রবিবার ● ৯ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » হালুয়াঘাটে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর স্কুলছাত্রী দুই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মূল আসামিসহ গ্রেফতার ৬
হালুয়াঘাটে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর স্কুলছাত্রী দুই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মূল আসামিসহ গ্রেফতার ৬
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর স্কুলছাত্রী দুই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মামলায় মূল আসামি সোলায়মান হোসেন ওরফে রিয়াদ(২২)কে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আর ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ওই মামলার এজাহারভূক্তসহ আরও ৫ আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযান চালিয়ে হালুয়াঘাট থেকে মামলার প্রধান আসামি সোলায়মান হোসেন ওরফে রিয়াদকে আটক করা হয়। অন্য পাঁচ আসামিকে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ থেকে আটক করে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখা।
শনিবার (০৮ জানুয়ারি) সকালে র্যাব-১৪’র অধিনায়ক উইং কমান্ডার মোঃ রোকনুজ্জামান এ মামলায় মূল আসামি সোলায়মান হোসেন ওরফে রিয়াদকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ।
তিনি বলেন, গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে হালুয়াঘাট এলাকায় ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর স্কুলছাত্রী দুই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মামলায় মূল আসামি সোলায়মান হোসেন ওরফে রিয়াদকে হালুয়াঘাট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অপরদিকে গাজীপুর ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ৫ আসামিকে গ্রেফতার করে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ।
ডিবি’র হাতে গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হলেন-শরিফ মিয়া, মিজানুর রহমান, মোঃ মিয়া হোসেন, মোঃ রুকন মিয়া ও আবদুল হামিদ। এদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি ৪ জন এবং তদন্তে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় আব্দুল হামিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর স্কুলছাত্রী দুই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ৫ আসামিকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার (০৮ জানুয়ারী)দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।
উল্লেখ্য,স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানাযায়,গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে হালুয়াঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী ৫নং গাজিরভিটা ইউনিয়নের ডুমনিকুড়া গ্রামের দুই কিশোরী পাশের গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে নিজ বাড়ি ফেরার পথে হত্যার ভয় দেখিয়ে তুলে নিয়ে তাদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে স্থানীয় একদল বখাটে।
পরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে খুঁজতে বের হয়। এসময় তাদের দু’জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ভুক্তভোগী কিশোরীদের পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেওয়ায় আদিবাসী পরিবারের লোকজন ভয়ে মুখ খুলতে পারছিলেন না।ওই অবস্থায় দুই কিশোরী আত্মহত্যার চেষ্টাও করে।
পরবর্তীতে ঘটনাটি জানাজানি হলে ২৯ ডিসেম্বর হালুয়াঘাট থানার ওসি’র নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এরপর গত ৩০ ডিসেম্বর ১০ জনকে আসামি করে হালুয়াঘাট থানায় একটি মামলা করেন নির্যাতিতা এক কিশোরীর বাবা।
এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন সদস্য কচুয়াকুড়া গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে সোলায়মান হোসেন রিয়াদ (২২)। এছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন-কচুয়াকুড়া গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে শরিফ (২০), আবদুল হামিদের ছেলে এজাহার হোসেন (২০), কাটাবাড়ি গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে রমজান আলী (২১), তালেব হোসেনের ছেলে কাউছার (২১), দুলাল মিয়ার ছেলে আছাদুল (১৯), মাহতাব উদ্দিনের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২১), আবদুল মতিনের ছেলে মিজান (২২), মফিজুল ইসলামের ছেলে রুকন (২১) এবং বকুল মিয়ার ছেলে মামুন (২০)।
এদিকে, দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে উপজেলার সীমান্ত এলাকায় দফায় দফায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন আদিবাসীসহ স্থানীয় এলাকাবাসি।