সোমবার ● ৩ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » রাজনীতি » বিশ্বনাথে বিএনপি-হেফাজতের পরিবারের প্রবাসী পেলেন নৌকার টিকেট
বিশ্বনাথে বিএনপি-হেফাজতের পরিবারের প্রবাসী পেলেন নৌকার টিকেট
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের বিশ্বনাথের খাজাঞ্চি ইউনিয়নে ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নৌকার টিকেট উঠেছে বিএনপি-হেফাজত পরিবারের এক প্রবাসীর হাতে।
তিনি ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা সৌদিআরব প্রবাসী আরশ আলী গণি। তৃণমুলে হেরেও কিভাবে তিনি নৌকার মনোনয়ন পেলেন এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে সর্বস্তরেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
জানা গেছে, আরশ আলী গণি বৃহত্তর সিলেট আওয়ামী পরিবার জেদ্দার সভাপতি। আওয়ামী লীগের কোন অঙ্গ বা সহযোগী কোন সংগঠনের সাথে জড়িত নন তিনি ।
এমন কি তার পরিবারের কেউই আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত নয়। আপন ভাই আনছার মাহমুদ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক। আপন আরেক ছোটভাই আবিদ মাহমুদ গণি খেলাফত মজলিসের সাধারন সম্পাদক।
আপন চাচাতো ভাই শওকত আলী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি। পারিবারিকভাবে তারা এলাকায় আওয়ামী লীগ এন্ট্রি হিসাবে পরিচিত। তার বাবা প্রয়াত আব্দুল গণিও ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ছিলেন।
গত ২১ ডিসেম্বর নৌকার মনোনয়নের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের তৃণমুলের ভোট অনুষ্ঠিত হয়। সর্ব্বোচ্য ১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শংকর চন্দ্র ধর।
৭ ভোট পান প্রবাসী আরশ আলী গণি। আর ৩ ভোট পেয়ে ৩য় হন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মুহিবুর রহমান সুইট।
কিন্তু গত শনিবার রাতে চুড়ান্ত মনোনয়ন পান প্রবাসী নেতা আরশ আলী গণি। আওয়ামী লীগ দলের সাথে যুক্ত না হয়েও বা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যোগদান না করে কিভাবে নৌকার মনোনয়ন পেলেন সেই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।
এ ব্যাপারে তৃণমুলে বিজয়ী প্রার্থী শংকর চন্দ্র ধর সাংবাদিকদের বলেন, তৃণমুলে উপজেলা, জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাব আমার পক্ষে গেলেও কালো টাকার কাছে আমি হেরে গেছি।
তিনি বলেন, ব্যক্তি যেই হোক এখন নৌকার পক্ষেই কাজ করতে দলকে সংগঠিত করা হচ্ছে।
অপর প্রার্থী মুহিবুর রহমান সুইট বলেন, খাজাঞ্চি ইউনিয়ন নির্বাচনে বিএনপি-হেফাজতের হাত থেকে স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা রক্ষা করা যায়নি।
বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় আওয়ামী এন্টি পরিবারের হাতে নৌকাকে বিক্রি করে দেয়া হলো। দূর্দিনের কর্মিদের অবমূল্যায়ন করে অনুপ্রবেশকারীর হাতে নৌকা দিয়ে স্বাধীনতার প্রতীককে কলংকিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, সবকিছু পরে নৌকা প্রতীক যেখানে আমি, আমরা সেখানেই থাকবো।
তবে প্রবাসী আরশ আলী গণির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত আছি। আমি বৃহত্তর সিলেট আওয়ামী পরিবার জেদ্দার সভাপতি।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সদস্য। তবে, কোন শাখার সদস্য তা তিনি বলতে পারেননি। তার পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের নেতা বা সমর্থক আছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বুঝতে পারছি না, এখন ব্যস্ত, পরে কথা বলছি বলে ফোন রেখে দেন।
এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ফারুক আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, নৌকার মনোনয়ন দিতে তৃণমুলের ভোটের পাশাপাশি স্থানীয় ভোটের মাঠ নিয়ে বেশ কয়েকটি রিপোর্ট হয়।
তারই প্রেক্ষিতে ভোটের মাঠের অবস্থান অনুযায়ী কেন্দ্র প্রার্থী নির্ধারন করে।
তিনি আরও বলেন, আরশ আলী গনি একজন প্রবাসী, গত ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকার পক্ষে তিনি কাজ করেছেন। ইতিমধ্যে এলাকায় তিনি একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন।
তাছাড়া উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে ভাল সম্পর্ক রয়েছে তার। প্রার্থী বিবেচনা না করে উন্নয়নের প্রতিক নৌকায় ভোট দিতে তিনি ইউনিয়নবাসীকে আহবান জানান।
প্রসঙ্গত, ৬ষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ ৩ জানুয়ারি।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ৬ জানুয়ারি, মনোনয়পত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ৭ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিস্পত্তি ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৩ জানুয়ারি। প্রতীক বরাদ্ধ ১৪ জানুয়ারি।
বিশ্বনাথে স্বতন্ত্রের চার বিএনপি নেতার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে লামাকাজী ও খাজাঞ্চি ইউনিয়নে বইছে নির্বাচনী আমেজ।
ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে দুটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে চলছে সরগর প্রচারনা।
ষষ্ঠ ধাপের এই ইউনিয়ন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহন না করার সীদ্ধান্ত নিলেও লুভ সামলাতে পারছেন না এই দুটি ইউনিয়নের বাসিন্দা বিএনপি নেতারা।
দলীয় প্রতীক না হলেও তারা স্বতন্ত্রের মুখোশে নির্বাচন করবেনই।
এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে দুটি ইউনিয়ন নির্বাচন করতে চারজন বিএনপি নেতা উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
আজ ৩ জানুয়ারি উপজেলা নির্বচন অফিসে মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ। তাই নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ শুরু করছেন তারা।
গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুটি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন করতে যে চারজন বিএনপি নেতা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন তাদের মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান দু’জন ও বাকি দু’জন নতুন চেয়ারম্যান প্রার্থী।
তারা হচ্ছেন, লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা কবির হোসেন।
এবং বাকি তিনজন হচ্ছেন, বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাবেক জেলা বিএনপি নেতা তালুকদার গিয়াস উদ্দিন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শরিফ আহমদ রাজু ও উপজেলা সেচ্চাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক কয়েছ মিয়া।
জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী কয়েছ মিয়া জানান, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না করার জন্য কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনা রয়েছে।
কিন্তু আমরা কৌশলগত ভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে। ফলে তিনি ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের সিদ্ধান্ত নিয়েই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন সাংবাদিক নূর উদ্দিন
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ষষ্ঠ ধাপে আগামী ৩১ জানুয়ারী ৫নং ওয়ার্ডে মেম্বার পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাংবাদিক নূর উদ্দিন।
তিনি সোমবার (৩ জানুয়ারী) দুপুরে সমর্থকদের সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে এই মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
এসময় নূর উদ্দিনের সাথে ছিলেন, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সভাপতি তজম্মুল আলী রাজু, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুর রহমান মিলাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রনঞ্জয় বৈদ্য অপু, সদস্য মো. আবুল কাশেম, সাংবাদিক নবীন সুহেল, কামাল মুন্না, এলাকার মুরব্বি জবেদ আলী, জমির উদ্দিন, খায়রুল ইসলাম মনু মিয়া, ফরিদ মিয়া, প্রাস্তাবকারী আবু বকর রুহেল, সমর্থককারী মোজাহিদ আলী, সংগঠক আব্দুল আমিন, নিজাম উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন প্রমুখ।
বিশ্বনাথে বিপুল উৎসাহ-উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে বিপুল উৎসাহ-উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে সোমবার বিকেলে শেষ হয়েছে উপজেলার ৭ ইউনিয়ন পরিষদের মনোনয়নপত্র গ্রহন।
আগামী ৩১ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য ষষ্ঠ ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্দ্বীতা করার জন্য উপজেলার লামাকাজী ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ১২ জন, ১৮টি ওয়ার্ডে সদস্য (মেম্বার) পদে ৯৫ জন ও ৬টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য পদে ২৫ জন প্রার্থী নিজেদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
এর মধ্যে লামাকাজী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ৯টি ওয়ার্ডে সদস্য (মেম্বার) পদে ৫১ জন ও ৩টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য পদে ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন এবং খাজাঞ্চী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন, ৯টি ওয়ার্ডে সদস্য (মেম্বার) পদে ৪৪ জন ও ৩টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত (মহিলা) সদস্য পদে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
আগামী ৬ জানুয়ারী মনোয়নপত্র বাছাই করা হবে, ১৩ জানুয়ারী প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও ১৪ জানুয়ারী বৈধ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্ধ করা হবে এবং ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে ৩১ জানুয়ারী।
এবারের নির্বাচনে এই দুই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী থাকলেও নেই জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী। অপরদিকে, বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহন না করলেও নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করতে একাধিক প্রাথী অংশগ্রহন করেছেন।
লামাকাজী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারীরা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য কবির হোসেন ধলা মিয়া, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফয়ছল আহমদ, বিএনপি নেতা গোলাম কিবরিয়া তালুকদার, আবেদুর রহমান আছকির ও সতন্ত্র প্রার্থী মো. আতাউর রহমান।
খাজাঞ্চী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারীরা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য তালুকদার গিয়াস উদ্দিন, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বৃহত্তর সিলেট আওয়ামী পরিবার জেদ্দার সভাপতি আরশ আলী গণি, বিএনপি নেতা কয়েছ মিয়া, আশিকুর রহমান রানা, কয়েছ মিয়া, শরীফ আহমদ রাজু, সতন্ত্র প্রার্থী মো. আতাউর রহমান কালু মিয়া ও মো. আব্দুল বাছিত।