বৃহস্পতিবার ● ২৪ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » আ’লীগ নেতাসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের
আ’লীগ নেতাসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের
বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি ::সিলেটের বিশ্বনাথে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে হামলার শিকার হওয়া গুরুতর আহত বিধবা রাহিমা বেগমের উপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী সিতাব আলীকে প্রধান অভিযুক্ত করে ৭ জনের নাম উল্লেখ ও আরোও ৪/৫জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে আহত বিধবা রাহিমা বেগম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন৷ মামলা নং ১২ (তাং ২০/০৩/১৬ইং)৷ এদিকে রাহিমা বেগম গুরুতর অসুস্থ থাকলে হাসপাতালে তার ঠাঁই হয়নি, সুস্থ হওয়ার পূবেই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রাহিমা বেগম৷
মামলার অন্যান্য অভিযুক্তকরা হলেন- উপজেলার বরইগাঁও (সদলপুর) গ্রামের মৃত মজমিল আলীর পুত্র দিলওয়ার হোসেন (২৭), মনোয়ার হোসেন (২৫), মৃত হুসমত উলস্নাহর পুত্র আফরম্নজ আলী (৫২), আফরম্নজ আলীর পুত্র আলী হোসেন (২৯), জমির আহমদ (২৫), দশঘর গ্রামের মৃত আরব আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (৪৫)৷
জানা গেছে, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত্ উপজেলার কালিগঞ্জ বাজরস্থ দবিরুল ইসলামের বাসায় তিন সন্তান নিয়ে ভাড়ায় বসবাস করে আসছেন জগন্নাথপুর উপজেলার জিগলী (লাউতলা) গ্রামের মৃত রমজান আলীর স্ত্রী রাহিমা বেগম (৩৮)৷ গত শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার সদলপুর গ্রামে সিতাব আলীর বাড়িতে পাওনা টাকা চাইতে গেলে হামলায় গুরুতর আহত হন রহিমা বেগম ও তার সঙ্গে থাকা রিকসা (টমটম) চালক আবুল কালাম খান (৩৭)৷ খবর পেয়ে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় থানা পুলিশ আফরোজ আলীর বসত ঘরের বারান্দা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাহিমা বেগম ও রিকশা চালক আবুল কালাম খানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করে৷
মামলার এজাহারে বাদি রাহিমা বেগম উল্লেখ করেন, ব্যবসার পুজির প্রয়োজনে মোনাফা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে রহিমা বেগমের কাছ থেকে ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিন লাখ টাকা নেন বড়ইগাঁও (সদলপুর) গ্রামের সিতাব আলী৷ পরবর্তীতে বার বার তাগিদ দেয়া সত্যেও সিতাব আলী টাকা না দিয়ে নানান তালবাহানা করতে থাকেন৷
বিষয়টি রহিমা বেগম এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবগত করেন৷ পরবর্তীতে সিতাব আলী টাকা ফেরত দেওয়ার তারিখ দিলে সেই মোতাবেক গত ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় রিক্সা চালক আবুল কালাম খানকে সাথে নিয়ে সিতাব আলী বাড়িতে যান রাহিমা বেগম৷ এসময় সিতাব আলীসহ সকল অভিযুক্তরা তাদের উপর হামলা চালায় ও শ্লীলতাহানী করে ৷ এসময় গুরুতর আহত হয়ে সজ্ঞাহীন হয়ে মাঠিতে লুঠিয়ে পড়েন রাহিমা বেগম৷ খবর পেয়ে এলাকাবাসী ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগীতায় আহতদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে থানা পুলিশ৷
রাহিমা বেগম অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, আমার শারিরিক অবস্থা খুবই খারাপ৷ দুই দিনের মাথায় আমাকে হাসপাতাল থেকে চিকিত্সা না দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে৷ বর্তমানে আমি অবুঝ তিন এতিম শিশুকে নিয়ে কালিগঞ্জ বাজারের ভাড়াটিয়া বাসায় অমানবিকভাবে দিন-রাত কাটাচ্ছি৷ আমার উপর হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও প্রভাবশালী হওয়ায় তাদেরকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ৷ বরং ঘটনার পরপর ২জনকে আটক করা হলেও পরবর্তিতে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷
প্রধান অভিযুক্ত সিতাব আলী বলেন, ওই মহিলা (রাহিমা) আমার পরিচিত নয়৷ আমি কোন দিনই তার (রাহিমা) কাছ থেকে টাকা আনিনি৷ আমাকে ফাঁসানোর জন্য আমার প্রতিপক্ষ ওই মহিলাকে দিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করছে৷
এব্যাপারে মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)আব্দুল হাই সাংবাদিকদের বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে৷