মঙ্গলবার ● ১৮ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » মোরেলগঞ্জে জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা প্রভাবশালীদের মৎস্যঘের
মোরেলগঞ্জে জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা প্রভাবশালীদের মৎস্যঘের
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট প্রতিনিধি :: :বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ জনগুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা প্রভাবশালী ঘেরে ব্যবসায়ীদের কারনে বিলীণ হবার উপক্রম হয়েছে। জিউধরা ইউনিয়নের জয়বাংলা বাজার হয়ে ঘরামির বাজার পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার ইটসোলিং এ রাস্তাটি ঘেরের ভেরি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় এর পাশে থাকা সামাজিক বনায়নের গাছগুলো ভেঙ্গে পড়েছে। ইটসহ রাস্তার মাটি ধুয়ে নেমে গেছে ঘেরের মধ্যে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ৬-৭টি গ্রামের শতশত মানুষ। এ রাস্তা থেকে এখন আর ভ্যানগাড়িও চলাচল করতে পারেনা।
জানা গেছে, ক্ষামতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক আহবায়ক মো. নুরুল ইসলাম মৃধা প্রায় ৪০ বিঘা জমির একটি মৎস্য ঘেরের ভেরিবাধ হিসেবে সরকারি ওই রাস্তাটি কয়েক বছর ধরে ব্যবহার করে আসছেন। ফলে রাস্তার পূর্ব পার্শ্বে থাকা সামাজিক বনায়নের শতশত গাছ ঘেরের মধ্যে ভেঙ্গে পড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। একই সাথে সরকারি এ রাস্তাটির ইটসহ মাটিও ধুয়ে নেমে গেছে ঘেরের মধ্যে।
১২ ফুট চওড়া ইটসোলিং রাস্তাটিতে এখন ভ্যান চলার মত জায়গা নেই। রাস্তার ইট ও গাছ ঘেরের মধ্যে পড়ে থাকলেও এ বিষয়ে কারো কোন মাথাব্যাথা নেই। ২০০২ সালে সরকারিভাবে এ রাস্তাটিতে ইটসোলিং এর কাজ করানো হয়। এরপরে আর সংস্কার করা হয়নি। এখন এ রাস্তা থেকে শুধু পায়ে হেটেই চলাচল সম্ভব। চলছেনা কোন দ্রæতযান।
রাস্তাটি থেকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা শহর, লক্ষীখালী বাজার, জিউধরা বাজার, মাদরাসা বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ, চন্দনতলা, বটতলা, ঠাকুরাইনতলা, বরইতলা, জিউধরা ও সীমান্তবর্তী মোংলা উপজেলায় যাতায়তের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
এ রাস্তাটি থেকে প্রতিনিয়ত সেরজন স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গোপালচাঁদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ জিউধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বটতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঠাকুরাইনতলটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চন্দনতলা কমিউনিটি ক্লিনিক, ৭টি মসজিদ, শ্রীধাম লক্ষীখালীর গোপাল চাঁদ সেবাশ্রমসহ ৫টি মন্দির, ৪টি খাবার পানির পুকুরে শতশত মানুষের যাতায়ত করতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহতাব মৃধা, কামাল মৃধা, বেনীমাদব মিস্ত্রীসহ স্থানীয়রা জানান ৭-৮ বছর ধরে তারা ভূগছেন। বর্ষা মৌসুমে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লেও চিকিৎসার জন্য এখান থেকে দ্রুত শহরে নেওয়া সম্ভব হয়না। ভূক্তভোগীরা রাস্তাটি পূন:নির্মানের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে রাস্তা সংলগ্ন ঘের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম মৃধা বলেন, স্থানীয় কবির ঘরামীসহ যৌথভাবে কয়েকজনে মিলে ঘেরটি তারা করছেন। রাস্তার কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। শীঘ্রই রাস্তার পাশে ভেরিবাধ দিয়ে ঘের করা হরে। যাতে রাস্তাটি আর ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন, ঘের ব্যবসায়ীদেরকে রাস্তা ছেড়ে পৃথক ভেরিবাধ দিয়ে ঘের করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তারা তা না মেনে রাস্তাটিকে ভেরি হিসেবে ব্যবহার করে রাস্তার অনেক ক্ষতি করেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাঙ্গীর আলম বলেন, শীঘ্রই বিষয়টি সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।