শনিবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » যেভাবে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মাওলানা কাউছারকে হত্যা করে ঘাতক শামছুল
যেভাবে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মাওলানা কাউছারকে হত্যা করে ঘাতক শামছুল
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের গোয়াইনঘাটে হাত-পা বাধা অবস্থায় একটি লাশ পাওয়া গেছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় সীমান্তবর্তী একটি টিলায়।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে জাফলং সংগ্রামপুঞ্জি বিজিবি ক্যাম্পের প্রায় পাঁচশত গজ পূর্বে একটি টিলা সংলগ্ন জমি থেকে ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, মোবাইল ফোনে পরিচয়, চ্যাটিং অত:পর জাফলংয়ে এনে মুক্তিপণ চেয়ে না দেয়ায় তাকে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের শিকার ব্যক্তির নাম মাওলানা কাউছার আহমদ রাজু। তিনি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কালাম বহরপুর গ্রামের আব্দুল বাছিদের ছেলে।
ঘাতকের নাম শামছুল ইসলাম। সে চাপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার দাদনচক মিয়াপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। সে একজন চিহ্নিত প্রতারক ও দাগী অপরাধী।
ঘাতক শামছুল চলতি মাসের ৯ তারিখে জাফলং মামার বাজারস্থ হোটেল মেঘালয়ে সরকারি একটি বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অবস্থান করে। ঘাতক শামছুলের কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন ১টি খেলনা পিস্তল, ১টি কম্পিউটার হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়।
সে নিহত কাউছার আহমদ রাজুর সাথে মোবাইল ফোনে ফেইক আইডি থেকে মেয়ে পরিচয়ে চ্যাটিং করে। পুলিশ সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জাফলং মামার বাজারস্থ হোটেল মেঘালয়ে নিয়ে আসে। এখানে আসার পর হোটেল কক্ষে মেয়ে পরিচয়দাতা ব্যক্তি মেয়ে নয় জেনে প্রতিবাদ করলে ঘাতক শামছুল তাকে মারপিট করে।
পরে রাত ৯ থেকে ১০টার দিকে ফিল্মি স্ট্যাইলে হোটেল থেকে ভিকটিম কাউছার আহমদ রাজুকে একটি ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সায় করে সংগ্রাম বিজিবি ফাড়ির অদূরে একটি টিলায় নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যাকান্ডের পর সে আবারও মামার দোকান মেঘালয় হোটেলে অবস্থান করে।
এদিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় একটি লাশ পড়ে থাকার খবর ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান গোয়াইনঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ, থানা অফিসার ইনচার্জ কে.এম. নজরুল ইসলাম, ইন্সপেক্টর তদন্ত ওমর ফারুক মোড়লসহ পুলিশ সদস্যরা।
এ সময় নিহত ব্যক্তির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সুরুতহাল সহ লাশ উদ্ধার করা হয়। মোবাইল ফোন সূত্রে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। একাধিক সূত্র ও তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধারের ২ ঘন্টার ভিতরেই ঘটনায় জড়িত ঘাতক শামছুল ইসলামকে হোটেল মেঘালয় থেকে গ্রেফতারে সক্ষম হয় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।
এদিকে এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানায় শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় বিস্তারিত ব্রিফ করেন সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ধৃত শামছুল একজন পেশাদার অপরাধী এবং আইটি এক্সপার্ট। চলতি মাসের ৯ তারিখে সে জাফলংয়ের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান নিয়ে এলাকায় একটি বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অবস্থান নেয়।
ধৃত অপরাধী মোবাইল ফোনে নিহতের সাথে ফেইক আইডি দিয়ে পরিচয় এবং তাকে জাফলং এনে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছিল। টাকা এবং তার কথা মত না চলার কারণে ফিল্মি স্ট্যাইলে জিম্মি করে হোটেল রুম থেকে ভিকটিমকে ১টি ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সায় করে সীমান্ত এলাকায় একটি পাহাড়ে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতীয়মান হয়েছে।
ধৃত শামছুল একজন পেশাদার ও দাগী অপরাধী। তার ব্যাপারে আরও খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। তার কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন, ১টি খেলনা পিস্তল, ১টি কম্পিউটার হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আরও জড়িত আছে কি না তা তদন্তাধীন রয়েছে। এদিকে নিহতের লাশ উদ্ধার পরবর্তী ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেলে কলেজে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, অপরাধ দমনে পুলিশ সব সময় জিরো ট্রলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। এই হত্যাকান্ডে লাশ উদ্ধারের ২ ঘন্টার ভেতরেই ঘাতককে ঘাতককে গ্রেফতারে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
বিশ্বনাথে মসজিদের ছাদ থেকে পড়ে মোতাওয়াল্লী আহত
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে মসজিদের ছাঁদ পরিস্কার করতে গিয়ে ছাঁদ থেকে পড়ে মসজিদের মোতাওয়াল্লী মাস্টার রইছ উদ্দিন (৬০) নামের আহত হয়েছেন।
তিনি উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের আতাপুর গ্রামের মৃত মুজেফর আলী ছেলে এবং লামাকাজী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি, সৎপুর কামিল মাদরাসার সভাপতি। আজ শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে আতাপুর জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেট রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মসজিদের ছাঁদ থেকে মুসল্লি আহত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে লামাকাজি ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন, মাস্টার রইছ উদ্দিন সাহেব আজ শুক্রবার সকালে তাদের গ্রামের মসজিদের ছাঁদ পরিস্কার করতে গিয়ে পা ছিটকে গিয়ে ছাঁদ থেকে নিচে পড়ে যান।
এতে তিনি গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তাকে এক নজর দেখতে হাসপাতালে লোকজন ভীর করছেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন। আহত মুসল্লির সুস্থতার জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া।
সিলেটে ভারতীয় ১২ লাখ টাকার মোবাইল উদ্ধার : আটক-৩
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটে সাড়ে ১২ লাখ টাকা মূল্যের ১০০টি ভারতীয় মোবাইল ফোনসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে নয়টার দিকে সিলেট শহরতলীর পীরেরবাজার এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তিনজনকে সিলেট শহরতলীর পীরেরবাজারস্থ শাহ সুন্দর রেস্টুরেন্টের সামনে আটক করা হয়। তারা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিক্রয়ের জন্য অবৈধভাবে মোবাইলগুলো পাচার করে এনেছে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জির লেয়াকত মিয়ার ছেলে জাফর সাদেক জয় আলী (২২), একই উপজেলার বাউরভাগের ইসমাইল আলীর ছেলে আক্তার হোসেন (২২) ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পাঠানটিলার মৃত জমির আলীর ছেলে লিমন মিয়া (২৮)।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন শাহপরাণ (র.) থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক উত্তম রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে আটক হওয়া তিন ব্যক্তি একটি প্রাইভেট কারে করে ভারতীয় সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর উপজেলা থেকে অবৈধভাবে মোবাইল নিয়ে আসছিল। অভিযানে তাদের প্রাইভেট কার হতে একশতটি মোবাইল ফোন সেট জব্দ করে। এগুলোর বাজার মূল্য আনুমানিক সাড়ে বারো লক্ষ টাকা বলে জানায় পুলিশ। এছাড়াও তাদের ব্যবহৃত সিলভার রঙের এফ প্রিমিও প্রাইভেট কারটিও জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানায়, মোবাইল ফোন সেটগুলো অবৈধভাবে এনে সিলেট নগরীর করিমউল্লাহ মার্কেটের ব্যবসায়ী খাদিমপাড়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে শিপলুর কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে মোবাইল ফোন সেটগুলো বিদেশ থেকে আনার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা মামলা দায়ের হয়েছে। শাহপরাণ (র.) থানা পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।