বৃহস্পতিবার ● ২০ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ঝালকাঠিতে ভুয়া ডিবি আটক
ঝালকাঠিতে ভুয়া ডিবি আটক
ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: কখনো পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্য, কখনো জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সদস্য, কখনো মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত, আবার কখনো সাংবাদিক দাবীকারী যুবক রাশেদ খান অবশেষে পুলিশের খাচায়। বয়স মাত্র ২৫ থেকে ৩০ এর কোঠায়।
বুধবার রাত সারে ১১ টায় ঝালকাঠি কাঠপট্টি কলাবাগান এলাকায় গিয়ে কয়েকজন কিশোর ছেলেকে পিটানোর অভিযোগে রাশেদ নামের এক যুবককে ধরে ফেলে স্থানীরা।
কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা টিটু তালুকদার বলেন, রাসেদকে স্থানীরা ধরে ফেলার পরে সে নিজেকে মাদকনিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের লোক বলে পরিচয় দেয়। এরপর রাশেদকে স্থানীরা মারধর করতে গেলে সে তখন নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়।
পৌর এলাকার ৮নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান হাবিল বলেন, ঘটনার সময় রাশেদ নামের ঐ যুবককে গনপিটুনি থেকে রক্ষা করা এবং উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করার জন্য রাতেই তাকে থানায় ধরিয়ে দেয়া হয়।
শুভ আহম্মেদ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ঘটনার সময় লাইভে থাকতে দেখা গেছে। ৩ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের লাইভ ভিডিওটিতে দেখা গেছে রাশেদ এবং তার এক সহযোগীকে একটি দোকানের সামনে দার করিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে থানা পুলিশ, কাউন্সিলর এবং স্থানীয় লোকজনের বেশ উপস্থিতিও ছিলো। ভুয়া ডিবি বলে লোকজনের হইচই’র এক পর্যায়ে রাশেদ ও তার সাথে থাকা অপর যুবককে সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল মালেক এর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা গাড়ীতে তুলে থানায় নিয়ে যায়।
রাসেদ খান ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান আরিফুর রহমানের ভাইয়ের ছেলে এবং চেয়ারম্যানের ব্যাক্তিগত ক্যামেরাপার্সন হিসেবেও বিভিন্ন সময় পরিচয় দিয়েছে। তাকে উপজেলা চেয়ারম্যানের সকল কর্মসূচীতেও ছবি তুলতে দেখা যায়। “খান আরিফুর রহমান সমর্থক গোষ্ঠি” নামের একটি ফেসবুক আইডি রয়েছে, সেটিও এই রাশেদ অপারেট করে বলে জানিয়েছে অনেকে। তবে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান খান আরিফুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, রাশেদ তার ব্যাক্তিগত ক্যামেরাম্যান নয়।
এই রাশেদ গত ঈদুল ফিতরের দিন ঝালকাঠি গাবখান সেতুতে একটি সংগঠনের সদস্যদের কাছে নিজেকে এনএসআই সদস্য পরিচয় দিয়েছে বলে জানাগেছে। শেখেরহাট আইডিয়াল ইয়ুথ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মিসকাত উন নুর তাহসিন ঐ দিনের ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, ঈদের দিন গাবখান সেতুর উপরে রাশেদ অনুমতি না নিয়ে তাদের ছবি তুলেন, তখন রাশেদের পরিচয় জানতে চাইলে নিজেকে এনএসআই সদস্য পরিচয় দেয়। একই অভিযোগ করে সংঙ্গীত শিল্পি শান্তা ইসলাম জানান তার কাছেও একদিন গোয়েন্দা সংস্থার লোক পরিচয় দিয়েছিলো। ঐ সময় শান্তা তার ফেসবুক আইডিতে তাদেরকে নিয়ে একটি ষ্ট্যাটাস দিয়েছিলো।
ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, রাতে খবর পেয়ে রাশেদকে থানায় নিয়ে আসা হয়। নিজেকে আইনের লোক পরিচয় দেয়া এবং অনেককে মারধর করার অভিযোগ থাকায় তার বিরুদ্ধে ১৭০ ধারায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক সালাহউদ্দিন তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যাবস্থা নিবেন বলেও জানান ওসি খলিলুর রহমান।