শনিবার ● ১৯ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » তথ্যপ্রযুক্তি » দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে উদ্ভাবক নজরুল ইসলামের কলম পদ্ধতিতে বাঁশ চাষ
দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে উদ্ভাবক নজরুল ইসলামের কলম পদ্ধতিতে বাঁশ চাষ
রাজেশ বাসফোর ,গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: (১৯ মার্চ ২০১৬ : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩০মিঃ) আধুনিক কাটিং ও কলম পদ্ধতিতে বাঁশ চাষ করে গাইবান্ধার কৃষকরা সফলতার মুখ দেখছেন ৷ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই পদ্ধতিতে বাঁশ চাষ ৷ এক দিকে সফলতা দেখে যেমন অনেকেই উতসাহিত হচ্ছে অপরদিকে উদ্ভাবক নজরুল ইসলামের এই পদ্ধতিতে বাশ চাষ গাইবান্ধা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলাতেও জনপ্রিয় হচ্ছে ৷
পুরাতন পদ্ধতিতে বাশ লাগানোর পর বাশের উত্পাদন কমে যাওয়ায় বিলুপ্ত প্রায় বাশ ঝাড় দেখে গাইবান্ধার কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকতার্, কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম বাশ ঝাড় রক্ষায় চেষ্টা করতে থাকেন ৷ এক পর্যায়ে চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে নিরলস ভাবে গবেষনা শুরু করেন ১৯৬৮ সালে থেকে ৷ প্রথমেই কাটিং পদ্ধতিতে বাশ চাষে করেন কিন্তু কোন ভাবেই এই পন্ধতিতে বাশ চাষের ফলতা আসছিলো না ৷ এভাবে প্রতি বছরই গভেষনা করতে থাকেন আর নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করেন। কিছুদিন পরে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ তার পর তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবার শুরু করেন কাটিং পদ্ধতিতে বাশ চাষ করার গভেষনা ৷ তার পরোও কাটিং পদ্ধতিতে বাশ চাষে কোন ভাবেই সফলতা আ্সছে না বাশের চারা গুলো কিছুদিন পরে মারা যাচ্ছিলো ৷ তবুাও তিনি পিছপা হননি এভাবেই বিভিন্ন নিয়মে বাশ এর কাটিং পদ্ধতি চালিয়ে যায় ৷ দীর্ঘ ১১ বছর এই পদ্ধতিতে বাশ চাষে ব্যার্থ হওয়ার পর ১২ বছরের সফলাতার মুখ দেখেন ৷ তার পরে শুরু করের এই কলম/কাটি্ং পদ্ধতিতে বাশ চাষ ৷ প্রথমে নিজের বাড়িতে পরে গাইবান্ধার অনত্মত ২০ গ্রামের ৩০ বিঘা জমিতে কাটিং পদ্ধতিতে বাশ চাষ করেন ৷
এই পদ্ধতিতে বাশ চাষ করে খুব অল্প সময়ে বাশ ব্যবহার উপযোগী হয়৷ বিক্রিও করা যায় এবং নিজের কাজেও লাগানো যায় ৷ তার উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে বাশ চাষ জনপ্রিয় হলে তার ডাক পড়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ৷ তার উদ্যোগে দেশের কয়েকটি জেলায় তিনি এই পদ্ধতিতে বাশ চাষ করেন ৷ সেখানেও তার সফলতা আসে ৷
এই পন্ধতিতে বাশ চাষ করেন সাবেক সাঘাটা উপজেলার চেয়্যারম্যান আলতাফ হোসেন সরকার ৷ ২০০৪ সালে তিনি উদ্ভাবক নজরুল ইসলামের পরামর্শে এই কাটি্ং পদ্ধতিতে ৩ বিঘা জমিতে বাশ চাষ লাগান ৷ ২০০৮ সাল থেকে তিনি বাস বিক্রয় ও নিজের প্রয়োজনে কাটতে শুরু করেন ৷ এই বাশ ঝাড় থেকে বছরে এক থেকে দেড় লাখ টাকার বাশ বিক্রি করেন ৷ এ পর্যন্ত ১৫ লাখ টাকার বাশ বিক্রি করেছেন ৷ আরও প্রায় ২৫ লাখ টাকার বাশ বিক্রির উপযোগি হয়েছে উঠেছে ৷ এই কটিং পদ্ধতির বাশ ঝারের পশেই ছিলো পরানো - আগের বাশ ঝাড় ৷ যা থেকে বছরে ১০ হাজার টাকার বাশ বিক্রয় করা সম্ভয় হয় না ৷ বাশ চাষী আলতাফ হোসেন সরকার জানান এই পদ্ধতিতে বাশ চাষ করে অল্প সময়ে বাশ বড় এবং মোটা হয়৷ তাছাড়া অন্য গাছ ও ফসলের চেয়ে অল্প সময়ে এই পদ্ধতিতে বাশ চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব ৷
এক পর্যায়ে শুধু গাইবান্ধায় নয় দেশের বিভিন্ন জেলায় উদ্ভাবক নজরুল ইসলামের এই বাশ চাষের মাধ্যমে তিনি সফলতা এনেছেন ৷ কুমিল্লা ,চাদপুর, সিলেট , পঞ্চগড়, নওগা, জেলায় তিনি এই পদ্ধতিতে বাশ চাষ করেছেন ৷ তিনি জানান যতো দিন বেচে থকবেন কৃষকের পাশে থাকবেন এবং কৃষকের সাথে কাজ করবেন ৷ দেশের যে কোন জেলার কৃষক চাইলে তার সাথে যোগাযোগ করে এই বাশ চাষ করতে পারবেন ৷
এই বিষয়ে গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, আ ক ম রুহুল আমীন উদ্ভাবক নজরুল ইসলামের বাশ চাষের সফলতার কথা স্বীকার করে বলেন ,কৃষি বিভাগ থেকে তার কাজের উত্সাহ বাড়াতে কৃষকদের মাঝে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হবে ৷
উদ্ধাবক নজরুল ইসলামের ফোন নম্বর- ০১৭১৬২৪৪৬৭৮