সোমবার ● ৩ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মানিকছড়িতে যুবলীগ নেতা ইমান নিখোঁজের ৩৮ ঘন্টায়ও সন্ধান মেলেনি
মানিকছড়িতে যুবলীগ নেতা ইমান নিখোঁজের ৩৮ ঘন্টায়ও সন্ধান মেলেনি
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার একসত্যাপাড়া এলাকা থেকে নিখোঁজ তিনটহরী ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইমান হোসেনের (২৮) সন্ধান মেলেনি দীর্ঘ ৩৮ ঘন্টা পরেও।
শনিবার (০১ জানুয়ারী) রাত থেকে স্বজনরা ও রবিবার সকাল থেকে দলীয় নেতাকর্মী, পুলিশ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সম্ভাব্য সকল স্থানে তল্লাসী চালিয়ে যাচ্ছে।
নিখোঁজ যুবলীগ নেতা ইমান হোসেন উপজেলার ৪নং তিনটহরী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড বড়বিলের বাসিন্দা সাবেক মেম্বার মো. রমিজ মিয়ার বড় ছেলে।
জানা যায়, শনিবার (০১ জানুয়ারী) রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টায় মোটরসাইকেল যোগে মানিকছড়ি বাজার হতে একসত্যাপাড়া হয়ে নিজবাড়ি বড়বিলের উদ্দ্যেশে রওয়া হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি।
রাতেই স্বজনরা তাঁর ফোনে কল দিয়ে বন্ধ পেয়ে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করে।
ঘটনার পরের দিন রবিবার সকালে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে সদর (১নং মানিকছড়ি) ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড একসত্যাপাড়া এলাকায় ইট সলিং রাস্তার পাশে জঙ্গলে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও মানিব্যাগসহ তার সাথে থাকা জিনিসপত্র দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও দলীয় নেতাকর্মীরা আশপাশের এলাকা তল্লাসী চালিয়েও তাঁর কোন সন্ধান পাননি।
এ বিষয়ে ইমানের ছোটভাই মানিকছড়ি কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. আকতার হোসেন বলেন, আমার ভাই খুবই শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের মানুষ। তাঁর সাথে কারো কোন শত্রুতা নেই। তবে কে বা কারা গতরাতে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে অপহরণ করেছে জানা যায় নি। আমরা আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে আগামি ৪৮ঘন্টার মধ্যে ইমান হোসেনকে সুস্থ্য ও স্বাভাবিক অবস্থায় উদ্ধার করার দাবী জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। রবিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ দাবী জানায় সংগঠনটি।
মানিকছড়ি থানার ওসি মো. শাহনূর আলম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ করা হয়নি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুসন্ধান চলছে।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে নিখোঁজ যুবলীগ নেতা উদ্ধারের দাবীতে সড়ক অবরোধ
খাগড়াছড়ি :: খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে তিনটহরী ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার মো. ইমান হোসেন নিখোঁজের ৩৮ঘণ্টায়ও সন্ধান না মেলায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠণের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ চলছে।
সোমবার (০৩ জানুয়ারী) সকাল থেকে এ বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ শুরু হয়েছে।
এর আগেই অঘোষিতভাবে দোকানপাট বন্ধ ও আন্তঃসড়কে সকল যানবাহন বন্ধ করে অবরোধ পালন করছে ব্যবসায়ীরা। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করতে মানুষ রাস্তায় নেমেছে।
জানা যায়, উপজেলার ৪নং তিনটহরী ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. রমিজ মিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র এক কন্যা সন্তানের জনক মো. ইমান হোসেন (২৮) গত ১ডিসেম্বর সন্ধ্যা রাতে নিখোঁজ হয়। রবিবার সকালে বাড়ীর অদূরে গহীণ জঙ্গল থেকে নিখোঁজ ইমনের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলসহ অপহরণের কাজে ব্যবহৃত কিছু আলামত উদ্ধার করে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। এ ঘটনার দীর্ঘ ৩৮ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সোমবার সকাল ১০টা পযর্ন্ত আইনশৃংখলা বাহিনী অপহৃত ইমানকে উদ্ধার করতে সক্ষম না হওয়ায় উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষকে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দেন উপজেলা আওয়ামীলীগ। কিন্তু বিক্ষোভ মিছিল শুরুর আগেই জনপদে সকল দোকানপাট, আন্তঃসড়কের সকল পরিবহন বন্ধ রেখে রাস্তায় নেমে আসে ব্যবসায়ীরা। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
মানিকছড়ি থানার ওসি মোহাম্মদ শাহনূর আলম জানান, যুবলীগ নেতা নিখোঁজের পর মৌখিক খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী অনুসন্ধানে নেমেছে।
খাগড়াছড়ির গোলাবাড়ী ইউপি’র ১,২ও ৩নং ওয়ার্ডে মহিলা মেম্বার পদে লড়াই হবে হাড্ডা-হাড্ডি
খাগড়াছড়ি :: আসন্ন পঞ্চম ধাপে ৫জানুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে খাগড়াছড়ি সদর ৩নং গোলাবাড়ি ইউনিয়নের
১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডে মহিলা মেম্বার পদে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
উপজেলা সদরের এ ইউনিয়নে মহিলা মেম্বার পদে নুরজাহান বেগম(বর্তমান মেম্বার) হেলিকপ্টার প্রতীকের সাথে জামেনা বেগম(সাবেক মেম্বার) বই প্রতীকের হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে, এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল ও সাধারণ ভোটাররা।
গত কয়েক দিন সরেজমিনে এলাকা ঘুরে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা, উঠান বৈঠক, মিছিল-মিটিং, শোডাউনে এমনটাই পরিলক্ষিত হয়েছে।
নুরজাহান বেগম (হেলিকপ্টার) বর্তমান মেম্বার হিসেবে তিনি
সাধারণ মানুষের কাছে
অত্যন্ত আস্থাভাজন ব্যাক্তি হিসেবে সু-পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এবারও জনগণ তাঁকে নির্বাচিত করলে তাদের সেবায় নিজেকে ব্যাস্ত রাখতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাধ্য অনুযায়ী সাহায্য করেছেন ও করছেন সাধারণ মানুষকে। তিনি নিজেকে মানব সেবায় উৎসর্গ করে দিতে চান।
স্থানীয়রা বলেন, তিনি সবসময় এলাকার সকল বিপদে আপদে জনসাধারণের পাশে এগিয়ে আসেন। রাত-দিন যখনই চাই আমরা তাকে পাশে পাই।
নুরজাহান বেগম (হেলিকপ্টার) বর্তমান মেম্বার বলেন, এলাকার বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃকালীন ভাতা, গর্ভ ভাতা ও বিধবা ভাতা শতকরা ৭৫থেকে ৮০ভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বামী পরিত্যাক্তা পরিবারকে ভিজিডি কার্ড করে দিয়েছি। রস্তা-ঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি, করোনাকালীন রেখেছি বিরাট ভূমিকা। জনগণ আমাকে ভালোবেসে একাধিকবার নির্বাচিত করেছেন, এবারও জনগণ আমাকে নির্বাচিত করলে বর্তমান মেম্বার হিসেবে উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করার চেষ্টা করবো।
অপরদিকে, জামেনা বেগম (বই) মার্কা, সাবেক মহিলা মেম্বার বলেন, এই ইউনিয়নবাসীর সামগ্রীক স্বার্থে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস বজায় রেখে আমি চাই অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে বিজয় অনেকটাই নিশ্চিত বলে দাবী করেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০০৭ইং সালে ১সপ্তাহের প্রস্তুতিতে মাত্র ৮ভোটের ব্যাবধানে পরাজয় বরণ করলেও পরবর্তীতে ২০১২ইং জনগণের সেবায় নিয়োজিত থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচন করায় ৩০ভোটে বিজয়ী হয়েছিলাম।
এসময় ৩নং ওয়ার্ডে একটি পাহাড়ের উপরে সিড়ি নির্মাণ করে দিয়েছি, পাহাড়ি পাড়ায় জাম্বুরার বাড়ী হতে ডাইল্যার বাড়ী পর্যন্ত(নোয়া পাড়া) ব্রীক সোলিং রাস্তা নির্মাণ, ২নং ওয়ার্ডে নতুন কাঁচা রাস্তা(১২ফুট চওড়া), চুমকির বাড়ি থেকে বকুল চেয়ারম্যানের বাড়ি পর্যন্ত ২’শ ২০ফুট কাঁচা রাস্তা করে দিয়েছে। সখিনার বাড়ি হতে সুরুজ মিয়া নেতার বাড়ি পর্যন্ত ব্রীক সোলিং রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছি। নতুন ও পুরাতন মসজিদে একটি করে সোলার ও টিউবওয়েল স্থাপন করে দিয়েছি।
পুরাতম কৈবাল্যপিঠ মন্দিরে প্রতি বছর ৫০কেজি করে চাল দিয়ে আসছি। এলাকার পাহাড়ি ও হিন্দু সপ্রদায়ের কেউ মারা গেলে শ্মশান পর্যন্ত সাথে গিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেছি। পাহাড়ি-বাঙালী সকল সম্প্রদায় তথা মানব সেবাই আমার ব্রত। বাকী জীবন মানব সেবায় আমি নিজেকে উৎসর্গ করে দিতে চাই।
আবার জনগণ আমাকে মেম্বার নির্বাচিত করলে পূর্বের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এলাকার উন্নয়ন তথা মাদক মুক্ত সমাজ গড়ে তুলবো, অসমাপ্ত কাজগুলো রাস্তা-ঘাট ইত্যাদী সমাপ্ত করবো।
পাহাড়ী পাড়ায় আমার বসবাস বিধায় পাহাড়ি-বাঙালীদের মাঝে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সমঝোতার জন্য এগিয়ে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করত ভূমিকা রেখেছি। উভয়ের মাঝে সৃষ্ট যেকোনো পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসে এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো যা অন্যান্নদের পক্ষে সম্ভবপর নয়।
এলাকার দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিজ অর্থায়নে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছি ও করে যাবো।
এজন্য আপনাদের সবার দোয়া-আশির্বাদ ও ভালোবাসাপূর্ণ সমর্থন একান্তভাবে কামনা করছি।
তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন এলাকাবাসীর সেবা করা।এলাকার বিভিন্ন সমাজ উন্নয়ন মূলক জনহিতকর কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখে সুখে দুঃখে পাশে থাকতে আবারও এলাকাবাসীর সমর্থন চাই।