বৃহস্পতিবার ● ২১ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ড্রাইভারের বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলা
ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ড্রাইভারের বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বহিস্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খন্দকার ফারুকুুজ্জামান ফরিদ ও তার গাড়ি চালক শাহীনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ধর্ষিতা নিজে বাদি হয়ে ঝিনাইদহ থানায় এই মামলা দায়ের করেন। এর আগে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ধর্ষিতা নারীর দেওয়া বক্তব্যর ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম্যে ছড়িয়ে পড়ে। ভুক্তভোগী ৩৪ বয়ছর ওই নারী জানান, বিচার চাইতে গিয়ে ফরিদ চেয়ারম্যানের লালসার শিকার হয়ে তিনি ধর্ষিত হন। তিনি তার দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করেছেন গত ১৫ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে হরিশংকরপুর গ্রমের নরহরিদ্রা গ্রামে চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফরিদের নিজ বাড়িতে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন কয়েক মাস আগে শহরতলীর কোরাপাড়া বটতলার আমির হোসেনের ছেলে মহসিনের সাথে ওই নারীর বিয়ে হয়। কয়েক মাস স্বামী স্ত্রীর হিসাবে বসবাস করলেও পরে বিয়ে অস্বীকার করে মহসিন। বিষয়টি সমাধানের জন্য এক পর্যায়ে ওই নারী তার পুর্ব পরিচিত চেয়ারম্যান ফরিদের সাথে আলাপ করেন। পরে সে তার বিষয়টা সমাধানের কথা বলে ফরিদ চেয়ারম্যান ১৫ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে সদর উপজেলার নরহরিদ্রা গ্রামে তার বাড়িতে ডেকে নেন। ঐ নারীর ভাষ্যমতে ঘটনার দিন বিকালে তিনি ফরিদের গ্রামের বাড়িতে পৌছালে তাকে দুইতলার একটি কক্ষে নিয়ে যান এবং নেশা জাতীয় কিছু সেবন করিয়ে ফরিদ ও তার গাড়ীচালক শাহীন দুজনে মিলে পালাক্রমে ধর্ষন করে। অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ করেছেন চেয়ারম্যান তাকে ধর্ষণ ছাড়াও শারিরীক ভাবে নির্যাতন করেন। ধর্ষনের পর চেয়ারম্যান ফরিদ এই ঘটনা কাউকে না বলার জন্য নিষেধ করেন। ধর্ষন শেষে ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে চেয়ারম্যানের গাড়ীচালক শাহীন তাকে মটর সাইকেল করে বিজয়পুর বাজারে রেখে যান। ১৬ এপ্রিল শারিরীকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই নারী ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহম্মদ সোহেল রানা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান অবিযোগ তদন্ত ও ধর্ষিতার ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে তারা প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নিবেন। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফরিদের মোবাইলে বার বার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে মামলা হওয়ার আগে চেয়ারম্যান ফরিদ ফেসবুকে ধর্ষিতার ভিডিও বক্তব্য শুনে গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেছিলেন বিষয়টি তার বিরুদ্ধে সম্পুর্ণ ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি আরো বলেন ওই নারী তার কাছে বিচারের জন্য এসেছিলো কিন্তু যখন সে আসে তখন তার কাছে অন্তত ৫০ জন ব্যাক্তি উপস্থিত ছিলো। সবাই দেখেছে ওই নারী তার কাছে আসার কিছুক্ষন পরে চলে গেছে। এর কোন সত্যতা নেই বলে তিনি দাবী করেন।
নারীর বিরুদ্ধে চার বিয়ের পর দু-বাচ্চাকে গোপনে বিক্রির অভিযোগ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা তালসার গ্রামের সাবানা খাতুন। মাত্র ৩০ বছর বয়সে তিনি বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন চার বার। আর মা হয়েছেন ৬ সন্তানের। এর মধ্যে দুইটি সন্তান বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ওই নারীর বিরুদ্ধে। শাবানা খাতুন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা তালসার গ্রামের খোকা ম-লের মেয়ে। প্রতিবেশী নাসরিন খাতুন জানান, ‘তাঁরা কয়েক বছর পর পর এ ধরনের ঘটনা ঘটান। গেল সপ্তাহে স্বামীর সঙ্গে বাপের বাড়িতে আসেন শাবানা। এর পর ডাক্তার দেখানোর কথা বলে আড়াই মাসের বাচ্চাটি বিক্রি করেছেন বলে শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে গ্রামের মানুষ চাপাচাপি করায় মঙ্গলবার ভোর রাতে তাঁরা পালিয়ে যায়। এর আগে সড়ক দুর্ঘটনার কথা বলে একটা বাচ্চা বিক্রি করেছেন শাবানা।’ এ বিষয়ে শাবানার দাদি সালেহা খাতুন বলেন, ‘আমরা হাতে করে তাঁর কোনো বিয়ে দেয়নি। সে নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করে প্রথমে এলাঙ্গা গ্রামে। ওই ঘরে ২টি বাচ্চা হয়। ওই বাচ্চা রেখে স্বামীকে তালাক দিয়ে চলে যান ঢাকায়। ওখানে গিয়ে একটা বিয়ে করেন। বাচ্চা হয় ওই ঘরেও একটা। যে বাচ্চাটি বর্তমানে আমার ছেলে লালন-পালন করছে। মাঝখানে আরও দুইটি বিয়ে করে শাবানা। বর্তমানে বিয়ে করেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর পাতরা গ্রামে। ওই ঘরে বাচ্চা হয়েছে তিনটি। যার মধ্যে একটা দুর্ঘটনায় হারিয়ে যায়। বাকি দুইটি নিয়ে কয়েক দিন আগে আমাদের বাড়িতে এসেছিল। পরে অসুস্থতার কথা বলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। এরপর একটা বাচ্চা নিয়ে বাড়ি ফেরে।’ শাবানার পিতা খোকা ম-ল জানান, ‘তাঁদের মনে যে, এসব ছিল আমি জানতাম না। গেল কয়েক দিন আগে তাঁরা আমার বাড়িতে আসে। বলে মেয়ের শরীর খারাপ। এরপর ডাক্তার দেখানোর নাম করে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে জানাজানি হয়ে গেলে মঙ্গলবার ভোর রাতে পালিয়েছে তাঁরা। তাদের সব ফোন নম্বর বন্ধ রয়েছে।’ এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুরের তালসার পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক মাসুদুর রহমান জানান, ‘ঘটনা শুনেছি। তবে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। আমি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যকে বলেছি, সামাজিক ভাবে কি করা যায়। আর যদি কোনো সমস্যা ওরা করে, সে ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’