সোমবার ● ২৪ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » শ্বশুর বাড়িতে জামাইকে হত্যার অভিযোগ
শ্বশুর বাড়িতে জামাইকে হত্যার অভিযোগ
কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: কুষ্টিয়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে নাসির বিশ্বাস (৩৪) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে কুষ্টিয়া শহরতলীর বটতৈল ইউনিয়নের লাহিনী বটতলা এলাকার খন্দকার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নাসির সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের কাথুলিয়া গ্রামের সাজ্জাক বিশ্বাসের ছেলে। তিনি ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ছিলেন। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪ বছর আগে লাহিনী বটতলা এলাকার খন্দকার পাড়ার শওকত আলীর মেয়ে সুমাইয়া খাতুন কাঞ্চনকে প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ে করেন নাসির বিশ্বাস। পরে তাদের মেনে নেয় দুই পরিবার। তাদের সংসার ভালোভাবেই চলছিল। গতকাল রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যান নাসির। পরে সোমবার সকালে তার পরিবার জানতে পারে নাসির মারা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। নাসিরের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, নিজেই ঘরের মধ্যে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে নাসির। মরদেহ দড়ি থেকে নামিয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এদিকে নিহত নাসিরের ছোট ভাই নাজমুলের দাবি, নাসিরকে হত্যার পর তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে। নাসিরের স্ত্রী সুমাইয়া প্রথম স্বামী ২০১৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। পরে ২০১৬ সালে প্রেম করে বিয়ে করে নাসির ও সুমাইয়া। আগের পক্ষের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই নাসির তার বাড়িতে থাকতো এবং সুমাইয়া ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। সুমাইয়া কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে বেড়াতে আসায় নাসির শ্বশুরবাড়িতে যায়। নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আমি তাদের শাস্তি চাই। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম বলেন,খবর পেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে জামাইয়ের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও লিখিত অভিযোগ করেনি কেউ।
কুষ্টিয়া ভেড়ামারায় ১৭টি ইটভাটায় অভিযান, ৪৩ লাখ টাকা জরিমানা
কুষ্টিয়া :: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ১৭টি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ৪৩ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এরমধ্যে একটি ইটভাটার চুলার (কিলন) কিছু অংশ ভাঙচুর করা হয়েছে। ২৩ তারিখ রোববার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলা এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদা পারভীন। এতে পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া অফিসের কর্মকর্তা, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা অংশ নেন। অভিযানে এমএইচটি ইটভাটাকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, আরএমবিকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার, এম আর আই ইটভাটাকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার, মানিক ব্রিকসকে ২ লক্ষ টাকা, এমএইচ ব্রিকসকে এক লক্ষ টাকা, মা ব্রিকসকে ১ লাখ, এএমবি ব্রিকসকে ৪ লক্ষ টাকা, বিবিএফ ব্রিকসকে ২ লক্ষ টাকা, এমবিএফ ব্রিকসকে ৪ লক্ষ টাকা, বিবিএফ ব্রিকসকে ৪ লক্ষ টাকা এবং ফোর স্টারকে দেড় লাখ টাকা, এএমবি ব্রিকসকে ২ লাখ, কে অ্যান্ড বিকে ৩ লাখ, এমআরএম ব্রিকসকে ৩ লাখ, এমএসএস ব্রিকসকে ৩ লাখ টাকা, এসআরবিকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও একতারা ইটভাটাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় বিবিএফ নামের ইটভাটার কিলন এ আংশিক ভাংচুর করা হয়। অভিযান চলাকালে দেখা যায়, অধিকাংশ ভাটা মালিকই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। কিছু কিছু ইটভাটায় জ্বালানি কাঠের স্তুপ একদিন আগে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। অনেক ভাটায় অভিযান পরিচালনাকারীদের জন্য বসার চেয়ার এনে পরিষ্কার করে রাখা হয়। আর অধিকাংশ জরিমানার টাকা প্রস্তুত ছিল, কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা বের করে দেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদা পারভীন জানান, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন ২০১৩ সংশোধিত ২০১৯ আইন অনুযায়ী এসব ভাটাকে জরিমানা করা হয়। সরেজমিন এসে ভাটাগুলো অবৈধ জায়গায় স্থাপিত এবং জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানোর প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি বলেন এভাবে অভিযান চালাতে চালাতে একসময় ভাটা গুলোকে আমরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আনতে পারব বলে আশা করি। আর জরিমানার পরিমাণ কম হয়েছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান তিনি। বলেন অধিকাংশ ভাটা মালিকেরই উচ্চ আদালতে রিট করা আছে। সে কারণে আদালতের নির্দেশনার বাইরে আমরা যেতে পারছি না। কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আতাউর রহমান জানান, কুষ্টিয়া জেলায় মোট ১৬১ টি ইটভাটা রয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ১৮ টি ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র রয়েছে। কিন্তু এসব ইটভাটা মালিক দীর্ঘদিন ধরে আইন লংঘন করে দিনের পর দিন ভাটা পরিচালনা করে আসছে। এর মধ্যে অনেকে আবার হাইকোর্টে রিট করে স্থগিতাদেশ এনে ইটভাটা পরিচালনা করছেন। অবৈধ এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, একটি অভিযান পরিচালনা করতে গেলে প্রশাসনের অনেকগুলো উইং কে সংযুক্ত করতে হয়। সে কারণে যে কোন জায়গা থেকে ভাটা মালিকদের কাছে আগেভাগে তথ্য ফাঁস হয়ে থাকতে পারে। তবে ভাটা মালিকদের পক্ষ থেকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।