সোমবার ● ৭ মার্চ ২০২২
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » বিশ্বনাথে গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
বিশ্বনাথে গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে গলায় ফাঁস দিয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। তার নাম শিপন মিয়ার ওরফে শিপু মিয়া (৩০)। শিপু উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর ধর্মদা
গ্রামের কনাই মিয়ার ছেলে।
আজ সোমবার (৭ মার্চ) বাড়ির পাশ্ববর্তী নির্জন
এলাকার রেন্টি গাছ থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য তার মৃতদেহ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গেল রবিবার (৬ মার্চ) রাতের যে কোন সময় গলায় রশি পেঁচিয়ে গাছের সাথে ফাঁস নেন তিনি।
শিপুর পিতা কনাই মিয়া সাংবাদিকদের জানান, ছয় ছেলের মধ্যে শিপু সবার বড়। পেশায় রাজমিস্ত্রি সহকারি ছিল। ছিল তার মাদক সেবনের অভ্যাসও।
মাদক মামলায় একমাস কারাভোগ করে সম্প্রতি ছাড়া পায় সে। এরপর থেকে কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করছিন সবার সাথে। পরে গেল সন্ধ্যায় খাবার-দাবার শেষে বাড়ির থেকে বের হয়ে রাতে আর ঘরে ফিরেনি।
পরদিন সকাল ৭টায় লোকমুখে শুনতে পেয়ে গ্রামের উত্তরের ফুটবলের মাঠের পাশ্ববর্তী বশির মিয়ার পুকুর পাড়ে গাছের সাথে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। তবে, তার আত্মহননের প্রকৃত কারণ
জানাতে পারেননি তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, ভিকটিমের মৃতদেহ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রির্পোটের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ
ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
উত্তর বিশ্বনাথ আমজদ উল্লাহ ডিগ্রি কলেজে ৭ই মার্চ উপলক্ষ্যে স্মৃতিচারণ-সভা
বিশ্বনাথ :: স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন ও ৭ই মার্চ উপলক্ষ্যে সিলেটের বিশ্বনাথে ‘উত্তর বিশ্বনাথ আমজদ উল্লাহ ডিগ্রি কলেজ’র উদ্যোগে সোমবার ৭ মার্চ সকালে কলেজ মিলনায়তনে ‘স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজের আজীবন দাতা সদস্য আফাজ মিয়া। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন উপজেলার রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলমগীর।
উত্তর বিশ্বনাথ আমজদ উল্লাহ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নেছার আহমদের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক মাহমুদা বেগমের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ওয়াহিদ আলী, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমিটির সভাপতি হাসন আলী। সভায় শিক্ষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন আব্দুর রশীদ, সালমা আক্তার, আফিয়া বেগম ও শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সুবর্ণা বেগম, কাওছার আহমদ, লায়েক হাসান অভি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন কলেজের শিক্ষার্থী তানভীর আহমদ ও গীতা পাঠ করেন শিল্পী রাণী মালাকার। এসময় কলেজের সহকারী অধ্যাপক দিলুয়ার হোসেন, প্রভাষক খয়ের আহমদ, নাছরিন জাহান, মোস্তফা কামাল, সহকারী শিক্ষক আমিনুল হক, ফাহিমা বেগম শাম্মী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৃটেনের কিগলীর সাবেক প্যানেল মেয়র ফুলজার বিশ্বনাথে সংবর্ধিত
বিশ্বনাথ :: বৃটেনের কিগলী সিটির সাবেক প্যানেল মেয়র ফুলজার আহমদকে সিলেটের বিশ্বনাথে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। সোমবার (৭ মার্চ) উপজেলার ভাটশালা গ্রামে যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাজী জিতু মিয়া ও পংকি মিয়ার উদ্যোগে ওই সংর্বধা সভার আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী। সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন বৃটেনের কিগলী সিটির সাবেক প্যানেল মেয়র ফুলজার আহমদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রবাসীরা বিদেশে থাকলেও দেশের প্রতি প্রত্যেক প্রবাসীর রয়েছে নাড়ীর টান। জন্মভ‚মির টানে সব প্রবাসীরাই দেশের উন্নয়নে আন্তরিক। আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে তারা সব সময় দেশের কাজ করেন।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাজী জিতু মিয়ার সভাপতিত্বে ও বিশ্বনাথ প্রেস ক্লাবের সভাপতি তজম্মুল আলী রাজুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বৃটেনের কিগলী সিটির কাউন্সিলর আশরাফ মিয়া, বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মকদ্দছ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আজিজ সুমন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোহাম্মদ কবির মিয়া, শামীম আহমদ, রুহেল মিয়া, সাইফুর ইসলাম, ব্রাডফোর্ড’র সহ সভাপতি পংকি মিয়া, বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক আব্দুল জলিল জালাল, মহব্বত আলী, আলতাব হোসেন, সদস্য আব্দুল রুশন চেরাগ আলী, বিশ্বনাথ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রুপ, ব্যবসায়ী খসরু মিয়া।
বিশ্বনাথে মন্ত্রী অনুষ্ঠানে দাওয়াত পাননি এমপি
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে একা হয়ে গেলেন মোকাব্বির খান এমপি। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। দলের সবার অবস্থান উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়ার পক্ষে।
দাওয়াত পেয়ে গতকাল বিশ্বনাথ সফর করলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। স্থানীয় এমপি মোকাব্বির খানকে দূরে রেখেই তিনি ৩৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের গায়ে মন্ত্রীর নামের সঙ্গে সংযুক্ত করা হলো উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম।
মাইনাস হলেন মোকাব্বির খান এমপি। তিনি গত সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়ে ছিলেন।
গণফোরাম থেকে তিনি নির্বাচন করেন। তখন বিএনপিসহ বিরোধী নেতারা ছিলেন তার সঙ্গে। আওয়ামী লীগ ছিল জোটের প্রার্থীর পক্ষে। এ কারণে বিরোধী ঘরানার এমপি হিসেবে এলাকায় অবস্থান মোকাব্বির খান এমপি’র।
অভিযোগ আছে; এমপিকে পাশ কাটিয়ে নানা উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে এলাকায়। এ কারণে প্রকল্পে ভাগাড় দিচ্ছেন এমপিও। তিনি সহজেই ছাড় দিতে চান না। নিজের অবস্থানও জানান দিচ্ছেন শক্ত ভাবেই।
ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে টেকনিক্যাল স্কুল নির্মাণ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মুখোমুখি হয়ে ছিলেন মোকাব্বির খান এমপি। ছাড় দেননি ওই প্রকল্পে। এখনো ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। সম্প্রতি বিশ্বনাথে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি নুনু মিয়ার সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
আর এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ৩৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প। উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়ার দাবি হচ্ছে; এই প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পরিকল্পনামন্ত্রী তাকে দিয়েছেন। তদবির করে ওই প্রকল্প নিয়ে এসেছেন। এখনো প্রকল্প যাত্রা শুরু করেনি। টেন্ডারই হয়নি।
তার ওপর প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এমপি মোকাব্বির খান। প্রকল্প আলোর মুখ দেখার আগেই এসএম নুনু মিয়ার পক্ষের লোকজন প্রকল্প দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে পরিকল্পনামন্ত্রীকে পত্র দিয়েছিলেন মোকাব্বির খান এমপি।
এরপর থেকে বিশ্বনাথে ওই প্রকল্প নিয়ে এমপি মোকাব্বির খানের মুখোমুখি হয়েছেন নুনু মিয়া। এমপি’র আবেদনের ভিত্তিতে পরিকল্পনামন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসন থেকে বিষয়টির তদন্ত হচ্ছে। বিশ্বনাথে গিয়েও তদন্ত করে এসেছেন সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
এমপি’র অভিযোগের কারণে ক্ষেপেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া। এমপিকে পাল্টাও দিয়েছেন তিনি। পাশে পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাদের। লন্ডন সফর করে দেশে ফিরেছেন বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পংকি খান। তিনি আসায় শক্তি বেড়েছে এসএস নুনু মিয়ার।
সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীর বাড়িও বিশ্বনাথে। তিনি হচ্ছে বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগের অভিভাবক। সাম্প্রতিক ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়ার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন শফিকুর রহমান চৌধুরী।
ফলে মোকাব্বির খান এমপি’র মোকাবিলায় বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগ এখন ঐক্যবদ্ধ। কয়েকদিন আগে বিশ্বনাথে নুনু মিয়ার বিপক্ষে ঝাড়ু মিছিল হয়েছে। আওয়ামী লীগ ঘরানা থেকেই এই ঝাড়ু মিছিল হয়েছে জানিয়েছেন বিরোধীরা।
তবে- এই ঝাড়ু মিছিলে স্থানীয় এমপি’র হাত ছিল বলে অভিযোগ নুনু মিয়ার অংশের নেতাদের। এই অবস্থা বিশ্বনাথে আমন্ত্রণ জানানো হয় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে। তিনি পাশের এলাকা জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জের এমপি। তার উপজেলার যাতায়াতও বিশ্বনাথের ওপর দিয়ে।
বিশ্বনাথ ও জগন্নাথপুরের অনেক যৌথ উন্নয়ন প্রকল্প তার হাত দিয়েই হচ্ছে। এ কারণে পরিকল্পনামন্ত্রীও সাদরে গ্রহণ করলেন সেই দাওয়াত। গতকাল দুপুরের পর বিশ্বনাথে যান এমএ মান্নান। তাকে পেয়ে উজ্জীবিত হন দলের নেতারা।
বিশ্বনাথে পৌঁছে তিনি দুটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। একটি হচ্ছে প্রশাসনিক ও অন্যটি হচ্ছে দলীয়। বিশ্বনাথ উপজেলা কার্যালয়েই তিনি ৩৮টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
পরে তিনি এসব উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে মতবিনিময় করেন। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলো প্রশাসন। সভাপতিত্ব করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া। কিন্তু সেখানে উপস্থিত ছিলেন না গণফোরাম দলীয় স্থানীয় এমপি মোকাব্বির খান।
উন্নয়ন সম্বলিত ফলকেও ছিল না মোকব্বির খানের নামও। ওখানে নাম ছিল এসএম নুনু মিয়ার। পরে মন্ত্রী আওয়ামী লীগের সংবর্ধনা গ্রহণ করেন। গতকালের সংবর্ধনায় সিক্ত হয়েছেন মন্ত্রী নিজেও। পাশ হওয়া ৩৯ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে আশ্বস্ত করেন মন্ত্রী। জানান- ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত চলছে।
এতে নুনু মিয়া দোষী হলে আমরা তার বিচার করবো। তবে- উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাধা দেয়া চলবে না। উন্নয়ন হবে জনগণের জন্য। আজকের ওই অনুষ্ঠানে না আসার জন্য আমাকে অনেকেই বলেছেন। উন্নয়ন কাজে বাধাগ্রস্ত করতেই আমাকে বিশ্বনাথে না আসার অনুরোধ জানানো হয়েছিলো।’
তিনি বলেন- ‘উন্নয়ন শেখ হাসিনার। কেউ অভিযোগ দিলেও উন্নয়ন কাজ থেমে থাকবে না। কাজ হবে।’ মন্ত্রীর এ বক্তব্যে আশ্বস্ত হয়েছেন বিশ্বনাথের মানুষও। দীর্ঘদিন পর বিশ্বনাথে এসেছে বড় প্রকল্প। অভিযোগের পর প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিলো।
এদিকে- নিজের সংসদীয় আসনে পরিকল্পনামন্ত্রী আসায় দাওয়াত না পেলেও উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন মোকাব্বির খান এমপি। জানিয়েছেন- ‘আমি ফুলের মালাতে নেই, ঝাড়ু মিছিলে নেই। এ দেশের রাজনীতিতে সৌজন্যতাবোধ থাকলে অন্য ধরনের এক বাংলাদেশ পেতাম আমরা।
আমাকে দাওয়াত না নিয়ে বিশ্বনাথে দলীয়করণের উদাহরণ স্থাপন করা হলো। এর বেশি আমি কিছু বলতে চাই না- বলে মন্তব্য করেন এমপি মোকাব্বির খান।’