সোমবার ● ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » কৃষি » ঝিনাইদহে হঠাৎ ঝড় শীলা বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
ঝিনাইদহে হঠাৎ ঝড় শীলা বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে একের পর এক হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টি ও শীলা বৃষ্টিপাতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে করে ঝিনাইদহের কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাজ উঠেছে। দিনমজুর, সার, ডিজেল ও বিদ্যুতের দামসহ সব কিছুর মুল্য বৃদ্ধির কারণে চাষ ছেড়ে দিচ্ছেন অনেক কৃষকরা। তার উপর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। বছর জুড়েই চলছে দুর্যোগ। ঠিকমতো কোন ফসল ঘরে তুলতে পারছে না। এদিকে গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কৃষক। প্রতিবছর জেলায় এসময় কলা, ছোলা মশুড়ি, পান, পেয়াজ, রসুন, ধান ও শসাসহ নানা ফসলের আবাদ হয়। গত শুক্রবার অসময়ের ঝড়ে ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতির রেশ কাটতে না কাটতে গতকাল রোববার আবারো শিলাবৃষ্টির খড়গ নেমে আসে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে প্রান্তিক কৃষকেরা। তারা বলছেন, শীতের শেষ মৌসুমে এমন শিলা বৃষ্টি কখনো দেখেননি। রোববার সদর উপজেলার ডাকবাংলা, বংকিরা, বাজার গোপালপুর, পোতাহাটী, সাধুহাটীসহ জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। বড় বড় শিলা খন্ডের আঘাতে ক্ষেতের কলা,ধান,পান, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, গম, ভুট্টা, আম, লিচু গাছের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বংকিরা গ্রামের কৃষক এহছানুল বিশ^াস ও আমিনুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার অসময়ের ঝড়ে কলা গাছ সব ভেঙ্গে গেছে, তারপর আবার রোববার যে শিলাবৃষ্টি হয়েছে তা জীবনে কখনো দেখিনি। এবার চাষাবাদে যা ব্যয় হয়েছে সে খরচও এখন উঠবে না মনে হয়। তারা বলেন, ধার, দেনা করে অনেকে ফসল ফলিয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আজগর আলী বলেন, ক্ষণস্থায়ী শিলা বৃষ্টিতে ফসলের অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে আলু, পেয়াজ, কলা ও পান বেশি পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। আমের মুকুলের অনেক ক্ষতি হতে পারে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা আগামীক আজ সোমবার জানা যাবে।
হরিণাকু-ুতে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে তালাক
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকু-ু উপজেলার বিয়েবিচ্ছেদ বেড়েই চলেছে । গত ১৪ মাসে উপজেলায় ২১৯ টি বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। নানা কারণে ক্রমেই তালাকের সংখ্যায় ভারি হচ্ছে নিকাহ রেজিস্ট্রারের রেকর্ড খাতা। জানা গেছে , ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটেছে ২১৯ টি। এর মধ্যে স্ত্রীর ইচ্ছায় ৯৯ টি , স্বামীর ইচ্ছায় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৭৮ টি। আর উভয়ের আপসের মাধ্যমে বিয়েবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে ৪২ টি। নিকাহ রেজিস্ট্রার মো. সাইদুর রহমান জানান, এসব বিচ্ছেদে নারীরা স্বামী ও শ্বশুর - শাশুড়ির শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌতুক দাবি , স্বামীর বেপরোয়া জীবনযাপনসহ নানা কারণ উল্লেখ করেছেন। আর পুরুষরা তাদের নোটিশে বনিবনা না হওয়া , স্বামী ও শ্বশুর - শাশুড়ির প্রতি স্ত্রীদের অবহেলার কথা জানিয়েছেন। তুচ্ছ ঘটনাতেও বিয়েবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি শাহিদা বা খাতয়েছেন। জানতে চাইে (ছদ্মনাম) নামের এক নারী তার স্বামীকে বিয়েবিচ্ছেদের জন্য নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, তিন মাস আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর স্বামীর বেপরোয়া চলাফেরা নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া - বিবাদ হতো। এতে শ্বশুর - শাশুড়িও তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। শুধু শাহিদা নয় তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিদিনই ঘটছে এমন বিচ্ছেদের ঘটনা। রিপন নামের এক ব্যক্তি সম্প্রতি তার স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ছয় মাস আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকেই তার স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা হয় না। তিনি বহুবার তার স্ত্রীর পরিবারকে জানিয়েছেন তবুও কোনো ফল না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরকারি পরিসংখ্যান থেকে জেলাজুড়ে বিয়েবিচ্ছেদের আরও ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। জেলা নিকাহ রেজিস্ট্রারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে , ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিন বছরে জেলায় বিচ্ছেদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৭৭৮ টিতে। প্রতি মাসে গড়ে ২৭১.৬১ টি বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে। তবে এ সংখ্যা আরও বেশিও হতে পারে বলে জানিয়েছেন ওই কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। কারণ নিকাহ রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ছাড়াও আদালত, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমেও ঘটছে এই তালাকের ঘটনা। জেলা কাজি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ওবাইদুর রহমান জানান, করোনাকালে বিয়ে বন্ধনের চেয়ে বিচ্ছেদের ঘটনাই বেশি ঘটছে। উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মুন্সী ফিরোজা সুলতানা বলেন, তালাকের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে নারীদের কর্মমুখী শিক্ষার দিকে নিয়ে যেতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যাতে তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হয় ।
মহেশপুর সীমান্তে দালালসহ অবৈধ পারাপারকারী নারীকে আটক
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সীমান্তে দালালসহ অবৈধ পারাপারকারী এক নারীকে আটক করেছে ৫৮ বিজিবি। আজ ভোরে মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত পলিয়ানপুর এলাকার রায়পুর গ্রাম থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো- খুলনা জেলার কামারগাতি গ্রামের রেজাউল মোল্লার মেয়ে কাকলি খাতুন (৩০) এবং দালাল ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার রফিকুল ইসলামের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৩০)। ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহেশপুর উপজেলার পলিয়ানপুর বিওপির রায়গ্রাম মাঠ থেকে ভারতগামী একজন নারী ও সহায়তাকারী এক দালালকে আটক করা হয়। তিনি আরো জানান, আটককৃত বাংলাদেশী নাগরিকদেরকে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার এবং সহয়তার অপরাধে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানায় মামলা দায়ের ও সোপর্দ করা হয়েছে।