বৃহস্পতিবার ● ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » কৃষি » নবীগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলা
নবীগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলা
উত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: পশুপ্রাণী পালনে সফলতা বেকারত্ব দূরীকরনের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের উদ্যোগেএবং প্রাণিসম্পদ ও ডেউরী উন্নয়ন প্রকল্প প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় প্রাণি সম্পদ প্রদর্শনী ২০২২ মেলার উদ্বোধন ও সমাপনী অনুষ্টান অনুষ্টিত হয়েছে।
১৬ ফেব্রুয়ারী বুধবার দুপুরে নবীগঞ্জ উপজেলার জে,কে মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ মেলা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি উত্তম কুমার দাশের সভাপতিত্বে পজিপ কর্মকর্তা শাকিল আহমেদের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জ - বাহুবল আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ মিলাদ । এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম,উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, নবীগঞ্জ থানার ওসি ডালিম আহমেদ,নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি রাকিল হোসেন,উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মাকসুদুল হক,উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: আসাদ উল্লা।
এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: আজিজুল হক। এ সময় প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য শাহ নওয়াজ মিলাদ গাজী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে প্রাণী সম্পদ পালনের মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণের যুবকরা অর্থনীতিতে ভূমিকা রেখে চলছে। তিনি আরো বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে বেকাররা গাভী, ষাড় পালনের মাধ্যমে বেকারত্ব সমস্যা দূরীকরণ করা সম্ভব। গবাদিপশু পাখি পালনে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন পশু পাখি পালন করে সফলতা অর্জন করা সম্ভব।
উপস্থিত খামারিদের মধ্যে থেকে বক্তব্য রাখেন নুরুল আমীন। দিনব্যাপী প্রদর্শনীতে মোট ৫০টি স্টল অংশগ্রহণ করে। এ সময় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রকার পাখি, ষাড় গরু, গাভি, কুকুর, হাঁস-মুরগি,কবুতর,ঘোড়া প্রদর্শন করা হয়। পরে শ্রেষ্ট খামারীদের হাতে পূরস্কার তোলে দেয়া হয়।
পল্লীবিদ্যুৎ কর্মীদের লাঞ্ছিত করলেন আ‘লীগ নেতা
নবীগঞ্জ :: নবীগঞ্জে ৯ মাসের বকেয়া বিল আদায় করতে গিয়ে এক আওয়ামীলীর নেতার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা। বকেয়া বিলের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের মারতে ক্রিকেট খেলার ব্যাট নিয়েও তেড়ে আসেন আওয়ামীলীগ নেতা রুহুল আমীন। এসময় তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে পেটানোর হুমকিও দেন।
মঙ্গলবার ১৫ ফেব্রুয়ারী হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের দত্তগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত রুহুল আমীন নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওই গ্রামের রজব উল্লার ছেলে।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নবীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম আলীবর্দী খান সুজন বাদী হয়ে রুহুল আমীনকে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রুহুল আমীন ক্রিকেট খেলার ব্যাট নিয়েও পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের মারতে বার বার তেড়ে যান । ‘আমি সরকার দলের লোক’ দাবী করে ভিডিওতে শুনা যায় তার মুখে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ। পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের দা দিয়ে কুপানোর হুমকিও দেন। একবার তাকে বলতে শুনা যায়, ‘আমি ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। তরে বাইন্ধাঁ রাখমু (বেঁধে রাখবো), পুলিশ আইয়া নিবো (পুলিশ এসে উদ্ধার করবে)। পুনরায় সংযোগ চালু না করলে বেঁধে পেটানোর হুমকিও দেন।
পল্লী বিদ্যুতের সূত্র বলছে, ৩৫০/১২৪০ হিসাব নম্বরের মিটারটি রুহুল আমীনের পিতা রজব উল্লার নামে রয়েছে। বতর্মান রুহুল আমীন ওই মিটারটি ব্যবহার করছেন। তাদের হিসাবে ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের ফেব্রয়ারী মাস পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার ১ শত ৮৪ টাকা বকেয়া বিল রয়েছে। উক্ত বিল পরিশোধের জন্য বার বার তাগিদ দেয়া হলেও কর্ণপাত করেননি আওয়ামীলীগ নেতা রুহুল আমীন।
ঐদিন বিকালে বকেয়া বিল আদায়ের জন্য নবীগঞ্জ উপজেলার দত্তগ্রামস্থ রুহুলের বাড়িতে হাজির হন নবীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের সহকারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পলাশ মাহমুদ, সহকারী এনফোর্সমেন্ট কো-অডিনেটর মাকসুদ আহমেদসহ ৬-৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ সময় বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন বিদ্যুৎকর্মীরা। এতে চরমভাবে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামীলীগ নেতা রুহুল আমীন। পরে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মচারীদের মারতে বার বার তেড়ে যান।
বুধবার (১৬ ফেব্রয়ারি) হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নবীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম আলীবর্দী খান সুজন বাদী হয়ে রুহুল আমীনকে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন বলেন, আমার কিছু বকেয়া বিল ছিল, এজন্য পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা আমার বাড়িতে যান, আমি বাড়িতে না থাকায় মোবাইল ফোনে তাদের কাছে কিচ্ছুক্ষণ সময় চাই, কিন্তু কোনো ধরণের সময় না দিয়ে তারা আমার সংযোগটি কেটে ফেলেন, এরপর উনাদের সাথে আমার বাকবন্ডীতা হয়। আমি পরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে বকেয়া বিল পরিশোধও করেছি।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নবীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম আলীবর্দী খান সুজন বলেন, ৯ মাস বকেয়া বিল আদায় করার জন্য আমার অফিস থেকে কয়েকজন লোক রুহুল আমীনের বাড়িতে যায়। এসময় বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় তার বিদ্যুৎ সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয় । এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের লোকজনকে মারতে ক্রিকেট খেলার ব্যাট নিয়ে তেড়ে আসেন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, পরে তিনি বকেয়া বিল পরিশোধ করেছেন তবে তার বিদ্যুৎ সংযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে, রুহুল আমীনকে আসামী করে ইতিমধ্যে নবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. ডালিম আহমেদ বলেন, অভিযোগ দেয়ার বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের লোকজনের সাথে কথা হয়েছে, তারা অভিযোগ দিবে বলেছে, এখনো অভিযোগ পাইনি পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, বকেয়া বিল চাইতে গিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের যেভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বিষয়টি দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত রুহুল আমীন ইতিপূর্বেও নানা কারণে আলোচনায় ছিলেন। ২০১৬ সালে নবীগঞ্জ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর দুই ছাত্রীর শরীর স্পর্শসহ শ্লীলতাহানী করে আটক হন। পরে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়।