেছি। আমি একজন কৃষক মানুষ, তাই আমি আমার ভালোবাসাটা ফসলের মাঠে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আর আমার এই শিল্পটা দেখার জন্য যখন দূর-দূরান্ত থেকে যখন লোকজন আসে তখন আমার খুবই ভালো লাগে।’
কৃষক আব্দুল কাদির আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের অবদান সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ভিন্ন কিছু করতে চেষ্টা করেছি। এর ফলে আর্থিক লাভ না হলেও মানসিক তৃপ্তি রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ‘পাড়া খালবলা বন্ধুমহল ডিজিটাল ক্লাবের’ সাধারণ সম্পাদক নাইমুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘দেশ এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি কৃষক আব্দুল কাদিরের ভালোবাসা দেখে আমরা এই কাজে সহযোগিতা করেছি। এমন একটি কাজে তাঁকে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা গর্বিত।’
আঠারবাড়ি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি এ এইচ হালিম বলেন, ‘কৃষক আব্দুল কাদিরের জমিতে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে আমরা আঠারবাড়িবাসী গর্বিত।’
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, ‘কৃষক আব্দুল কাদির প্রতি বছরেই ভিন্ন কিছু করে থাকেন। এগুলো তার দেশের প্রতি, বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসার অকৃত্রিম বহিঃপ্রকাশ।’
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসাঃ হাফিজা জেসমিন বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে কৃষকের এমন একটি উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। আমি এই বিষয়টি গতকালই অবগত হয়েছি। অচিরেই তা পরিদর্শনে যাব। উপজেলা প্রশাসন ওই কৃষকের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।’