সোমবার ● ২০ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় ২ সহযোগীসহ সাংবাদিক মানিক কারাগারে
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় ২ সহযোগীসহ সাংবাদিক মানিক কারাগারে
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :: ১৬ ডিসেম্বর : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিসহ শ্লীলতাহানি’র অভিযোগে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় রাঙামাটির এক সাংবাদিক ও তার দুই সহযোগীকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন চট্টগ্রাম সাইবার ক্রাইম আদালত। অপর এক নারী সাংবাদিককে ২০ হাজার টাকার বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে।
মামলার চার আসামির মধ্যে বন্ডে জামিনপ্রাপ্ত জাহেদা বেগম (৪০) বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাঙামাটি প্রতিনিধি। কারাগারে পাঠানো মো. আলমগীর মানিক (৩৮) এশিয়ান টেলিভিশনের রাঙামাটি প্রতিনিধি। অন্য দুই আসামি মাসুদ পারভেজ নির্জন (২৪) ও শহিদুল ইসলাম হৃদয় (২৫) আলমগীর মানিকের সহযোগী।
রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর দায়ের করা মামলায় আসামিদের চারজনের মধ্যে তিনজনের জামিন আবেদন গতকাল বুধবার নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত। একই সঙ্গে মামলার আরেক আসামি জাহেদা বেগমকে ২০ হাজার টাকা বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারিক তোফায়েল হাসান এ আদেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. শোয়েব আলী চৌধুরী বলেন, এই মামলায় আসামিরা উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন। মহামান্য হাইকোর্ট তাদের জামিন না দিয়ে ছয় সপ্তাহের ডিরেকশন দিয়ে চট্টগ্রাম সাইবার আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিলেন। বুধবার তারা আদালতে জামিন চাইলে বিজ্ঞ আদালত উভয় পক্ষের শুনানি করে জাহেদা আক্তারকে নারী হওয়ায় এবং তার শিশুকন্যার কথা বিবেচনায় নিয়ে ২০ হাজার টাকার বন্ডে জামিন দেন। অন্য আসামি আলমগীর মানিক, হৃদয় ও নির্জন- এই তিনজনকে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হায়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের এক ছাত্রীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শ্লীলতাহানির মামলার চার আসামি চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত আসামি ও বাদীপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে মামলার তিন আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া অন্য আসামি জাহেদা বেগমকে বিশেষ বিচেনায় জামিন দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিসহ শ্লীলতাহানির অভিযোগে রাঙামাটির দুই সংবাদকর্মী ও তাদের দুই সহযোগীসহ চাজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী। তিনি জেলা শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং তার স্বামীও একজন সাংবাদিক। আঁখির বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ প্রচারণার প্রতিবাদে রাঙামাটি শহরের একাধিক স্থানে প্রতিবাদী মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন তার সহপাঠীরা।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, প্রতারণামূলকভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে আমি ও আমার স্বামীর আইডিতে ছদ্মবেশ ধারণ করে আপত্তিকর, মানহানিকর কমেন্ট করে হেয়প্রতিপন্ন ও ফেসবুক আইডি হ্যাক করার চেষ্টা করেন আসামিরা। পরবর্তী সময়ে আইডি হ্যাক করে আমার ক্ষতির উদ্দেশ্যে আইডি থেকে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে নেন তারা এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে ফেলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুক আইডিতে আমার ছবি প্রকাশ করে আমাকে অতিষ্ঠ করে তোলেন। এর পরেও আমাকে এবং আমার স্বামীকে মেরে ফেলে লাশ গুম করে ফেলা, আমাকে সন্ত্রাসী দিয়ে অপহরণ করে ধর্ষণের হুমকি দেন আসামিরা।