রবিবার ● ২ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » ময়মনসিংহ » ফুলবাড়িয়ায় ৫৭ বছর বয়সে ইউপি সদস্যের চমক : জিপিএ-৪.৪৬ পেয়ে এসএসসি পাস করে এবার ভর্তি হতে চান কলেজে
ফুলবাড়িয়ায় ৫৭ বছর বয়সে ইউপি সদস্যের চমক : জিপিএ-৪.৪৬ পেয়ে এসএসসি পাস করে এবার ভর্তি হতে চান কলেজে
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে টানা দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ৫৭ বছর বয়সে জিপিএ-৪.৪৬ পেয়ে এসএসসি পাস করে সকলকে চমকে দিলেন। সেইসাথে নতুন করে আলোচনায়ও এলেন। এসএসসি’র অধ্যায় শেষ। এবার নতুন করে ভর্তি হতে চান কলেজে।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শারীরিক অসুস্থতার কারণে অষ্টম শ্রেণি পাসের পর আর লেখাপড়া করেননি। আমার একমাত্র ছেলে আব্দুল্লাহ আল মারুফ স্থানীয় আছিম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। আমি কেন এই আলো থেকে বঞ্চিত থাকবো। তাই শিক্ষার প্রতি আগ্রহ থাকায় বয়স ও চক্ষুলজ্জাকে পাত্তা না দিয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন। সেইসাথে এবারের ইউপি নির্বাচনে তিনি টানা দ্বিতীয়বারের মতো সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘গত পাঁচ বছর মেম্বার থাকার পর আমি বুঝতে পারি, জীবনে শিক্ষার প্রয়োজন খুব বেশি। নিজেই যদি শিক্ষিত না হই তাহলে মানুষের সেবা করবো কীভাবে ? জনগণকে কী শেখাবো? এ ছাড়াও অফিস-আদালতে শিক্ষা সবসময়ই প্রয়োজন হয়। তাই সাংসারিক জীবনের পাশাপাশি লেখাপড়ায় শুরু করি।’
রফিকুল ইসলামের এ অর্জনে পরিবারের সদস্যরাও আনন্দিত। এমন সাফল্যে খুশি গ্রামবাসী। এ বিষয়ে তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘আমার খুবই আনন্দ হচ্ছে, আমার বাবা পরীক্ষায় পাস করেছেন।এতে আমাদের পাশাপাশি প্রতিবেশিরাও খুশি হয়েছেন।’
রফিকুল ইসলামের স্ত্রী আমেনা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামীর অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল, ম্যাট্রিক(এসএসসি) পাস করবে। তার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে দেখে আমার খুব ভালো লাগছে।’
রফিকুল ইসলামের শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, ‘উনি (রফিকুল) আমাদের বললেন অনেকেই তো আইএ, বিএ পাস করে। আমরা তো পড়ালেখা না করে ভুল করেছি। এখন কী কোনও সুযোগ আছে লেখাপড়ার? তবে এ জন্য তাকে সইতে হয়েছে গ্রামবাসীর অনেক টিপ্পনী। এবার তার পাসের খবরে তারাই জানাচ্ছেন অভিনন্দন।সফলতার সাথে ওনি পাস করায় স্কুলের শিক্ষকরাও আনন্দিত। এ বয়সে এসে এসএসসি পাস করে রফিকুল ইসলাম এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর মনোবলের প্রশংসা করতেই হয়।’
এলাকার মানুষজন জানান,নতুন প্রজেন্মের কাছে এখন তিনি উদাহরণ। শিক্ষার আলো ছড়াতে চান ঘরে ঘরে। এসএসসি’র অধ্যায় শেষ। এবার নতুন করে ভর্তি হতে চান কলেজে।