বৃহস্পতিবার ● ৭ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » খাগড়াছড়িতে তরমুজের চড়া দাম
খাগড়াছড়িতে তরমুজের চড়া দাম
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: রমজান ও পাহাড়ীদের ঐতিহ্যবাহী ‘বৈসাবি’কে ঘিরে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে খাগড়াছড়িতে তরমুজের দাম বেড়েছে দ্বিগুন। তাপমাত্রা যেমন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তেমনি বাড়ছে তরমুজেরও দাম। গত সপ্তাহে যেই তরমুজ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা সে তরমুজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে।
প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। তাপদাহ থেকে সামান্য পরিত্রাণ পেতে ইফতারে ধর্মপ্রাণ রোজাদাররা তরমুজই পছন্দ করেন। কিন্তু আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে এখন আর তরমুজের স্বাদ নিতে পারছেন না নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা।
প্রচুর সরবরাহ থাকলেও সংকট ও পরিবহন সমস্যার কথা বলে তরমুজের দাম বেশি নিচ্ছেন। অথচ কাঁচা মাল বা পণ্যবাহী মালামালা পরিবহনে সরকারী কোন বিধি নিষেধ না থাকলেও ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখাচ্ছেন।
সাধারণত রোজার সময় ফলের কদর বাড়ে। ফল ছাড়া ইফতার যেন কল্পনাই করা যায় না।
এদিকে গ্রীষ্মকাল শুরু হলেও পরিপক্ব না হওয়ায় বাজারে এখনও আসেনি চাহিদা অনুযায়ী মৌসুমী ফল। তাই বাজারে থাকা গ্রীষ্মকালীন ফল তরমুজের ওপরই এখন ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। এরমধ্যে একয়দিনের টানা তাপদাহে অতিষ্ট হয়ে মানুষ তরমুজ ফলের দিকে ঝুকলেও কেনার সাধ্য নেই।
আর এ সুযোগটিকে কাজে লাগাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তারা তরমুজের দাম হাঁকাচ্ছেন ইচ্ছেমতো।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে নানান অজুহাত দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়নি। এর ওপর চৈত্রের শুরুতেই প্রচণ্ড গরম পড়তে শুরু করায় বেশি দাম পাওয়ার আশায় পরিপক্ক হওয়ার আগেই মাঠ থেকে তরমুজ তুলে বিক্রি করেছেন কৃষকরা। তারা বলছেন, এখন আর মাঠে তরমুজ নেই। তাই বাজারে তরমুজের সরবরাহ কমেছে। আর তাই দামও বেড়েছে।
জেলা সদরের পাশাপাশি উপজেলার বাজারগুলোর অবস্থা আরোও বেশিই নাজেহাল। বিশেষ করে দীঘিনালা, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, গুইমারা, মানিকছড়ি ও রামগড় মূল সড়কের পাশে তরমুজ বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
খাগড়াছড়ি বাজারে তরমুজ কিনতে আসা মোঃ আহসান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কয়েক বছর আগেও একটি ছোট আকারের তরমুজের (গড় ওজন ৪ কেজি পর্যন্ত) দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মাঝারি আকারের তরমুজ (গড় ওজন ৫ কেজি থেকে ১০ কেজি) ৮০ থেকে ১৮০ টাকা এবং বড় আকৃতির তরমুজ (১০ কেজি থেকে তারও বেশি ওজনের) ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতো। তবে ইদানিং দাম বেড়ে যাওয়ায় একটি ছোট সাইজের তরমুজেরই দাম পড়ছে ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। আর একটা বড় আকারের তরমুজ সাড়ে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা! অনেক ক্ষেত্রে তারও বেশি। তাহলে এত দাম দিয়ে ক’জন মানুষ আর এই গরমে রসালো তরমুজ কিনতে পারবেন ? প্রশ্ন রাখেন তিনি।
এদিকে, বাজার ঘুরে দেখা গেছে- সব ধরনের তরমুজের দামই আকাশ চুম্বি। প্রতিটি মাঝারি আকারের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকায়। আকার একটু বড় হলেই তা ৫/৬শ’ টাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিভিন্ন অঝুহাতে খাগড়াছড়ি বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ জামাল হোসেন জানান, তাদের কোনো সিন্ডিকেট নেই। তাছাড়া এখানে তাদের করার কিছু নেই। অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, আড়ৎ থেকে বেশি দামে ক্রয় করায় আমরাও চড়া দামে তরমুজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।
অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের যথাযথ মনিটরিং না থাকায় সিন্ডিকেট করে খাগড়াছড়ি লাইনে তরমুজ ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মতো তরমুজের দাম বাড়িয়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসন জানায়, কোথাও গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোন পন্যের মূল্য নিয়ে থাকলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খাগড়াছড়ির মেয়ে সেনারি ফুটবলে উচ্ছতর প্রশিক্ষণে যাচ্ছে ইউরোপ
খাগড়াছড়ি :: খাগড়াছড়ির মেয়ে সেনারি চাকমা (১৫) অনুর্ধ ১৭ প্রমিলা ফুটবলে জেলা দলের মিডফিল্ডার ফুটবলে উচ্ছতর প্রশিক্ষণে ইউরোপ যাচ্ছে।
সারা দেশ থেকে এ বয়সী ৪০ ফুটবলার বাছাই করে বিকেএসপিতে ২ মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সেখান থেকে মাত্র ১৬ জনকে ইউরোপে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত করা হয়। তার মধ্যে একজন সেনারি চাকমা।
এ খবরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস সেনারির বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের খোঁজ খবর নেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয় সেনারি পরিবারকে। সরকারি ভাবে ঘর বানিয়ে দেওয়া এবং ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
সেনারি বিদেশ থেকে ফিরলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাসিক বৃত্তির ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক জুতা কাপড় কিনে দিতে সেনারিকে নিয়ে বাজারে যান।