সোমবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২২
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » কালীগঞ্জে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৭ বস্তা মুল খাতা গায়েব
কালীগঞ্জে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৭ বস্তা মুল খাতা গায়েব
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের গোডাউন থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৭ বস্তা মুল খাতা ও লুজ সীট গায়েব হয়ে গেছে। এই খাতা চুরির সাথে জড়িত সিন্ডিকেট চিহ্নিত হলেও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড বা কলেজ কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন করিনি। বরং এই খাতা চুরি নিয়ে সে সময়কার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল দক্ষতার সঙ্গে ধামাচাপা দিতে সক্ষম হন বলে অভিযোগ উঠেছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন অনুষ্ঠিত ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শাখার বোর্ড পরীক্ষার পর অবশিষ্ট মুল খাতা ও লুজ সীট কলেজের গোডাউনে ছিল। এই খাতা ছাড়াও কয়েক বস্তা বই কলেজের দুই কর্মচারির সহায়তায় ২০১৯ সালের রমজান মাসে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শাখার সাচিবিক বিদ্যা বিভাগের সরকারী অধ্যাপক রকিবুল ইসলাম মিল্টন নিজের বাড়ি নিয়ে যান। কলেজের অফিস সহায়ক শরিফুল ইসলাম জানান, তিনি কেবল স্যারের আদেশ মেনে খাতাগুলো তার বাড়িতে পৌছে দেন। তারপরে আর কি হয়েছে তা আমি বলতে পারবো না। তিনি আরো বলেন, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বেচে যাওয়া খাতার সঙ্গে বোর্ডের বইও ছিল ওই বস্তায়। সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের আরেক অফিস সহায়ক আমির হোসেন জানান, খাতা নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি গেটে বাধা দেন। এ সময় শরিফুল ইসলাম তাকে জানায় খাতাগুলো সাচিবিক বিদ্যা বিভাগের সরকারী অধ্যাপক রকিবুল ইসলাম মিল্টনের নির্দেশে তার বাসায় তিনি নিয়ে যাচ্ছেন। আমির হোসেন খাতাগুলো গুনে ভ্যান ছেড়ে দেন। তিনি আরো বলেন, এ নিয়ে সে সময় কলেজে হৈ চৈ হলেও খাতা চুরির কাহিনী ধামাচাপা পড়ে যায়। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সাচিবিক বিদ্যা বিভাগের সরকারী অধ্যাপক রকিবুল ইসলাম মিল্টন বহু কেলেংকারীর হোতা। কলেজে ২০০০ সালের ১৯ অক্টোবর ও ২০০১ সালের ১৮ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভায় তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ প্রমানিত হলে মিল্টনের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কলেজ সরকারী হওয়ার পরও তিনি একই ধরণের অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই ছাত্র অভিযোগ করেন, মার্কসীটের ফটোকপি দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন মিল্টন স্যার। এসাইনমেন্ট জমা দিতেও টাকা নেন তিনি। এ ব্যাপারে সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, খাতা চুরির বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তদন্ত করে সে সময় কি রিপোর্ট দিয়েছিল তা তার মনে নেই। এ বিষয়ে তিনি কলেজের হেড ক্লার্ক রজব আলীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। হেডক্লার্ক রজব আলী খাতা গয়েব হওয়া বা তদন্ত কমিটির বিষয়ে বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। বিষয়টি নিয়ে রকিবুল ইসলাম মিল্টন অভিযোগ খন্ডন করে বলেন, তার বিরুদ্ধে কলেজের একটি চক্র মিথ্যা তথ্য নিয়ে ভাবমুর্তি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন কলেজ থেকে তিনি তার বিভাগের কিছু প্র্যাকটিক্যল খাতা ও বই নিয়ে গেছেন। সেগুলো কোন ভাবেই কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের খাতা ছিল না। কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান খাতা গায়েবের বিষয়ে বলেন, আমি সে সময় কলেজে অনুপস্থিত ছিলাম। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর কলেজে যোগদানের পর বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। ঘটনাটি সত্য হলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ঈদের উপহার হিসেবে পাচ্ছে ঝিনাইদহে ৩৬৬ টি পরিবার সেমিপাকা বাড়ি
ঝিনাইদহ :: প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ঝিনাইদহের ৩৬৬ টি পরিবার পাচ্ছে পাকা বাড়ি। আগামী ২৬ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক ভাবে সুবিধাভোগী এই সকল পরিবারের সদস্যদের সাথে ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হবে। রোববার বিকেলে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রেস বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম। জেলা প্রশাসক জানান, আশ্রয়নের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার’ এ শ্লোগানে সারাদেশের ন্যায় ঝিনাইদহেও ভূমিহীণ ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত হয়েছে স্বপ্নের নীড়। জেলায় ৩য় ধাপে ৬৭৩ টি পরিবারের মাঝে ঘর বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় আগামী ২৬ এপ্রিল জেলার ৬ উপজেলার ৩’শ ৬৬ পরিব্ররের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হবে। প্রায় ৫০০ বর্গফুটের এই বাড়িতে রয়েছে ২ টি শোবার ঘর, রান্না ঘর, টয়লেট, বারান্দা। ইটের দেয়াল, কংক্রিটের মেঝে ও রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে নির্মিত ঘরের নির্মাণ ব্যায় হয়েছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা, জেলা পরিষদের সচিব রেজাই রাফিন সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজীবুল ইসলাম খান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সৌদি আরবে ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে থাকা রেমিটেন্স যোদ্ধা হরিণাকুন্ডুর ইকবাল বাড়ি ফিরতে চান
ঝিনাইদহ :: মোহাম্মদ ইকবাল। ভাগ্য বদলাতে ২০১৯ সালে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। কাজ পান আল গোলাইমি কোম্পানীতে। দুই বছর বেশ ভালোই কাটছিল ইকবালের জীবন। হঠাৎ তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। স্ত্রী সন্তান ও মা চিন্তায় পড়ে যান। ৬ মাস পর খোঁজ মেলে ইকবালের। তখন তিনি অচেতন। ব্রেইন স্ট্রোকে এখনো তিনি হাসপাতালে। কাজ আর কোম্পানী হারিয়ে সৌদি আরবে অবৈধ হয়ে যান ইকবাল। প্রথমে রিয়াদের একটি হাসপাতাল ও পরে আল মাজমা জেলার কিং খালেক হাসপাতাল তার স্থায়ী ঠিকানা হয়। ইকবালের শরীর এখন নানা ধরণের মেশিনে আবৃত্ত। কথা বলতে পারেন না। যোগাযোগ করতে পারেন না বাড়িতে। তার দেখভালের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশীরাই তার খোঁজ জানান পরিবারের কাছে। ইকবাল হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত নায়েব আলী ওরফে ভাদু জোয়ারদারের ছেলে। এদিকে সেই ইকবাল আর এই ইকবালের শরীর চেনার মতো নেই। শরীর শুকিয়ে ক্ষীর্ণকায়। হাসপাতালের অসুস্থ জীবন তাকে যেন বিষিয়ে তুলেছে। দেশে ফিরে স্ত্রী, সন্তান ও মায়ের সেবা পেলে হয়তো মানসিক ভাবে সুস্থ হতে পারতেন ইকবাল। এদিকে হাসপাতালে একনাগাড়ে চিকিৎসা ব্যয় এসে দাড়িয়েছে ৭২ হাজার রিয়ালে। এই টাকা পরিশোধ করা তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। কি ভাবে তিনি দেশে ফিরবেন ? নাকি সেখানেই মৃত্যু পেয়ালায় শেষ চুমুক দিয়ে শায়িত হবেন এই নিয়ে তার পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছে। ইকবালকে দেশে আনতে কোন উপায় খুজে পাচ্ছেন না তার স্ত্রী শেফালী খাতুন। মা শিরিনা খাতুন সন্তানের জন্য কাঁদতে কাঁদতে পাগল প্রায়। ইকবালের অবুঝ দুই শিশু সন্তান ইভা ও ইয়াছিন সব সময় খুজে ফেরে পিতাকে। পিতার মুখটি দেখতে তারা উদগ্রীব। অসহায় এই পরিবারটি পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তিটির দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সৌদি আরবে বাংলাদেশ দুতাবাস ও সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন। ইকবালের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ফোন করুন-০১৭২৯-৮৮৮৮৩৬ ও ০১৬২৭৯৩১৯৪৫।
ঝিনাইদহে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকার যাকাত বিতরণ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জেলার দুস্থ ও অসহায়দের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে সরকারি যাকাত ফান্ডে যাকাত সংগ্রহ ও চেক বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মনিরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল হাই এমপি। বক্তব্য রাখেন ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের প্রশাসক রেজা-ই-রাফিন সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ সেলিম রেজা পিএএ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজিবুল ইসলাম খান, সাবেক মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু ও ভুটিয়াারগাতি আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু বকর ছিদ্দীক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ খান। অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৫৮ জন দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে তিন লাখ ১৮ হাজার, শৈলকুপা উপজেলায় ১৮ জনকে এক লাখ, হরিনাকুন্ড উপজেলা ১০ জনকে ৫৫ হাজার, কালীগঞ্জ উপজেলা ১৬ জনকে ৮০ হাজার, মহেশপুর উপজেলা ১৭ জনকে ৯০ হাজার ও কোটচাঁদপুর উপজেলা ৬ জনকে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। জেলায় মোট ১২৫ জনের মধ্যে মোট ৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। যাকাত সংগ্রহ অনুষ্ঠানে যাকাতদাতাগণ ১ লাখ ১০ হাজার টাকার যাকাত প্রদান করেন।