শুক্রবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » অপরাধ » প্রকাশ্যে ধর্ষনের পর ঝিনাইদহের এক নারীকে হত্যা
প্রকাশ্যে ধর্ষনের পর ঝিনাইদহের এক নারীকে হত্যা
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটী গ্রামে বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে এক অর্ধ বয়সী নারীকে ধর্ষনের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহত নারীর নাম বিবিজান নেছা (৫৫)। তিনি পোড়াহাটী গ্রামের আনু মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় একাবাসি ঘাতক ইয়াদ আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে আটক করে ঝিনাইদহ র্যাব-৬ এর কাছে হস্তান্তর করেছে। পোড়াহাটী গ্রামের আফজাল হোসেন জানান, ১০ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার দুপুরে তার চাচি বিবিজান নেছা গ্রামের একটি পুকুর পাড়ে ছাগলের জন্য ঘাষ কাটতে যায়। এ সময় নড়াইল সদর উপজেলার বিল ডুমুরপাড়া গ্রামের চাঁদ মোল্লার ছেলে ইয়াদ আলী একা পেয়ে তাকে ধর্ষন করে এবং দুই হাত ভেঙ্গে দেয়। বিবিজান নেছার মুখমন্ডল থেতলে রক্তাক্ত করা হয়। দিনে দুপুরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন এই নৃশংস ঘটনা দেখতে পেয়ে ধর্ষক ইয়াদ আলীকে আটক করে র্যাবের হাতে সোপর্দ করে। এদিকে মুমুর্ষ অবস্থায় বিবিজান নেছাকে প্রথমে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মাগুরায় মারা যান। আফজাল হোসেন দাবী করেন, তার চাচির কাপড় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে যে আলামত পাওয়া গেছে তাতে তাকে ধর্ষনের পর নৃশংস ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ইয়াদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিচ্ছে। তাকে কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ ও মাদকাসক্ত বলে মনে হচ্ছে।
ঝিনাইদহে অবৈধ লাটা হাম্বারের আঘাতে মাদ্রাসা ছাত্র নিহত
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নের নাথকুন্ডু গ্রামে অবৈধ লাটাহাম্বারের আঘাতে তামিম (৮) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্র নিহত হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার দুপুরে নাথকুন্ডু গ্রামে যাওয়ার রাস্তায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। নিহত তামিম নাথকুন্ডু গ্রামের শাহাজাহান মিয়ার ছেলে। স্থানীয়রা জানায় নাথকুন্ডু গ্রামে রাস্তার পাশের একটি বাড়ির জরাজীর্ণ প্রাচীরের উপরে উঠে কুল গাছ থেকে কুল পাড়তে গিয়ে অসাবধানতা বশত প্রাচীরের কয়েকটি ইট খুলে পড়ে। এসময় ঐ স্থানে ঘুরাতে যাওয়া অবৈধ লাটাহাম্বারের ডালায় তামিমের মাথায় ধাক্কা লেগে গুরুত্বর আহত হয় সে। পরে তাকে স্থানীয় ডাকবাংলা বাজারের একটি হাসপাতালে নেয়ার সময় পথে মধ্যেই তামিমের মৃত্যু হয়। বিষয়টি ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের এস আই বিল্লাল হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
হরিণাকুন্ডুতে ক্রমেই বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে ক্রমেই বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে চলতি বছরের ৩ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত উপজেলায় আত্মহত্যা করেছেন ৩১জন। এর আগের বছরের তুলনায় এ সংখ্যা দ্বিগুণ। ২০২০ সালে উপজেলায় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১৬টি। গত বছরে আত্মহত্যা করা ৩১জনের মধ্যে ১৬জন নারী ও ১৫জন পুরুষ। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর পক্ষে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। আত্মহননকারী নারীদের বয়স ১৪ বছর থেকে শুরু করে ৪৬বছর এবং পুরুষদের ১৭ বছর থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত। এসব নারী-পুরুষরা অধিকাংশই নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। থানা পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়াদের অধিকাংশের জীবনে ছিলো না কোনো শিক্ষার আলো। এর সাথে রয়েছে পারিবারিক অস্বচ্ছলতাও। একদিকে সচেতনতার অভাব অন্যদিকে অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে এসব পরিবারে রয়েছে নানা অশান্তি। ফলে বিষাদগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে এসব পরিবারের সদস্যরা। আবার কম বয়সী নারীদের মধ্যে অতি আবেগের কারণেও ঘটছে আত্মহত্যার ঘটনা। গত ২৮ জানুয়ারি উপজেলার হামিরহাটি গ্রামে লিজা খাতুন নামে ১৯ বছর বয়সের এক নারী গলাই ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেণ। মাত্র সাত মাস আগে তার বিয়ে হয়েছিলো। বিয়ের পর সুখে শান্তিতেই চলছিলো তাদের সংসার। স্বামী-সংসারের প্রতিও ছিলো তার দরদ। নিজের বাবার কাছ থেকে অর্থ নিয়ে বেকার স্বামীর ব্যবসার ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনি। তবে ওই নারী সবসময় স্বামীকে ঘরমুখী দেখতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজন ও প্রতিবেশিরা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই মনোমালিন্য দেখা দিতো। ঘটনার দিন তার স্বামী জেলা শহরে যেতে চাইলে এ নিয়েও তাদের মধ্যে মান-আভিমান দেখা দেয়। পরে স্বামী বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই তিনি আত্মহত্যা করেণ। গত ২ ফেব্রয়ারি উপজেলার তাহেরহুদা গ্রামে লাভলি খাতুন নামে ৪৬ বছর বয়সের এক নারী বিষ পানে আত্মহত্যা করেণ। ওই নারীর স্বামী, সন্তান, নাতি নাতনি সবই রয়েছে। স্বামী পরিত্যক্ত মেয়েকে নিয়ে মানসিক দুশ্চিন্তায় ভুগে তিনি আত্মহত্যা করেণ। আর ৩ ফেব্রয়ারি তিন মাস বয়সের একমাত্র শিশু সন্তানকে রেখে গলাই ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেণ মনিকা খাতুন নামে ১৯ বছর বয়সের আরও এক নারী। স্বামীর প্রতি অতি আবেগে তুচ্ছ ঘটনায় এই আত্মহত্যার ঘটনা বলে দাবি পরিবারের। গত ১৭ জুলাই অর্থনৈতিক দৈন্যতার কারণে অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনতে না পেরে বাবা-মার প্রতি অভিমানে আত্মহত্যা করেণ বাহাদুরপুর গ্রামের ১৭ বছর বয়সের কিশোর মেহেদি হাসান। আত্মহত্যা প্রতিরোধে চাই সামাজিক সচেতনতা শিক্ষার অভাব, আবেগ প্রবণতা, বাল্য বিবাহ, অর্থনৈতিক দৈন্যতাসহ নানা কারণে এসব আত্মহত্যার ঘটনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেয়েদেরকে কর্মমুখী করে তোলা এবং পুরুষদের মধ্যে সামাজিক সচেনতার মাধ্যমে এই প্রবণতা রোধ করা সম্ভব বলেও মনে করেণ এই মানবাধিকার কর্মী। হরিণাকুন্ডু থানার ওসি আবদুর রহিম মোল্লা বলেন, প্রতিটি আত্মহত্যার পরেই ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনরা থানায় অপমূত্যু মামলা করেণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কারণ উদঘাটনের জন্য পোস্ট মর্টেম রিপোর্টের পর স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পারিবারিক অশান্তি, আবেগ প্রবণতা, অর্থনৈতিক সমস্যা, শিক্ষার অভাব, অল্প বয়সে বিয়ের পর শশুর-শাশুড়ির সাথে বনিবনা না হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে এসব আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। এজন্য গ্রামে গ্রামে সচেনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধে বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত সচেতনতামূলক নানা প্রোগাম করা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমেও চালানো হচ্ছে কার্যক্রম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝেও এর কুফল নিয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর বাল্য বিবাহ নিরোধেও চলছে কার্যক্রম। নারীদেরকেও কর্মমূখী করে তুলতে কাজ করছে প্রশাসন।
কালীগঞ্জে বেপরোয়া গতির রুপসা পরিবহনের চাপায় হনুমানের মৃত্যু
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকা পশু হাসপাতালসংলগ্ন স্থানে মহাসড়কের রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি হনুমান রুপসা পরিবহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যায়। ঘটনাটি ঘটেছে আজ ১১ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার আনুমানিক বেলা তিনটার দিকে। প্রত্যক্ষদর্শী ওই এলাকার বাসিন্দা বোনজা ডোরের স্বত্বাধিকারী তিতুমীর জানান, সকাল থেকেই দুইটি হনুমান আমাদের এই এলাকাতেই অবস্থান করছিল।আমি নিজে বিল্লালের চায়ের দোকান থেকে রুটি কিনেও তাদের খেতে দিয়েছিলাম। তিনটার দিকে হনুমান দুইটি রাস্তা পার হওয়ার সময় যশোরগামী রুপসা পরিবহনের চাকাই একটি হনুমানের বাম পা পিষ্ট হয়ে মারাত্মকভাবে জখম হয়। অপর হনুমানটি ভালোভাবেই রাস্তা পার হয়ছিল। আহত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকা হনুমানটির চিকিৎসার জন্য একটি ভ্যান ডেকে পাশের পশু হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করেও উপস্থিত অনেকেই ব্যর্থ হয়। এ সময় পশু হাসপাতালে খবর দিলে সেখান থেকে লোক এসে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করতে করতেই হনুমানটি মারা যায়। কালীগঞ্জ পশু হাসপাতালের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুজিত কুমার পাল জানান,ফোনের মাধ্যমে একটি হনুমান অ্যাক্সিডেন্টে মারাত্মক আহত হওয়ার খবরটি পেয়ে আমি দ্রুত সেখানে ফাস্টএইড বক্স নিয়ে উপস্থিত হয়। গিয়ে দেখি হনুমানটির বামপাশ পুরোপুরিভাবে চাকায় পিষ্ট হয়েছে। এমতবস্থায় চিকিৎসা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই হনুমানটির মৃত্যু ঘটে।খুলনা কুষ্টিয়া মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়ানো গড়াই ও রুপসা পরিবহনের বেপরোয়া গতি শুধুযে মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে এমনটি নয়,তাদের কাছ থেকে অবলা প্রাণীও রক্ষা পাচ্ছেনা।আজকের এই ঘটনা তারই একটি উৎকৃষ্ট প্রমাণ।মহাসড়কে বেপরোয়া গতির এই পরিবহনগুলো কি কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনা সম্ভব হবে? আর কত প্রাণ ঝরলে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিগণের ঘুম ভাঙবে? এমন প্রশ্ন এখন জনমনে।