শুক্রবার ● ১৮ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » চাকমা সমাজে নারীরা এগিয়ে যাক অবসান হোক বৈষম্যের
চাকমা সমাজে নারীরা এগিয়ে যাক অবসান হোক বৈষম্যের
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: (১৮ মার্চ ২০১৬ : বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩.১০মিঃ) চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের স্ত্রী রাণী য়েন য়েন আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গত ৮ মাচ ২০১৬ রাঙামাটিতে টংগ্যার সম্মেলন কক্ষে সিএইচটি হেডম্যান ও নারী হেডম্যান-কার্বারী নেটওয়ার্কের আয়োজিত ‘আদিবাসী নারীদের ভুমি ও মানবাধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে বলেন, আমি যখন শুধু একজন নারী ছিলাম তখন মানুষ এতটা পাত্তা দিত না। আমি কথা বললেও কে বা শুনে ? রাস্তায় হেটে গেলেও কেউ গুরুত্বও দিত না। এখন রাজার স্ত্রী হয়ে রাণী হয়েছি বলে মানুষ আমার কথা একটু শুনতে চাই। সাংবাদিকরাও এখন আমার কথা মনযোগ দিয়ে শুনে। অনেকে চাই আমার সঙ্গে ছবি উঠতে। অনেকে ছবি তোলেন। আমি এত ভাল করে গুছিয়ে কথা বলতে পারি না। সহজ সরল ভাবে কথাগুলো বলার জন্য চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের স্ত্রী রাণী য়েন য়েনকে ধন্যবাদ দিতে হয়, কারণ কত বড় মাপের মনের মানুষ হলে এসব কথা গণমাধ্যমে বলার মানষিকতা তৈরী হয়। সেটা সবার ধারনা রয়েছে।
চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের ২য় স্ত্রী রাণী য়েন য়েন সম্প্রতি চাকমা সার্কেলের অধীনে নারী কার্বারী নিয়োগ দিয়েছেন। তার ধারনা এসব নারী কার্বারীদের গুরুত্ব এখন আরো বেড়ে গেছে। কিন্তু চাকমা রানী হয়তো ভুলে গেছেন চাকমা সম্প্রদায়ের ভিতর পুরুষরা ঘরে বসে থাকেন বা অন্য কাজে সময় দেয় বেশী চাকমা পুরুষরা তাদের ভিতর নারীরা শিশু জন্ম দেয়া,শিশুদের লালন পালন, রান্ন করা,বাজার করা,সংসারে উপাজন করা এবং সংসারের সব গুরুত্বপুণ কাজ গুলি করেন চাকমা সম্প্রদায়ের নারীরা। রাণী য়েন য়েন শিক্ষিত মানুষ তিনি নিশ্চয় চাইবেন না কোন উগ্র সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক দলের হয়ে তিনি রাজা বাবুর মত ব্যবহৃত হউন। কেউ যদি গুরুত্বপূর্ণ পদে যায় তখন তার দায়িত্বের যথাযত ব্যবহার করতে হয়।
আসলেই তাই রাণী য়েন য়েন এখন চান নারী কার্বারীরা যারা গ্রামের প্রধান হয়েছেন সে হিসেবে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব,ক্ষমতা সুষ্ঠু এবং দক্ষতার সঙ্গে পালন করুক। কিন্তু রাণী কি এটা লক্ষ্য করেছেন যে, চাকমা নারীদের ওপর নিজেদের স্বামী বা সন্তানরা প্রতিনিয়ত কি ভাবে ব্যবহার করছেন ! বিশেষ করে নারীদের রাজনৈতিক কর্মসূচি ও পৈত্রিক সম্পত্তির মালিকানা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে প্রথাগত নীতির দোহায় দিয়ে ইত্যাদি। আমরা সবাই চাই রানীর লক্ষ্য হবে সমাজে এবং চাকমা নারীদের জীবণ যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য । নারী কার্বারীদের আদিবাসীদের অধিকার বিষয়ে কাজ করার পাশাপাশি সমাজে নারীদের বৈষম্য দূর করা,সকল সম্প্রদায়ের নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজ করতে হবে এবং পাহাড়ে নারীদের তাদের অধিকার বিষয়ে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে।
বলা হচ্ছে , চাকমা রানী পাবত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এর হয়ে দেশে – বিদেশে কাজ করছেন ?
চাকমা রাজ পরিবার সব সময় রাজনৈতিক কমকান্ডের বাইরে ছিলেন। চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের স্ত্রী রাণী য়েন য়েন এর উচিত হবে রাজমাতা বিনীতা রায়ের পথ অনুসরন করা । উগ্র সম্প্রদায়ের রাজনীতিক নেতাদের ফাঁদে পা না দেয়া।
সিএইচটি নারী হেডম্যান কার্বারী নেটওয়ার্কের সভাপতি জয়া ত্রিপুরা, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এএলআরডির উপ নির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি, হিমাওয়ান্তির নির্বাহী পরিচালক টুকু তালুকদার, জেএসএস কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কল্পনা চাকমাসহ পাবত্য অঞ্চল তথা দেশের সকল নারীদের সাথে নিয়ে রাণী য়েন য়েন এগিয়ে যাক, রানীর পাশে অন্য সকল সম্প্রদায়ের নারীরা থাকলে তবেই রাজ পরিবারে এবং সমাজে রাজমাতা বিনীতা রায়ের স্থান পূর্ণ হবে।
আমরা আশা করি চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের স্ত্রী রাণী য়েন য়েন পাহাড়ি বাঙ্গালী সকলের মনে কম সময়ের ভিতর স্থান করে নিন।
ধন্যবাদ চাকমা রাণী য়েন য়েনকে । চাকমা সমাজে নারীরা এগিয়ে যাক অবসান হোক বৈষম্যের।