শিরোনাম:
●   নতুন নির্বাচন কমিশন নাসির উদ্দীন ●   আত্রাইয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ●   ঈশ্বরগঞ্জে দন্ত চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় গুরুতর অসুস্থ রোগী ●   যমুনা রেলওয়ে সেতুর দ্বার উন্মোচন হতে যাচ্ছে : নির্মাণে ৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় ●   ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে পুলিশ পরিদর্শক শামছুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা ●   মিরসরাইয়ে বিশ্ব শিশু দিবস উদযাপন ●   চুয়েটে রিসার্চ বেজড টিচিং-লার্নিং ফর ইঞ্জিনিয়ারিং এডুকেশন ইন বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ●   আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ ●   ঈশ্বরগঞ্জে মাদক ব্যাবসায়ী সহ গ্রেফতার-৫ ●   বঞ্চিত ৪ উপজেলার প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি ●   রাউজানে যে হাটে বিক্রি হয় মানুষ ●   ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদের ৪৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় সংগ্রাম কমিটি গঠিত ●   নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে ‘দ্য হিন্দু’কে ড. ইউনূস ●   মুক্তিপণ আদায়ের পর মিথ্যা মামলা, দিশেহারা প্রবাসী পরিবার ●   পাইন্দং সংঘারাম বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান সম্পন্ন ●   ঈশ্বরগঞ্জে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার ●   চুয়েটে ‘উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটি’র ৪৬তম সভা অনুষ্ঠিত ●   ঈশ্বরগঞ্জে ব্রি ধান ৮৭ সম্প্রসারণে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত ●   কুষ্টিয়ায় ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকায় ধরা খেল শিক্ষক হেলাল ১১ লাখে দফারফা ●   শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠন সম্মাননা অর্জন করলো মিরসরাইয়ের দুর্বার প্রগতি সংগঠন ●   চুয়েটে শিমুল স্মৃতি আন্তঃঅনুষদ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু ●   ঈশ্বরগঞ্জে চোরাই মোটরসাইকেলসহ দুই চোর আটক ●   নবীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতিশ চন্দ্র দাসের পরলোকগম রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ●   বাজার নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান ●   রত্ন সাংবাদিকে ভূষিত হওয়াতে একেএম মকছুদ আহমেদকে সিএইচটি মিডিয়া পরিবারের অভিনন্দন ●   সিআরবি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাথে জেলা প্রশাসক এর সৌজন্য স্বাক্ষাত ●   জয়পুরহাটের কালাইয়ে আওয়ামীলীগ নেতার পা কেটে নিল প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতা ●   ঈশ্বরগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টা, হত্যা ও সাজাপ্রাপ্ত আসামীসহ গ্রেফতার-৪ ●   রাঙামাটি জেলা পরিষদে বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ●   চাল সিন্ডিকেটের মূলহোতা আব্দুর রশিদ কুষ্টিয়া পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার
রাঙামাটি, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
রবিবার ● ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলনের নেপথ্যে যারা
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলনের নেপথ্যে যারা
রবিবার ● ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলনের নেপথ্যে যারা

--- জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: এখন চলছে ভাষার মাস। যে ভাষায় আমরা কথা বলি সে ভাষাও প্রতিষ্ঠা করা হয় রক্ত দিয়ে। ভাষার জন্য আত্মহুতি পৃথিবীতে এক বিরল ঘটনা। ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলনে রয়েছে গর্বিত অধ্যায়। হাজারো বিকৃত ইতিহাস ও গুজব নির্ভর তথ্যে মধ্যে ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরে নতুন প্রজন্মের কাছে ঋনি হয়ে থাকলেন জীবিত ভাষা সৈনিক এড আমির হোসেন মালিতা। বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। মৌলিক অধিকার রক্ষাকল্পে বাংলা ভাষাকে ঘিরে সৃষ্ট এ আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তান অধিরাজ্যের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রয়ারিতে এ আন্দোলন চুড়ান্ত রূপ ধারণ করে। ভাষার জন্য জীবন দেন সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বারসহ অসংখ্য মানুষ। পুরোপুরি না হলেও কিছুটা ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলন নিয়ে। আর এই বিকৃতির কারণ হচ্ছে ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ ভাষা সৈনিকদের মৃত্যু। বর্তমান নতুন প্রজন্মের অনেকেই ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ভালোভাবে জানে না। প্রশাসনে আসা কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদরাও ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলনের খন্ডিত অংশ প্রচার করছে। ভাষা যুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে এখনো অনেকেই জীবতি। কিন্তু বয়সজনিত কারণে তারা ঠিকমতো স্মৃতি চারণ করতে পারছেন না। দুই বছর আগে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন জীবিত ৬ জন ভাষা সৈনিকের প্রতি সম্মান দেখিয়ে পোষ্টার তৈরী করেছিল। সেখানে তাদের ছবি শোভা পায়। কিন্তু অগ্রভাগে থাকা বেশ কয়েকজনের নাম রজনৈতিক কারণে বাদ দেওয়া হয়। ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলন নিয়ে কথা বলেছেন এমন একজন জীবিত সৈনিক হচ্ছে বিশিষ্ট আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও চলচিত্র পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মালিতা। ১৯৯৯ সালের ২১ ফেব্রয়ারি তিনি “ভাষা আন্দোলনে ঝিনাইদহ” নামে একটি বই প্রকাশ করেন। বইটিতে অনেক গুরুত্বপুর্ন তথ্য সন্নিবেশন করে তিনি ঝিনাইদহের তৎকালীন রাজনীতিবিদ, তাদের নেতৃত্ব, রাজাকার ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অজানা দালিলিক তথ্য প্রমান তুলে ধরেছেন। কারো পক্ষে তার লেখা এই ইতিহাস বিকৃত বা অস্বীকার করার হিম্মত নেই। কারণ তিনি সরাসরি ভাষা আন্দোলনের একজন জীবিত সৈনিক হিসেবে ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস তার বইতে উল্লেখ করেছেন। আমির হোসেন মালিথা তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেন, ঝিনাইদহ শহরে একজন কট্টরপন্থি মুসলিমলীগের সমর্থক চিকিৎসক ছিলেন। তাকে ‘হুগলী ডাক্তার’ বলে সবাই চিনতেন। ১৯৫২ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে তার মুখ থেকেই তখনকার ছাত্ররা ঝিনাইদহ শহরের কাজীর হোটেলে বসে বা দাড়িয়ে ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে খবর জানতে পারেন। কারণ তখন ঝিনাইদহে কোন পত্রিকা আসতো না। কোন পত্রিকায় ভাষা আন্দোলনের খবর ছাপা হতো না। ভারত থেকে একটি পত্রিকা আসতো, তাও আবার ২/৩ দিন পর। রাওয়ালপিন্ডি, লাহোর বা পাকিস্থানের কোন রেডিও স্টেশন ভাষা আন্দোলনের খবর প্রচার করতো না। তবে ভারতের আকাশবানীতে মাঝেমধ্যে ভাষা আন্দোলনের খবর প্রচার হতো। সে সময় আওয়ামী মুসলিমলীগের নেতা সিরাজুল ইসলাম পচা মিয়া ও ডাঃ কে আহম্মেদের বাসায় রেডিও শোনার সুবিধা পেতেন তরুন ছাত্র নেতারা। পাকিস্থানপন্থি সেই হুগলী ডাক্তার গল্পেরছলে একদিন বলে ফেলেন, “ছি ছি ছি ঢাকায় মুসলিম ছাত্রদের জবানে উর্দুর বদলে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই বলে আন্দোলন দেশটা রসাতলে নিয়ে যাবে”। সেখানে দাড়িয়ে থাকা তখনকার তরুন ছাত্রনেতা পরবর্তীতে উজির আলী হাইস্কুলের ইংরেজি শিক্ষক গোলজার হোসেন ও সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার জাহিদ ওরফে টিপু হুগলী ডাক্তারের উক্তিটি শোনেন। কিন্তু ভাষা আন্দোলনের কোন জ্ঞান তাদের ছিল না। তারা উভয় সবেমাত্র হাইস্কুলের ছাত্র। ৫২ সালের ফেব্রয়ারি মাসের ২/৩ তারিখে তৎকালীন ঢাকা কলেজের ছাত্র সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের মরহুম জহর আলী মিয়ার মেজো ছেলে এনামুল হক কোটন বাড়িতে আসেন। মুলত তার কাছ থেকেই ভাষা আন্দোলনের খবর ছড়িয়ে পড়ে। কোটন মিয়া সে সময় ঢাকা থেকে হ্যান্ডবিল, পোষ্টার, প্যাম্পপ্লেট ও গনসাক্ষরের জন্য কিছু ফরম নিয়ে আসেন। সেগুলো গ্রহন করেন নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আনোয়ার জাহিদ টিপু (সাবেক তথ্য মন্ত্রী), ভুটিয়ারগাতি গ্রামের গোলজার হোসেন, দরিগোবিন্দপুর গ্রামের সাব্দার হোসেন সাবু ও খাজুরা গ্রামের হাবিবুর রহমান প্রমুখ ছাত্রনেতারা। কোটন মিয়া ঝিনাইদহের তরুন ছাত্রনেতাদের হাতে প্রচারপত্র ধরিয়ে দিয়ে ভাষা আন্দোলনের পক্ষে গনসাক্ষর ও করণীয় পরামর্শ দিয়ে চলে যান। কোটন মিয়া হচ্ছে ঝিনাইদহের ভাষা আন্দোলনের অগ্রপথিক জাহিদ হোসেন মুসা মিয়ার ভাতিজা। তিনি চাচা জাহিদ হোসেন মুসা মিয়াকে যশোরে খবর দেওয়ার ব্যবস্থাও করে যান। জাহিদ হোসেন মুসা মিয়া তখন পুর্ব পাকিস্থান মুসলিম ছাত্রলীগের যশোর জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক ও কলেজ ছাত্র। এদিকে আন্দোলনমুখী ছাত্ররা সে সময় জাহিদ হোসেন মুসা মিয়ার ঝিনাইদহে আগমনের প্রত্যাশায় দিনগুনতে থাকেন। মুসা মিয়া না আসায় কোন কাজই ঠিকমেতা এগুচ্ছিলো না। না মিছিল মিটিং না গনসাক্ষর আদায় ও পোস্টারিংয়ের কাজ। মুসা মিয়া ঝিনাইদহে আসার পর তার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়। ভাষা আন্দোলনের উত্তাপ লাগে ঝিনাইদহে। ওই সময় ঝিনাইদহ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুরারী মোহন ঘোষাল ও সিনিয়র সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফার মাধ্যমে স্থানীয় ছাত্রনেতাদের গোপনে খবর দেন যে বাংলা ভাষার দাবীতে ২১ ফেব্রয়ারি সারা দেশে হরতাল ডাকা হয়েছে। আন্দোলনমুখী ছাত্ররা অসীম সাহস বুকে নিয়ে দিনক্ষন গুনতে থাকেন। কলেজ ছাত্র মুসা মিয়া আগেই সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নামে একটি কমিটি গঠন করে দেন। সেই কমিটির সভাপতি হন গোলজার হোসেন আর সাধারণ সম্পাদক হন ১০ম শ্রেনীর ছাত্র পরবর্তীতে সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার জাহিদ। কমিটিতে ডাঃ আব্দুল লতিফ ও আমীর হোসেন মালিতাও ছিলেন। মালিতাকে প্রচার সম্পাদক করা হয়। কমিটি গঠন ও ২১ ফেব্রয়ারির হরতাল সামনে করে উত্তাল হয় ঝিনাইদহ। এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সাহস যোগায় ঝিনাইদহ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুরারী মোহন ঘোষাল, সহকারী গোলাম মোস্তফা, শ্রী পন্নগভুষন মজুমদার, মকবুল হোসেন দেবেন্দ্রনাথ পন্ডিত, অরাজনৈতিক ব্যক্তি আলাউদ্দীন ওরফে আলা মিয়া, নঈম উদ্দীন আহম্মেদ, কবিরাজ নৃপেন্দ্র নাথ সেন, দ্বারক নাথ পন্ডিত, বাবু দেবেনগুপ্তসহ অনেকেই। ২১ ফেব্রয়ারি হরতালের খবর ঝিনাইদহের সব ছাত্রছাত্রীরা জেনে গেলেও কি ভাবে হরতাল হয় বা হরতাল কি ভাবে পালন করতে হয় তা কখনো তারা দেখেন নি। এ ভাবে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্তিতি সৃষ্টি হলো। ২১ ফেব্রয়ারির হরতাল সামনে রেখে স্কুলের টিফিনের পর ঝিনাইদহ শহরে কাঞ্চিলালের আম বাগানে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেনী পর্যন্ত পড়–য়া শিক্ষাথীদের নিয়ে গোপনে বৈঠক ডাকা হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন গোলজার হোসেন মিয়া ও পরিচালনা করেন আনোয়ার জাহিদ টিপু। হারতালের প্রেক্ষপটে ঢাকায় কিভাবে কমিটি হয়েছে, কি কি কর্মসুচি ইত্যাদীর কোন অভিজ্ঞতা না থাকায় ছাত্রনেতা এনামুল হক কোটনের অনুপস্থিতিতে তাকেই সভাপতি ও আনোয়ার জাহিদ টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে আন্দোলনের একটি রুপরেখা তৈরী করা হয়। সেদিনের ওই ভাষা আন্দোলনের কমিটিতে কংশি গ্রামের ময়েনউদ্দীন, দরিগোবিন্দপুর গ্রামের সবদার হোসেন, গোলজার হোসেন, হাবিবুর রহমান, মুস্তাফিজুর রহমান, জাহিদুল ইসলাম বুলু, শিকারপুরের আনোয়ারুল কাদির লড্ডু, আব্দুল লতিফ, আনোয়ারুল ইসলাম বাটুল, আমীর হোসেন মালিতা, বাসুদেব বিশ্বাস, পবহাটী গ্রামের জবেদ আলী সরদার, আরাপপুরের পবিত্র মিত্র, নুরুল ইসলাম খান হায়দার, বড়গ্রামের শফিউদ্দীন, পুর্ণেন্দু রায় চৌধুরী খোকন প্রমুখরা নেতা নির্বাচিত হন। তবে বৈঠকে অন্যান্য ছাত্রদের সঙ্গে মিজানুর রহমান মিজু ও তার ভাই শহীদুর রহমান, কাজী আকতারুল ইসলাম মধু, আব্দুর রউফ, আরাপপুরের জালাল উদ্দীন আহম্মেদ, সৈয়দ আলী, রবিউল ইসলাম রবি, নির্মল কুন্ডু, আব্দুর রাজ্জাক, সুরাটের আবুল হোসেন, শিকারপুরের আসাদুর রহমান মতি, কামারকুন্ডু গ্রামের শাহাদৎ হোসেন, ঝন্টু, ভগবাননগরের দবির উদ্দীন আহম্মেদ, কুন্টি জোয়ারদার, খলিলুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, পুটিয়া গ্রামের আসাদুর রহমান ওরফে আলী ও তারসহপাঠী কালী, এমদাদুল হক কুন্টি, নন্দ দুলাল সাহা, গোরাপদ সাহা, মকবুল হোসেন, পরেশ চন্দ্র বিশ্বাস, নিতাই পদ, তেতুলবাড়িয়ার আমজাদ হোসেন, চুন্নু, সমশপুর গ্রামের ছোট ঝন্টু, সুখদেব বিশ্বাস, দিলিপ কুমার, মুরারী মোহন ঘোষালের দুই ছেলে অবনী ও কেষ্ট, উদয়পুর গ্রামের আবু বকর, অমলেন্দু সরকার, নিতাই পদ স্বর্ণকার, আড়–য়াডাঙ্গা গ্রামের আহাজার বিশ্বাসের ছেলে ঠান্ডু, সুশীল ওরফে ঝড়ো, দুলাল, আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া, শিকারপুরের আশাফৎ জোয়ারদার, পুটিয়া গ্রামের আহসান উল্লাহ, ষাটবাড়িয়া গ্রামের অজয় দাস, ব্যাপারীপাড়ার মরহুম আব্বাস উদ্দীন (রহঃ) ও তার ভাই আব্দুস সাত্তার, ডাকাতিয়া গ্রামের গুরুপদ বিশ্বাস, চাকলাপাড়ার আজিজুর রহমান, বেজিমারা গ্রামের আইয়ুব হোসেন, দোগাছির আমজাদ হোসেন, একই গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস মধু, বড়কামারকুন্ডু গ্রামের ইছাহাক আলী, ঝিনাইদহ শহরের সুবোধ মিত্র, নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম দুলাল, বড়কামারকুন্ডু গ্রামের আখতারুজ্জামান, ভুটিয়ারগাতি গ্রামের নওশের আলী জোয়ারদার, একই গ্রামের মোছা হেমো, কেমো, হাসিয়া খাতুন, আয়েশা খাতুন, পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে মসিউজ্জামান মসি, আমিনুল ইসলাম, কালিঞ্জ দাস, শৈলকুপার বড়দা গ্রামের গিয়াস উদ্দীন, ভগবাননগরের সিরাজুল ইসলাম, জনৈক এক পশু চিকিৎসকের কন্যা, সুরাট গ্রামের আবুল হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাক, ব্যাপারীপাড়ার আব্দুল মতলেব, ছামসুর রহমান, নাছির উদ্দীন ওরফে মহি, আব্দুস শুকুর, রেজাউল করিম বেনু ডাক্তার, কল্যানপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ, আব্দুল মতলেব, কাস্টসাগরা গ্রামের লতাফৎ হোসেন, ছোটকামারকুন্ডু গ্রামের ডাঃ শাহাদৎ হোসেন, ইস্তেগাপুরের আকবর আলী, আর্যনারায়নপুর গ্রামের আবেদ আলী ও পানামী গ্রামের সুধির কুমার বৈরাগী প্রমুখ ছাত্ররা। ওই সভায় দোকানপাট, রাস্তা, বাজার ও যানবাহন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ছাত্ররা নিজেদের মধ্যে দায়িত্ব বন্টন করে নেন। আসে সেই সন্ধিক্ষন। ২১শে ফেব্রয়ারি কঠোরভাবে হরতাল পালিত হয় ঝিনাইদহে। “এক মিনিটের নাই ভরসা সাঙ্গ হবে রং তামাশা” এই জনপ্রিয় গানের শিল্পী ফিরোজ সাঁই তখন দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্র ছিলেন। তার পিতা ডাঃ আব্দুল ওয়াহেদ ছিলেন ঝিনাইদহ মহাকুমার একজন চিকিৎসক। তিনিও মিছিলে গিয়েছিলেন তার পিতার অনুপ্রেরণায়। এছাড়া ডাঃ কে আহম্মেদের শিশু সন্তান মঞ্জুর আহম্মেদ ও লতাফৎ মিয়ার শিশু পুত্র শহিদুল আলম বাচ্চুও বড়দের সঙ্গে ভাষা আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিয়ে তাক লাগিয়ে দেন। তৎকালীন কাঞ্চননগর প্রাইমারীর সর্বকনিষ্ঠ শিক্ষক শ্রী ধিরেন্দ্র নাথ সরকার ওই স্কুলের কচিকাচা শিক্ষাথীদের নিয়ে মিছিলে যোগদান করেন। ডাঃ কে আহম্মেদের স্ত্রী ও বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা খাতুন ভাষা আন্দোলনে ব্যাপক ভুমিকা রাখেন। তিনি সে সময়কার ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেটের মেয়েকে ২১ ফেব্রয়ারির মিছিলে আনতে সক্ষম হন। ১৯ ফেব্রয়ারি রাতে ঝিনাইদহ শহরে হরতালের সমর্থনে পোষ্টারিং করা হয়। পরদিন সকালে কে বা কারা তুলে ফেলে। ২০ তারিখে আব্দুল লতিফ, গোলজার হোসেন ও নুরুল ইসলাম খান হায়দার অনেকটা জেদ ধরে বাটুল, আমীর হোসেন মালিতা ও পবিত্র মিত্রকে আবারো পোস্টারিং করতে পাঠান। গমের আঠার সাথে তুতে মিশিয়ে আঠা তৈরী করেন শিবপদ বৈরাগী। আর এসব দেখভাল করেন সাবদার হোসেন সাবু ও সাবেক তথ্য মন্ত্রী মরহুম আনোয়ার জাহিদ টিপু। সে দিন মানুষকে ভাষা আন্দোলনে এ ভাবেই মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হয়। হরতাল শেষে ২১ শে ফেব্রয়ারি আওয়ামী মুসলীমলীগ নেতা নজমুল হক সিনেমা হল বন্ধ করে আনোয়ার জাহিদকে বক্তৃতা দিতে তুলে দেন। সেদিন টিনের চোঙ্গা হাতে ১৯/২০ মিনিট বক্তৃতা করেন আনোয়ার জাহিদ টিপু। সিনেমা দেখতে আসা দর্শকরা সেদিন আনোয়ার জাহিদের বক্তৃতা শুনেছিলেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো। ২১শে ফেব্রয়ারির হরতালে ঢাকায় পৈশাচিক ভাবে গুলি করে হত্যার খবর ২২ তারিখেও ঝিনাইদহে এসে পৌছায়নি। সন্ধার পরে আকাশবানী কলকাতার খবরে এই হত্যার খবর ঝিনাইদহে ছড়িয়ে পড়লে ২৩ ফেব্রয়ারি ভোরবেলা থেকেই ঝিনাইদহ শহরের বর্তমান বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকে। বাঁশ দিয়ে ছাত্ররা রাস্তায় ব্যরিকেড সৃষ্টি করে। পুলিশ টহল থাকলেও তারা কোন বাধা দেয়নি। শহরের মানুষ দলমত নির্বিশেষে কর্মসুচিতে অংশ গ্রহন করেন। ব্যারিকেড দেখে তৎকালীন ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল মান্নান দাড়িয়ে ছাত্রদের ডেকে বলেন “আমি খাস কামরায় গিয়ে লিখে রেখে আসবো কেও কোর্টে আসেনি”। আওয়ামী মসুলিমলীগের নেতারা সর্বক্ষন ছাত্রদের এই আন্দোলন মনিটরিং করতেন। এ ভাবেই ঝিনাইদহে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস রচিত হয় হয় বলে ভাষা সৈনিক এড আমীর হোসেন মালিতা তার লেখা গ্রন্থে উল্লেখ করেন।





খুলনা বিভাগ এর আরও খবর

কুষ্টিয়ায় ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকায় ধরা খেল শিক্ষক হেলাল ১১ লাখে দফারফা কুষ্টিয়ায় ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকায় ধরা খেল শিক্ষক হেলাল ১১ লাখে দফারফা
চাল সিন্ডিকেটের মূলহোতা আব্দুর রশিদ কুষ্টিয়া পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার চাল সিন্ডিকেটের মূলহোতা আব্দুর রশিদ কুষ্টিয়া পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার
কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৭তম জন্মদিনের উদ্বোধন কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৭তম জন্মদিনের উদ্বোধন
কুষ্টিয়ায় সেশন ফি বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ কুষ্টিয়ায় সেশন ফি বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ
বিজিবির অভিযানে অস্ত্র মাদকসহ চার জন আটক বিজিবির অভিযানে অস্ত্র মাদকসহ চার জন আটক
কুষ্টিয়াতে আাধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা কুষ্টিয়াতে আাধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা
কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীতে নিখোঁজের ৩৪ ঘণ্টা পর এএসআই সদরুলের মরদেহ উদ্ধার কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীতে নিখোঁজের ৩৪ ঘণ্টা পর এএসআই সদরুলের মরদেহ উদ্ধার
কুষ্টিয়া পদ্মা নদীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় ২ পুলিশ সদস্য নিখোঁজ কুষ্টিয়া পদ্মা নদীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় ২ পুলিশ সদস্য নিখোঁজ
মোরেলগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার অপকর্ম ঢাকতে বিএনপির নামে মিথ্যাচার মোরেলগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতার অপকর্ম ঢাকতে বিএনপির নামে মিথ্যাচার
বিএনপি’র টিকিট পেতে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার শেখ সাদী বিএনপি’র টিকিট পেতে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার শেখ সাদী

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)