মঙ্গলবার ● ৪ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জন জীবন
ঝিনাইদহে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জন জীবন
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ::কনকনে শীত আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ও ঘন কুয়াশায় তীব্র শীতের কারণে ঝিনাইদহের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোরে জেলা শহরে কাজের সন্ধানে আসা হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর গ্রামর মোসলেম উদ্দিন তিনি জানান, কাজের সন্ধানে জেলা শহরে এসেছি। এসে ঘন কুয়াশায় আর কনকনে শীতে কাজ না পাওয়ায় পোস্ট অফিস মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছি।শুনেছি ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক রাতের বেলাশ কম্বল বিতরণ করছে শীতার্ত মানুষের মাঝে।তাই আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে বলতে চাই তিনি যদি ভোরবেলা বেরিয়ে আমাদের মত নিন্মআয়ের মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করতেন তাহলে কিছুটা শীত নিবারণ করতে পারতাম। অপরদিকে শহরের কাঞ্চনপুর এলাকা থেকে ছামছুল নামের অপর শ্রমিকের সাথে কথা হলে তিনি জানান,আজ এতটাই শীত অনুভূত হচ্ছে যার কারণে ঠান্ডা লাগছে।তাই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছি। ঝিনাইদহ শহরের বর্তমান তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস দেখাচ্ছে গুগল মাধ্যমে দেখা গেছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া জেলা শহর ভোর থেকে উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে বেলা যতই বাড়ছে ততোই শীতের তীব্রতা যেন বাড়ছে।সকাল নয়টা পার হলেও এখনো সূর্যের মুখ দেখা যায়নি কোথাও। কনকনে শীতের কারণে শহরে লোকজন একটু কম। সকাল ৮টা বাজলেও সূর্য না ওঠায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে জেলার ছয়টি উপজেলার উপর দিয়ে উত্তরের হিমেল হাওয়া বয়ে চলেছে সেই সাথে কুয়াশার কারণে প্রচন্ড শীত অনুভূত হচ্ছে । এ অবস্থায় আজ ভোর থেকে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গরম কাপড়ের দোকানগুলোতেও ভিড় বেড়েছে। গ্রামের মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। সকাল থেকে গ্রামের বাজারে লোকজনের চলাচল অনেকটা কমে গেছে।এমনকি জেলা শহরে লোকজন কম।তবে গত কয়েক দিন থেকে হঠাৎ করেই শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। এলাকার বেশিরভাগই খেটে খাওয়া মানুষ শীতে ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে।প্রায় বাড়িতেই গরম কাপড়ের অভাব। সরকারিভাবে শীতবস্ত্র জেলা শহরে বিতরণ করা হলেও এখনো গ্রামে শীত বস্ত বিতরণ শুরু হয় নি। এলাকার মানুষ বাধ্য হয়ে খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।তাদের মতে তাদের পরিবারের সকলেই শীতে কষ্টে আছে। আমরা খড় জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি। কৃষকরা জানান, শীত বেড়ে যাওয়ায় বীজতলার বীজ নষ্ট হওয়ার আশংকা করছে কৃষকেরা। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ঠান্ডাজনিত রোগও বাড়ছে। ঝিনাইদহ পৌর সভার সামনে ড্রাইভার আব্দুর রহিমের সথে কথা বললে জানান, ঘন কুয়াশার সাথে উত্তরে হিমেল হাওয়ার করণে কনকনে ঠান্ডা লাগছে এর ফলে আমি ইজিবাইক চালাতে পারছি না।
ভিক্ষুক মুক্ত ঝিনাইদহে ভুয়া ভিক্ষুক ঠেকাতে ঝিনাইদহে অন্ধ ও প্রতিবন্ধি ভিক্ষুকদের কমিটি গঠন
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে অন্ধ ও প্রতিবন্ধি ভিক্ষুকদের কমিটি গঠিত হয়েছে। শনিবার (১ জানুয়ারী) শহরের পায়রা চত্ত্বরের বটতলায় এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক আঃ হাকিম নির্বাচিত হয়েছে। সহ-সভাপতি হারুন অর রশীদ, সহ সম্পাদক মোছাঃ চম্পা খাতুন, দপ্তর সম্পাদক মোছাঃ সুফিয়া বেগম,প্রচার সম্পাদক, আঃ খালেক, কোষাধ্যক্ষ মোঃ সাহেব আলী। এছাড়া নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছে অসীম কুমার ও রেকছোনা বেগম। সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, অনেকেই ভুয়া প্রতিবন্ধি ও রোগ গ্রস্থ সেজে ঝিনাইদহে এসে ভিক্ষা করে চলে যায়। পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতার কথা বলে সাহায্য নিয়ে যায়। মাদকসেবীরাও ভিক্ষা করে। আমাদের কমিটি এসব চিটারদের প্রতিহত করবে। সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনেই অন্ধ এবং বাকি সদস্যরা প্রতিবন্ধি। উল্লেখ্য ঝিনাইদহ ভিক্ষুক মুক্ত জেলা।
মহেশপুরে ছাত্র-ছাত্রীদের বেধড়ক পিটিয়ে প্রধান শিক্ষক পালন করলেন বই উৎসব
ঝিনাইদহ :: করোনার পরিস্থিতির কারণে এ বছরও বই উৎসব হয়নি। তবে নতুন বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে শনিবার (১ জানুয়ারী) থেকে। সারাদেশের ন্যায় ঝিনাইদহের মহেশপুরেও প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উৎসব মুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বই উৎসবের দিন মহেশপুর উপজেলার ২৯ নং সামান্তা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটে গেল এক নেক্কার জনক ঘটনা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক এমদাদ জাহিদের বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে স্কুল চত্তরে বই উৎসবের দিন সকল শিক্ষার্থীরা নতুন বই নিতে স্কুল প্রাঙ্গনে হাজির হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। লাইন এলোমেলো হলে প্রধান শিক্ষক এমদাদ জাহিদ হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে বেতের লাঠি দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মারপিট শুরু করেন। শিক্ষকের এমন আচারণে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আবুল হোসেন নামের এক অভিভাবক বলেন, বছরের প্রথম দিন আমাদের সন্তানরা স্কুলে গিয়েছে আনন্দের সাথে নতুন বই নিতে। কিন্তু স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিজেই ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পিটিয়েছেন এটা আমরা আশা করিনি। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামিম মিয়া বলেন, লাইন এলোমেলো হওয়ার কারণে প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে শুনেছি। তবে কোমলমতি শিশুদের অন্যায় হলেও তার মারধর করা উচিত হয়নি। প্রধান শিক্ষক এমদাদ জাহিদ শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, নতুন বছরের নতুন বই নিতে আসা শিক্ষার্থীদের লাইনে দাঁড়িয়ে বই নিতে লাঠি হাতে ভয় দেখিয়ে লাইন ঠিক রাখার চেষ্ঠা করেছি মাত্র। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু হাসান বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না।এবিষয়ে আমাকে কিছুই বলেননি। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহ বারবাজার হাইওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজীর অভিযোগ
ঝিনাইদহ :: করোনাকালীন সময়ের প্রথম দিকে কিছুদিন চাঁদাবাজী বন্ধ থাকার পর আবারো বিভিন্ন পরিবহন থেকে ব্যাপক ভাবে চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ বারবাজার হাইওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। হাইওয়ে পুলিশের চাঁদা বাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বাস, ট্রাক, মাইক্রো, প্রাইভেট, সিএনজি, আলমসাধু, নছিমন করিমসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষার নামে এসব চাঁদাবাজী করা হচ্ছে। এ ছাড়া হাইওয়ে রোড দিয়ে চলাচল করা দুরপাল্লার অনেক পরিবহনের সাথে রয়েছে হাইওয়ে পুলিশের মাসিক চুক্তি। যেসব গাড়িতে চুক্তি নেই শুধু সেই গাড়ি গুলি আটক করে মামলা দিচ্ছেন তারা এমন অভিযোগ করেছেন অনেক চালক। এ ছাড়া ইজিবাইক, মাইক্রোসহ অন্যান্য গাড়ি থেকেও মোটা অংকের উৎকোচ আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া বারবাজার হাইওয়ে থানার সামনের একটি দোকানে গাড়ির চোরাই তেল বিক্রি করা হয়। সেখান থেকেও হাইওয়ে পুলিশ মোটা অংকের উৎকোচ আদায় করে থাকেন। সম মিলিয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি করছেন বারবাজার হাইওয়ে পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চালক জানান, কুষ্টিয়া-যশোর রোডের একাধিক স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে প্রতিনিয়ত হাইওয়ে পুলিশ উৎকোচ আদায় করছেন। উৎকোচ দিতে না চাইলে সেসব গাড়িতে মামলা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া দুরপাল্লার অনেক বাস, ট্রাক, স্থানীয় মাইক্রো, প্রাইভেট, আলমসাধু, ইজিবাইক চালকদের সাথে রয়েছে মাসিক চুক্তি। প্রতি মাসের নির্ধারিত দিনে এসব খাত থেকে লাখ লাখ টাকার চাঁদা আদায় করছে হাইওয়ে পুলিশ। মাসিক চুক্তিতে রাজি না হলে সেসব গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়াসহ গাড়ি রিক্যুজিশনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মূলত রোড ডাকাতি ও সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে হাইওয়ে পুলিশ গঠন করা হলেও তারা এখন ব্যস্ত আছেন চাঁদাবাজিতে। প্রতি মাসে সড়কে চলাচলা করা গাড়ি থেকে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা উত্তোলন করছেন। গত ২৬ ডিসেম্বর ভোর রাতে ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর নামক স্থানে পোশাক পরা অবস্থায় হাইওয়ে পুলিশের একটি দল ট্রাক থেকে চাঁদা উত্তোলন করেছেন বলে একাধিক ড্রাইভার জানান। তাদের চাঁদাবাজিতে এ সময় সড়কে যানজটেরও সৃষ্টি হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাক ড্রাইভার বলেন, গাড়ির কাগজপত্র ঠিক থাকলেও চা নাস্তার কথা বলে তারা চাঁদা আদায় করে থাকেন। চাঁদা না দিলে গাড়ির নামে মামলা দেন। এ ভয়ে আমরা চাঁদা দিয়ে দি। আপনি আবার আমার নামটি পত্রিকায় লিখেন না। তাহলে পরবর্তীতে আমাকে ধরে মামলা দিয়ে দেবে। নুর ইসলাম নামের এক ইজিবাইক চালক জানান, আমরা গরীব অসহায় মানুষ। ইজিবাইক চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করি। কিন্তু হাইওয়ে রোড দিয়ে চলাচল করলে তারা আমাদের কাছ থেকে ১০০ অথবা ২০০ করে টাকা নিয়ে থাকেন। টাকা না দিলে গাড়ি আটকিয়ে মামলা দিয়ে দেয়। তখন আবার ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা খরচ হয়। এ ভয়ে চালকরা ঝামেলা এড়াতে টাকা দিয়ে দেয়। মাঝে মাঝে আবার চেক পোস্ট বসিয়ে বলে থাকেন হাইওয়ে রোড ছোট গাড়ি চালানো যাবেনা। সে সময় শত শত ইজিবাইক, আলমসাধু, সিএনজিসহ অন্যান্য ছোট যানবাহন আটক করে মামলা দেওয়া হয়। বর্তমান হাইওয়ে ওসি শেখ মেজবা উদ্দীন যোগদানের পর থেকে ব্যাপক ভাবে চাঁদাবাজী চলছে। তাদের কাছে চালকরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এসব চাঁদাবাজির বিষয়ে বারবাজার হাইওয়ে থানার ওসি শেখ মেজবা উদ্দীন বলেন, আমি আসার পর সকল চাঁদাবাজী বন্ধ করে দিয়েছি। আপনি খোঁজ খবর নিয়ে দেখতে পারেন। গত ২৬ ডিসেম্বর ভোরা রাতে পোশাক পরা অবস্থায় সড়কে দাঁড়িয়ে ট্রাক থেকে চাঁদা নেওয়ার বিষয়ে বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। আর যদি এ রকম হয় তাহলে আমি তা করতে দিব না। দুরপাল্লার পরিবহন ও স্থানীয় যানবাহন থেকে মাসিক টাকা উত্তোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন বিষয় আমার মাথায় আসছে না। তারপরও আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। আপনাদের মদদে বড় যানবাহনের চোরাই তেল বিক্রি হয়ে থাকে এবং সেখান থেকে মোটা অংকের উৎকোচও আদায় করেন এমন প্রশ্নের বিষয়ে তিনি বলেন বিষয়টি ঠিক না।