সোমবার ● ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » অপরাধ » মিরসরাইয়ে স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুড়ির নির্যাতনে নবজাতকের মৃত্যুর পর গৃহবধূর মৃত্যু
মিরসরাইয়ে স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুড়ির নির্যাতনে নবজাতকের মৃত্যুর পর গৃহবধূর মৃত্যু
আকতার হোসেন, মিরসরাই প্রতিনিধি :: মিরসরাইয়ের করেরহাটে স্বামী, শ্বশুর শ্বাশুড়ির অবহেলা ও অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ভূমিষ্ঠ হয়ে নবজাতকের মৃত্যুর পর দীর্ঘ ১৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ১২ ফেব্রুয়ারী বেলা সোয়া দুইটার দিকে মারা গেছে গৃহবধূ রিমা আক্তার (২১)।
গৃহবধূ রিমা আক্তার উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ অলিনগর গ্রামের মাদু মিস্ত্রি বাড়ির মামুদুল হকের মেয়ে ও একই এলাকার জাফর মিস্ত্রি বাড়ির জাফর আহম্মদের পুত্র ওসমান গণি (২৩)’র স্ত্রী।
ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় মহল্লার সর্দার আবুল কাসেম জানান, বিয়ের পর থেকে তার উপর মানষিক প্রহার এবং বিভিন্নভাবে প্রেসার দিতে থাকে। তবে সর্বশেষ রিমার সন্তান প্রসবের সময়ে তার স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুড়ির অযত্ন অবহেলা আর মানষিক নির্যাতনের বিষয়টি খুবই দুঃখ জনক।
স্থানীয় দাত্রী সারজাহান জানান, ২৭ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে রিমা’র প্রসব বেদনা উঠলে তার শাশুড়ী আর স্বামী মিলে আমাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এসময় রিমা’র শারীরিক অবনতি দেখে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দিই। তবে তারা হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনাগ্রহ দেখিয়ে আমাকে চেষ্টা করতে বলে। সারারাত কষ্ট করার পর পরের দিন সকালে পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। তখন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে রিমা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যায়।
নিহত গৃহবধূ রিমা’র মামি হাসিনা আক্তার জানান, ২৮ তারিখ সকালে খবর পেয়ে তার শ্বশুর বাড়ির গেইটে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর আমাদেরকে ভেতরে ডুকতে দেয়। এসময় রিমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে আমাদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করে তার শাশুড়ী। এর উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত।
নিহত রিমার স্বামী ওসমান গণি তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন। এঘটনায় গৃহবধূ রিমার বড় ভাই আরিফ হোসেন (২৬) বাদী হয়ে রিমার স্বামী উসমান গণি, শ্বশুর জাফর আহম্মদ ও শ্বাশুড়ি নাছিমা আক্তারকে অভিযুক্ত করে জোরারগঞ্জ থানায় এফআইআর দায়ের করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন উক্ত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দুঃখ প্রকাশ এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন। জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নূর হোসেন মামুন বলেন, উক্ত ঘটনায় গৃহবধূ রিমার ভাই ৩ জনকে অভিযুক্ত করে এফআইআর (নং-০৯) দায়ের করেছে এবং এবিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন।
ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার দিবাগত রাতে গৃহবধূর লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২ মার্চ পারিবারিকভাবে কোর্ট হলফনামা সম্পন্ন করে রিমা আক্তার ও ওসমান গণির বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে গৃহবধূ রিমার উপর বিভিন্নভাবে মানষিক, শারীরিক নির্যাতন ও প্রহার শুরু হয়। চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাত নয়টার দিকে গৃহবধূ রিমা আক্তারের প্রসব বেদনা উঠলে স্বামী, শ্বশুর শ্বাশুড়ির অবহেলায় সারারাত প্রসব বেদনা সহ্য করে ২৮ জানুয়ারি সকালে ভূমিষ্ট হয়ে নবজাতকের (পুত্র সন্তান) মৃত্যু হয় এবং অগোচরে দাফন করা হয়। পরবর্তীতে অসুস্থ গৃহবধূ রিমা আক্তারকে প্রথমে বারইয়াহাট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়, সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ভর্তি অবস্থায় প্রসাব ও কিডনি সমস্যা দেখা দিলে কিডনি রোগ বিভাগের ১৭ নং ওয়ার্ডের ২৬ নং বেডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ১২ ফেব্রুয়ারী বেলা সোয়া দুইটার দিকে সে মারা যায়।
মিরসরাইয়ে মেছোবাঘ আটক
মিরসরাই প্রতিনিধি :: মিরসরাইয়ের করেরহাটে একটা মেছোবাঘ আটক করেছে স্থানীয় যুবকরা। সোমবার ১৪ ফেব্রুয়ারী সকালে উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ অলিনগর বটতলা বাজারের পার্শ্ববর্তী বাগানে শিশুরা খেলা করার সময় গাছের মগডালে এই মেছোবাঘ দেখতে পেয়ে খবর দিলে স্থানীয় যুবক সোহেল, মেজবাহ, নজরুল, রিয়াদ, সায়েম, শুভ, অন্তর, আব্দুল্লাহ’র সহযোগিতায় কোন প্রকার অঘটন ছাড়া মেছোবাঘটিকে আটক করে খাঁচায় বন্দী করে।
বিকেলে করেরহাট ফরেস্ট বিট কাম স্টেশন অফিসার ময়েন উদ্দিনকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানালে মেছোবাঘ টা উদ্ধার করে গভীর জঙ্গলে অবমুক্ত করে।